শেখ হাসিনার অনড় অবস্থান ও বিএনপির ২৮ অক্টোবর

0
541

মোহাম্মদ মোশাররাফ হোছাইন খানঃআগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে।এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ববর্তী পদ্ধতি কী হবে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন জোট এবং বিরোধী দল বিএনপি জোটে চলছে টান টান উত্তেজনা।দুই জোটই যার যার অবস্হানে অটল।বিএনপি তার কঠোর অবস্হান ও সরকার পতনের পতনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশ আহ্বান করেছে। অপর দিকে সরকার ও সরকারী দল বিএনপি যাতে বড় ধরনের কোন সমাবেত করতে না পারে সে প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

এদিকে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্লান মাফিক সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।সরকার ও সরকারী দল আওয়ামীলীগ এখন পর্যন্ত দেশী ও বিদশী সব  বাঁধা ও চাপ উপেক্ষা করে’ শেখ হাসিনা’র অধিনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অনুষ্ঠানের পথেই হাটছেন। ইতোমধ্যেই দলটি সংবিধানের বাহিরে যত বাধা বিপত্তি আসুক না কেন, বৈদেশিক যত চাপই থাকুক না কেন তাতে  নতী স্বীকার করবেন না এবং সংবিধান থেকে এক চুলও না সরার বিষয়টি স্পষ্ট করে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন দলীয় সকল পর্যায়ের নেতারা। ক্ষমতাশীন দলের স্পষ্ট অবস্হান, শেখ হাসিনার অধিনেই “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন” অনুষ্ঠিত হবে।

অপরদিকে শেখ হাসিনার অধিনে দুইটি জাতীয় নির্বাচন ও অন্যান্য নির্বাচন সমূহের অভিজ্ঞতায় মাঠের পর্যায়ের সর্ব বৃহৎ বিরোধী দল বিএনপিও তাদের অবস্হান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তত্ত্বাবধায়ক বা সমজাতীয় কোন সরকার ছাড়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধিনে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবে না এবং এবার বিগত দুইটি জাতীয় নির্বাচনের মত এককভাবে কোন নির্বাচন হতেও দিবে না।ইতোমধ্যে তারা এ ঘোষণা  দিয়ে দিয়েছেন, যে কোন মূল্যে হোক তত্ত্বাবধায়ক বা সমজাতীয় সরকার তারা আদায় করে ছাড়বেই।

গত দুই সংসদ নির্বাচনের মতো আর যেনোতেনো কিংবা গভীর রাতের নির্বাচন কোন মতেই বাংলাদেশে আর হতে দিবে না। বিগত  চৌদ্দ বছর বিশেষ করে গত দশ বছর দলটি কঠিন রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলা করে এ পর্যন্ত এসেছে।মামলা, হামলাসহ রাজনৈতিক  বহুমুখী প্রতিকুলতা মোকাবিলা করে বিএনপি জাতীয় ভাবে কয়কটি বৃহত্তর মহাসমাবেশ সফল করতে সক্ষম হয়েছে এবং বিভাগীয় শহরগুলোতেও কয়েক দফা সমাবেশ সফল করেছে।তাদের এই সভা সমাবেশে দেশ-বিদেশে এ বার্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, দলটি কোন রূপ সহিংস কর্মকান্ডে জড়িত নয় কিংবা দলটির প্রতি সরকারী দলের আনিত নানাবিধ প্রচার, প্রোপাগান্ডা নিচক রাজনৈতিক রাজনীতি বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

বিএনপি প্রতিটি সমাবেশই সরকারী দল ও প্রশাসনিক বহুমুখী কঠোর পদক্ষেপ উপেক্ষা করে ব্যাপক লোক সমাগমের মাধ্যমে সফল করেছে।নেতা কর্মীদের দাবী ছিলো এই সমাবেশগুলো থেকে যেন কঠোর কোন আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে সরকারকে চাপে রাখে।কর্মীদের চাহিদা উপেক্ষা করে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা এ বিষয়ে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করে বর্তমান পর্যায়ে এসেছে। কেন্দ্রিয় নেতাদের এই ধীরে চলো নীতি নিয়ে দলের নেতা কর্মীদের ভেতরে বাহিরে ব্যাপক গুন্জন ও সমালোচনা থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতারা প্রতিটি পদক্ষেপ খুব সাবধানতা অবলম্বন নীতিতে দলীয় কর্মসূচি সফল করেছে। এই নীতি শুধু বিএনপির তৃনমুলেই নয় খোদ সরকারেও বিরক্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের উস্কানি মূলক বক্তব্য কখনোই আমলে নেয় নি বিএনপির নীতি নির্ধারণী পরিষদের নেতারা। বিশেষ করে দলটি মুখপাত্রদের বক্তব্যে ছিলো লক্ষনীয় পর্যায়ের।নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে মাঠ রাজনীতি টিকিয়ে রাখাই ছিল ছিল তাদের প্রধান লক্ষ্য। সরকারকে টিকিয়ে রাখার প্রধান সহযোগী পুলিশেকে ব্যাপকভাবে মোকাবেলা করার শক্তি বিএনপির যথেষ্ট থাকার পরও  বার বারই তারা পিছুটানে ছিলো।এ বিষয়ে বিএনপির নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ বলেছন, বিএনপি রাজনীতি করে দেশ ও মানুষের জন্য। জান মালের ক্ষতির রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাসী নয়। যে কোন মূল্যে আওয়ামীলীগ তার মেয়াদপূর্ন করবে।এ বিষয়টি তাদের পলিসিতে ছিলো। যে কারনে ব্যাপক ক্ষয়. ক্ষতি এড়িয়ে কর্মীদের হরতাল, অবরোধের মতো কোন দাবীতে নীতি নির্ধারকরা কোন সায় দেয় নি।উপযুক্ত সময়ে আন্দোলনের ডাক দেয়া হলে এতে সফলতা বেশী আসবে সরকারেরও পতনও নিশ্চিত হবে। এই পরিকল্পনারই অংশ ঢাকায় ২৮ অক্টোবরের মহা সমাবেশ।তারা আরো বলেছেন, বিএনপির হাই কমান্ড সব সময় শান্তি পূর্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিষয়ে সব সময় ঐক্যবদ্ধ।

সময়ের আগে শক্তি ক্ষয়ে অনাগ্রহীও তারা।তবে তারা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতেও নারাজ।দলটির একাধিক নীতি নির্ধাকরের সাথে কথা বলে এ বিষয়টি জানা গেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে তাদের আন্দোলনের গতি প্রকৃতি কী হবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে কেউই রাজী হয় নি। সকলেরই শেষ কথা হলো বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল, নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে যে সিদ্ধান্ত হবে সেভাবেই আন্দোলনের গতি প্রকৃতি নির্ধারিত হবে। সময় এবং পরিস্থিতি বলে দিবে কখন কী সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে তবে কারো একক কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের সুযোগ নেই।

দুই দলের অনড় অবস্হানে  দেশ চলতি মাসের শেষ দিকে এবং আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 এদিকে, বিএনপির চলতি মাসের ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে  ‘সর্বোচ্চ’ সর্বাধিক গুরুত্বের সাথে দেখছে সরকার ও ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারকদের অনেকে তাঁদের সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে ওই মহাসমাবেশকে বিএনপির ‘সর্বোচ্চ মরণ কামড়’এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে  দেখছেন।সরকারী দলের অনেক নীতি নির্ধরকই মনে করেন, এই মহা সমাবেশটি সরকারের জন্য একটি চাপের কারন হতে পারে। সমাবেশটি যদি ব্যাপক ভিত্তিক হয়ে যায় এতে আন্তর্জাতিকভাবে সরকার আরো বেশী চাপে পড়ে যেতে পারে সে আশংকাও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন ।

বিএনপির আসন্ন  এই মহাসমাবেশ যে করেই হোক হয়  বন্ধ করে দিতে হবে, নতুবা এমন কোন কৌশল প্রয়োগ করতে পারে যাতে বিএনপির এই জমায়েত ছোট পরিসরে হয়।

সম্প্রতি দৈনিক ‘প্রথম আলো’র প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে যৌথ পরিকল্পনা করছে। সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েক দিন ধরে যে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির যেসব নেতা লোক জমায়েতে ভূমিকা রাখেন এবং কর্মীদের ওপর যাঁদের প্রভার রয়েছে—এসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে কড়া পাহারাও বসানো হবে।‘

প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপিকে চাপে রাখতে ২৮ অক্টোবরেই বড় সমাবেশ থাকবে আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনা আছে। তবে এর বাইরেও প্রয়োজন হলে ‘সতর্ক পাহারা’ এর নামে মিছিল হতে পারে।

রিপোর্টটিতে বলা হয়েছ, ‘অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর অংগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঢাকায় একটি বড় সমাবেশ করবে। এর বাইরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক পাহারার ব্যবস্থাও রাখা হতে পারে।

খুব শিগগিরই এই কর্মসূচি চূড়ান্ত হতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি মোতাবেক কর্মসূচি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে’।

এ দিকে আওয়ামীলীগের অপর একটি সুত্র জানায়, সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, চলতি মাসের ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের জন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে বিএনপির যে সকল নেতা-কর্মী ঢাকায় আসবে, তাঁদেরকে ঢাকায়   সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান ঘেরাও কর্মসূচি দিতে রেখে দিতে পারে।বিএনপির ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত বড় কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিকে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করতে দেওয়া ঠিক হবে কি না, এই বিষয়টিও নজরে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের।

সূত্র মতে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ মহা সড়কে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের কেউ কেউ।

অপর দিকে বিএনপির নীতি নির্ধারকদের অনেকই বলেছেন, গত ১০ ডিসেম্বর’ ২২ এর জনসভার প্রেক্ষাপট আর ২৮ অক্টোবরের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ন ভিন্ন। সূত্রটি এও বলছে বলছে যে, ২০২২ এর ১০ ডিসেম্বরের জনসভা বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষার বা সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দেবার কোন জনসভা ছিল না, সেটি ছিল গণতান্ত্রিক দল বিএনপির একটি দলীয় রুটিন প্রোগ্রাম।আর চলতি মাসের ২৮ তারিখ যে মহা সমাবেশ ডাকা হয়েছে এটি হলো বিএনপির গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের কর্মসূচি।বিএনপি সকল বাধা উপেক্ষা করে যে কোন মূল্যে এ মহা সমাবেশ সফল করবে।

এ দিকে সংশ্লিষ্টএকটি  সূত্র জানিয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আগেই বলা হয়েছে বড় সমাবেশ মহা সড়কে না করে কোনো মাঠে করতে। তারা যদি এবার সড়ক দখল করে দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে চায়, তা সরকার মেনে নেবে না। প্রয়োজনে তুলে দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ দেওয়া হবে না

প্রথম আলো প্রকাশিত অপর একটি প্রতিবেদন সূত্র্ জানা যায়, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

২৮ অক্টোবর মহা সরকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্য কোনো মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। এই কৌশলে সমাবেশ এক-দুই দিন পিছিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হতে পারে বিএনপিকে। এ দুটির যেকোনো পরিস্থিতিতে নিশ্চিতভাবেই বিএনপির জমায়েত ছোট হয়ে যাবে। আর বিএনপি বিনা অনুমতিতে সমাবেশ করতে চাইলে গত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচির মতো কোন কর্মসূচিতে তাদের দাঁড়াতেই দেওয়া হবে না’।

এদিকে, সরকরী দলের সাধারন সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবাদুল কাদের বলেছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির পরিনতি হবে ১০ ডিসেম্বরের মতো। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর (২০২২) বেগম জিয়া দেশ চালাবে বলে দম্ভোক্তি করেছিল। ১০ ডিসেম্বরের মতো আগামী ২৮ অক্টোবরও তাদের একই পরিণতি হবে। শুধু চিন্তা করছি কোথায় গিয়ে খাদে পড়ে। ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগের গরুর হাটের খাদে পড়েছিল, এটা কোথায় যায়, সেটা দেখার অপেক্ষায়।’সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপি যাতে জমায়েত বড় না করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে পারলেও চলে। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে মানুষের ঢাকা প্রবেশ সীমিত করে দিতে হবে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর দায় কম পড়বে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে , ২৯ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন পেছানো হচ্ছে। ওই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় সমাবেশের কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেখানে ভাষণ দেওয়ার কথা। এ কারনে মেট্রোরেলের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর হতে পারে।এদিকে, ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।সেখানকার প্রোগ্রাম সূচি দুপুরের মধ্যে শেষ করে ঢাকায় চলে আসবেন ওবায়দুল কাদেরসহ গুরুত্বপূর্ণ  সকল নেতারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ সফল না হলে নির্বাচনের তফসিলের আগে  দলটির নেতা-কর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলবে, এতে তাদের পরবর্তী কোন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা  চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হয়ে পড়বে।যা সরকারী দলের নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে নির্বিঘ্ন হবে।

অপর একটি সূত্র বলেছে, ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের উদ্বোধনের দিন আওয়ামী লীগ ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করবে। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষের গনজমায়েত নিশ্চিত করে রাজপথ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভোটের কর্মসূচিতে যাবে আওয়ামী লীগ।

সরকারি একটি সূত্রের বরাতে দৈনিক প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২৯ অক্টোবর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন পেছানো হচ্ছে। ওই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় সমাবেশের কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেওয়ার কথা। এখন মেট্রোরেলের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর হতে পারে।

সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষন করলে স্পষ্ট যে, সরকার ও সরকারী দলের ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা গ্রহন করেছে, যাতে বিএনপি কোনভাবে ২৮ অক্টোবরের মহা সমাবেশ যেন সফল করতে না পারে। এদিকে ডিএমপি কমিশনারের এ বিষয়ে প্রদত্ত বক্তব্যও স্পষ্ট যে, ২৮ অক্টোবর  বিএনপি কোনভাবে কভারেজের আওতায় আসে এমন  বৃহত্তর কোন সমাবেশ সফল করতে না পারে। করলেও যাতে তা ছোট পরিসরে হয়।এমন পরিকল্পনাই সামনে নিয়ে এগুচ্ছে প্রশাসন।

অপর দিকে, বিএনপির একটি সূত্র বলছে, যে কোন মূল্যে হোক বিএনপি ২৮ তারিখ মহা সমাবেশ তারা সফল করবে এবং তাদের টার্গেট জনসংখ্যা হাজির করবে। তবে তাদের টার্গেট কত সূত্রটি তা নিশ্চিত করে নি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা তাঁদের শাসনামলে ২০০৬ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে রাজি নন। এ জন্য ঢাকাকে যেকোনো মূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলটির নেতারা মনে করেন, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ যে অনেকটা নিশ্চিন্তে দেশ শাসন করছে, এর পেছনে ঢাকার রাজপথ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারাও অন্যতম কারণ।

ঢাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ গত বুধবার দুজন কেন্দ্রীয় নেতাকে বাড়তি দায়িত্বও দিয়েছে। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণের দায়িত্ব পেয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অনেকে মনে করছেন, এ যাত্রায় সরকার ও সরকারী দল আওয়ামীলীগ খুব সহজে পার পেয়ে যাবে এমন আশা যেমন করা যায় না, অনুরূপভাবে খুব সহজে বিএনপিও তাদের কাংখিত লক্ষ্যে পৌছে যাবে এমনও মনে করা যায় না।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen − three =