ষ্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লার লাকসাম, লালমাই ও বরুড়া উপজেলায় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির শত শত বৈধ গ্রাহক গ্যাস সংযোগ বন্ধের আগে গত ২০১৬ সালে অফিসিয়ালি গ্যাস সংযোগ পেয়ে তাদের বসতবাড়িতে গ্যাস ব্যবহার করছেন এবং বিল বইয়ের মাধ্যমে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে বিল বইয়ের মাধ্যমে অফলাইনে বিল পরিশোধ ব্যবস্থার পরিবর্তে অনলাইনে বিল পরিশোধের সিস্টেম চালু করায় বেকায়দায় পড়েছে অনেক গ্রাহক। অনলাইন কার্ডের জন্য লাকসাম অফিসে গ্রাহকরা যোগাযোগ করলে দেখা যায় শত শত গ্রাহকের নামে কোন ধরনের গ্যাস সংযোগ এন্ট্রি নেই। তাছাড়া অনেক গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ সংক্রান্ত তথ্য সফটওয়্যারে এন্ট্রি থাকলেও অনেকেরই নামের ভুল, নামের বানান ভুল, অথবা বাবার নাম ভুল, অথবা ঠিকানা ভুল এবং চুলার সংখ্যায় গড়মিল, কারো চুলা অনুমোদনের চেয়ে বেশি, কারো চুলা অনুমোদনের চেয়ে কম থাকায় সাধারণ বৈধ গ্রাহকরা নানারকম হয়রানি এবং জটিলতার মধ্যে পড়েছে বলে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানিয়েছে। ২২ জুন ২০২৩ তারিখে সুমন নামে এক গ্রাহক লিখিত অভিযোগ করার পরেও এখন পর্যন্ত তার বিষয়টি সুরাহা হয়নি। সুমনের কোড নাম্বারটি অন্য একজনের নামে অনলাইন হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সুমন।
এ ধরনের জটিলতার কারণে অনেক গ্রাহক নিয়মিত বিল পরিশোধ থেকে বিরত রয়েছে এবং বিল পরিশোধে কারো কারো অনীহা দেখা দিয়েছে । একারণে বাখরাবাদ গ্যাসের বড় ধরনের রাজস্ব আদায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীদের গাফিলতিতে ভুক্তভোগী সাধারণ গ্রাহক। বিষয়গুলো দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি না করা গেলে সাধারণ বৈধ গ্রাহকরা নানারকম হয়রানির শিকার সহ অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের দায়ে বৈধ গ্রাহক হওয়া সত্ত্বেও গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বর্তমানে অফলাইনে বিল দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাধারণ গ্রাহকরা বিল দিতে পারছেনা। ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে।
এপরিস্থিতিতে লাকসাম অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ সংযোগের বৈধতা নিশ্চিত করে সমস্যা সমাধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বকেয়া আদায় ত্বরান্বিত, অনাদায়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিল বই বিহীন অবৈধ গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অতিরিক্ত বার্নার ব্যবহারের কারণে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে গ্যাস চুরির সাথে জড়িত গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং অবৈধ গ্যাস লাইন চিহ্নিত করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ লাইন উচ্ছেদের কাজ অব্যাহত আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বাখরাবাদ গ্যাসের লাকসাম অফিস গত দুই মাসে শিল্প এবং বাণিজ্যিক মিটার ভিত্তিক দশ জন গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে গ্যাস চুরি হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এই গ্যাস চুরির সাথে জড়িত একটি সিন্ডিকেট রয়েছে বলে জানা গেছে। বাখরাবাদ গ্যাসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, কর্মচারীর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় একটি সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে বলে সুত্র জানিয়েছে। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। উক্ত প্রতিষ্ঠান একাধারে গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ এবং গ্রাহক হয়রানি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য লাকসাম, লালমাই ও বরুড়া অঞ্চলের গ্রাহক এবং সাধারণ মানুষ জোর দাবি জানিয়েছে।