দেশে স্বাস্থ্য সেবার মান খুবই করুণ। আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে হারহামেশা। এটা অনেক ব্যয়বহুল। তাদের টাকার পাহাড় আছে। তাই বিদেশে যাওয়া ও চিকিৎসা নেওয়া তাদের জন্য কোন ব্যাপার নয়। তবে দেশের দরিদ্র শ্রেণীর লোকজন বিদেশে যাওয়া তো দূরের কথা দেশের ভেতরে চিকিৎসার ন্যাজ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের অবহেলা ও দৌড়াত্ব এবং ঔষধ চুরি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকার থেকে যেসব ঔষধ সরকারি হাসপাতালে সারবরাহ করছে তা রোগিদেরকে দেওয়া হচ্ছে না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের কর্মচারি, ওয়ার্ডবয় সহ একটি সিন্ডিকেট এসব ঔষধ বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে ও হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। হাসপাতাল প্রশাসন জানলেও রহস্যজনক কারণে নিরব থাকছে। রোগিরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করেন ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে চিচ্ছেন। তাই সরকারি হাসপাতালে রোগিদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাদের কোন নজর নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। লাইসেন্সবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে চলছে চিকিৎসা সেবা।
গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, প্রায় ১০ হাজারের ওপর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে যেগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে কোন অনুমোদন নেয় নাই। শুধুমাত্র অনুমোদনের জন্য নামমাত্র আবেদন করেই চিকিৎসা সেবা শুরু করে দেয়। অনভিজ্ঞ নার্স. ওয়ার্ডবয় এমনকি ভুয়া ডাক্তার দিয়ে চালানো হচ্ছে হাসপাতাল ও ক্লিনিক। শুধুমাত্র টাকা কামানোর জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে রোগিদের সাথে প্রতারণা করছে হরদম।
অভিযোগ রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এসব অবৈধ হাসপাতালগুলোকে শেল্টার দিচ্ছে। বিনিময়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। ২০১৪ সালে ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি জানা সত্যেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসাপাতালটির সাথে চুক্তি করার বিষয়টি জনসন্মুখে আসে।
র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখায় অভিযান চালায় এবং করোনা পরীক্ষার ভুয়া সনদ উদ্ধার করে। এরপর গুলশানের শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১১ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিকাল সামগ্রী ও নিষিদ্ধ ঔষধ উদ্ধার করে। এরকম অসংখ্য হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিক সারা দেশে অপচিকিৎসা করে যাচ্ছে। অবিলম্বে এসব তামাশা বন্ধ করতে হবে।