ঢাকা-কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে ১ ডিসেম্বর থেকে

0
304

সর্বনিম্ন ভাড়া ৫১৫ টাকা, সর্বোচ্চ ২০৩৬

ডেস্ক রিপোর্ট : আগামী ১৩ নভেম্বর উদ্বোধন হতে যাওয়া চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে ডিসেম্বর মাস থেকে। দুটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব থাকলেও, ঢাকা থেকে এ রুটে শুরুতে দিনে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলবে। রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের দূরত্ব ৫৫১ কিলোমিটার। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এ পথে নন-এসি অর্থাৎ শোভন চেয়ারে ৫১৫ ও এসি সিটে ৯৮৪ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এসি সিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাটসহ এসি কেবিনে ১ হাজার ৩৬৩ ও এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২ হাজার ৩৬ টাকা।

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বাসে নন-এসি ভাড়া ন্যূনতম ৮০০ টাকা। এসিতে ভাড়া ১ হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত। বাসের তুলনায় কম ভাড়া পড়বে কক্সবাজারের ট্রেনে। পদ্মা সেতু হয়ে চলা ট্রেনে বাসের চেয়ে ভাড়া বেশি। সেখানে সেতুর কারণে পন্টেজ চার্জে ভাড়া বেড়েছে। কক্সবাজারের ক্ষেত্রে এ জটিলতা নেই। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনে ভাড়া ২৮৫ থেকে ১ হাজার ১৮০ টাকা।

রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, দিনে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করবে। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে ট্রেনটির। এ সময়সূচির সত্যতা নিশ্চিত করে মহাপরিচালক কামরুল আহসান বলেন, পরবর্তী সময়ে এ রুটে ট্রেন বাড়বে।

ট্রেনটির ছয়টি নাম প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে। এগুলো হলো– ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’, ‘হিমছড়ি এক্সপ্রেস’, ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’, ‘ইনানী এক্সপ্রেস’, ‘লাবণী এক্সপ্রেস’ ও ‘সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাম চূড়ান্ত করবেন।

ট্রেনে দুটি খাবার বগি, একটি পাওয়ার কার, তিনটি এসি কেবিন, পাঁচটি এসি চেয়ার, ছয়টি শোভন চেয়ার এবং একটি নন-এসি ফার্স্ট সিট বগি থাকবে। ঢাকা থেকে যাত্রার সময় আসন সংখ্যা হবে ৭৯৭। ফিরতি পথে আসন হবে ৭৩৭। রেলসূত্রের ভাষ্য, আপাতত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশিথার বগি দিয়ে চালানো হবে ঢাকা-কক্সবাজারের ট্রেন। তূর্ণা নিশিথায় বিকল্প রেক দেওয়া হবে।

আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন করবেন। পর্যটন নগরীতে ট্রেন নিতে প্রকল্পটি ২০১০ সালে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প সংশোধনে ব্যয় বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ খরচ ১৫ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। কক্সবাজার-ঘুমধুম ২৮ কিলোমিটার রেলপথ মিয়ানমারের আপত্তিতে এখনও নির্মাণ শুরু করা যায়নি।

গত আগস্টে রেকর্ড বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কক্সবাজারের রেলপথ মেরামত করা হয়েছে। এ লাইনটি নতুন হলেও চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী রেলপথ ৯২ বছরের পুরোনো। ৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেকশন ৭ হাজার ৭৩ কোটি টাকায় ডুয়েলগেজে রূপান্তরে প্রকল্প নিয়েছে রেলওয়ে। এ পথের সমবয়সী কালুরঘাট সেতু নির্মাণে লাগবে প্রায় ১১ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। কক্সবাজারে ট্রেন নিতে বিদ্যমান সেতুটি ৪৩ কোটি টাকায় সংস্কার চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × one =