লাগামহীন দ্রব্যমূল্য দেখার কেউ নেই

0
675

গত দুই বছর যাবৎ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য লাগামহীন বাড়ছে। একটি জিনিসের দাম এক রাতে দ্বিগুন হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি কাঁচামরিচ নিয়ে শুরু হয়েছে অরজাকতা। ১৫০ টাকা কেজি কাচামরিচ এক রাতে লাফ দিয়ে ৫ শত টাকা হয়ে গেল। নিত্য ব্যবহার্য্য এই পণ্যটির পাইকার ও অড়তদাররা রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে। ভোক্তাদেরকে জিম্মি করে এভাকে একাধিক পণ্যের দাম এক রাতে এক লাফে দ্বিগুন থেকে তিনগুন বেড়ে যাচ্ছে। আঁদার দাম কেজি প্রতি ৪ শত টাকা। অথচ এই পণ্যটির দাম কিছুদিন আগে ৬০ থেকে ৮০ টাকা ছিল। চিনির দাম নিয়ে তেলেসমাতি চলছেই। এদিকে ষাট টাকার নিচে কোন তরকারি নেই। জিরা নিয়ে আরেক খেলা চলছে। দুই মাস আগে ৪১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো জিরা যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ হাজার টাকা যা ডাকাতির সমতুল্য। কেজি প্রতি ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা বাড়লেও তার যুক্তি থাকতে পারে। তবে আড়াই গুন বেড়ে যাওয়ার পেছনে কী এমন ভৌতিক কারণ তা নির্ণয় করবে কে? কারণ গোড়াতেই গলদ রয়েছে। যে কর্তৃপক্ষ দ্রব্যমূল্যের লাগাম ধরবে সেই কর্তৃপক্ষই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। কী কারণে এক লাফে এত দাম বাড়ানো হলো তা তদন্ত করে অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার মত কর্তৃপক্ষ বরাবরই অনুপস্থিত। অভিযোগ রয়েছে অসৎ ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেট করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে।

এসব অসৎ ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের সাথে সরকার দলীয় লোকরা জড়িত বলে ভোক্তাদের অভিযোগ রয়েছে।  যেহেতু ওরা সরকার দলের সেহেতু ওদের লাগাম ধরা যাচ্ছে না। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়াসার পানির বুথগুলো থেকে যে পানি কার্ড দিয়ে আনতে হচ্ছে হঠাৎ সেই পানির দামও এক লাফে দ্বিগুন হয়ে গেল।

ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে বিশালাকারের দুর্নীতির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর তাকে পুণরায় ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার রাস্তা পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোন এমডি এতগুলো টার্মে ওয়াসায় থাকতে পারেনি। কয়েক যুগ ধরেই তিনি ওয়াসার এতবড় গুরুত্বপূর্ন পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

তার হাতে এমন কি যাদুর কাঠি আছে যার কারণে তিনি দফায় দফায় ওয়াসার এমডি পদে আসন গ্রহণ করছেন? রাষ্ট্রে এই পদে দায়িত্ব পালন করার মত আর কোন যোগ্য ব্যক্তি নেই? এই প্রশ্ন জনগণের। আমরা দ্রব্য মূল্যের তেজি ঘোড়া নিয়ে আলোচনা করছিলাম।

এক রাতে লাফ দিয়ে একটি পণ্যের দাম দ্বিগুন বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ লোক বিশেষ করে নিন্ম আয়ের লোকদের অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা দেখার কেউ নেই। কঠিন এই অবস্থায় বেঁচে থাকার তাগিদে তারা অন্যায় পথ অবলম্বন করবে। দেশ এক অরাজক পরিস্থিতে তলিয়ে যাবে। এই অবস্থার দ্রুত অবসান হওয়া দরকার।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − 12 =