বায়েজিদে যুবসমাজ ধ্বংসকারী মনিকা মোক্তার মাদকের আড্ডা আবার শুরু: নীরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর

0
69

মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার আরফিন নগর ড্রাম গেইট সংলগ্ন কেন্দ্রীয় কবরস্থান এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সিএমপি’র তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ী, আন্তঃজেলা মাদক কারবারি দলের অন্যতম হুতা মনিকা বেগম মনি, সৎ বোন মুক্তা বেগম, কিশোর গ্যাং লিডার ও আন্তঃজেলা মাদক কারবারি দলের সদস্য মুক্তার স্বামী হযরত আলী, তার ভাই মাদক কারবারি, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য সোহাগ প্রকাশ ডাকাত সোহাগ ও প্রশাসনের তথা কথিত সোর্স পারভীনের সহযোগিতায় এক যুগের বেশী সময় ধরে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা।

প্রত্যেকের নামে একাধিক করে মামলা ও বারবার প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হলেও থামানো যাচ্ছে না তাঁদের মাদকের কারবার। সম্প্রতি অভিনব কায়দায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে করছেন মাদক সাপ্লাই। মনিকা ও মুক্তা হযরত আলীর বেপরোয়া মাদক ব্যবসা ও অত্যাচার নির্যাতন থেকে থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন সংবাদ সম্মেলন করলেও কোন রকম তাদের দমন করা যাচ্ছে না।

তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় ইতিমধ্যে নির্যাতন, মারধর ও নিগৃহীতের হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তারা।

প্রায় এক যুগ আগ থেকেই মদ, গাঁজা, ইয়াবা ফেনসিডিল বিক্রির মাধ্যমে মাদক ব্যবসা শুরু করেন মনিকা । এখন সে মনিকা,‌ সৎ বোন মুক্তা, স্বামী হযরত আলী ইয়াবা ও হিরোইন পাচারের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী। মূলত চট্টগ্রাম নগরের বায়েজীদ বোস্তামী থানার মাদক বাণিজ্যের নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে মনিকা, মুক্তা, হযরত আলী ও সোহাগ। তাদের প্রশাসনিক ভাবে সহযোগিতা করে সোর্স পারভীন। বর্তমানে মানিকা ও মুক্তা নামে বেনামে প্রচুর সম্পদ গড়ে তুলেছেন এই ইয়াবা সম্রাজ্ঞী। পাশাপাশি মুক্তা ও মনিকার আছে তিন কোটি টাকার গরু,যা মাদকের টাকায় কেনা। এলাকাবাসী বলছেন একাধিক পত্রপত্র পত্রিকার সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে তারা একেবারে মাদক বেচা কিনা বন্ধ করে দেয়। কিছুদিন মাদক বেচাকেনা বন্ধ থাকলো আবারো চলছে। অত্র এলাকার বিশ্ব কবরস্থান দখল করে মাদকের হাট জমজমাট, বর্তমানে কবরস্থানের একাধিক জায়গা দখল করে মুক্তা করেছেন কয়েকটি টিনশেড ঘর ওই টিন সেট এবং ময়লার আশেপাশেই রাখা হয় তাদের মাদক ওদেশীয় অস্ত্র।

এক সময় মাদক ব্যবসায়ীর স্বামী বাহার উদ্দিন রকির হাত ধরেই মাদক ব্যবসায় আসেন মনিকা। এক যুগ হয়ে উঠেন মাদক সম্রাজ্ঞী। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ২০ টির অধিক মামলা। প্রশাসনের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে তার সখ্যতা থাকায় বেশ কয়েকবার জেলে গেলেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে মনিকা। চট্টগ্রাম নগরির বায়েজীদ থানার আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান ঘিরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বসে মনিকার মাদকের হাট। যেখানে মাদকসেবী সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত শ্রমিক এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চলে আনাগোনা। মনিকার স্বীকারোক্তিমতো বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় কবরস্থানের কবর খুঁড়েও উদ্ধার করা হয় মদ, গাজা, ইয়াবা।

বিভিন্ন মামলার নথি থেকে জানাযায় মনিকার পুরো পরিবার সবাই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তার বোন মুক্তা, মুক্তার স্বামী হযরত আলী, দেবর সোহাগ, আঁখি, বোন সেলিনা, ববিতা ও ভাই মানিক কেন্দ্রীয় কবরস্থানের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বলে মনিকা ইতিমধ্যে পুলিশের কাছে স্বীকার করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মনিকার বিরুদ্ধে প্রায় ২০/২২টির উপরে মামলা রয়েছে।তার বোন মুক্তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৭/৮ টি মামলা, মুক্তার স্বামী হযরত আলীর বিরুদ্ধে ৭/৮ টি মামলা রয়েছে। মুক্তা, হযরত আলী, সোহাগ, সেলিনা, ববিতা ও ভাই মানিক এবং স্বামী বাহার উদ্দিন রকিও গ্রেফতার হয়েছিল। এই মাদক সম্রাট মনিকার অত্যাচারে আরেফীন নগর এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, আরেফীন নগর পুরো এলাকা মনিকা, মুক্তা, হয়রত আলী, সোহাগ ও মানিকা পরিবারের সকল সদস্যদের অত্যাচারে দিশেহারা। সন্ত্রাসী, মাদকসেবী, পতিতা ও প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে মানুষের উপর অত্যাচার করছে। অত্র এলাকায় রয়েছে কয়েকজন রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ী।

তারা আরো অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সড়ক দখল করে পুরো সড়কেই বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ফেলে চলাচলের অনুপোযুক্ত করে রাখে। মসজিদের আশপাশেই পতিতালয় গড়ে তুলেছে তারা। এমনকি কবরস্থানকে মাদক রাখার নিরাপদ স্থান বানিয়েছে। এই মাদক সম্রাটের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে নির্যাতন করা হয়।

এলাকাবাসীরা আরো জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বেশ কয়েকজন কয়েক বার এলাকায় আসলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেননি।

সূত্র বলছে পুলিশকে মোটা অংকের টাকা প্রদানের মাধ্যমে মনিকা, মুক্তা হযরত আলীরা এই ব্যবসা প্রকাশ্য করছেন। তাদের প্রশাসনিক ভাবে সহযোগিতা করছেন তথা কথিত সোর্স পারভীন। দৈনিক ২ হাজার টাকার বিনিময়ে পারভীন মনিকা, মুক্তা হযরত আলীর মাদক ব্যবসায় প্রশাসন দিক নিয়ন্ত্রণ করেন পারভীন।

সূত্র আরো বলেন, মনিকা, মুক্তা ও তাদের পরিবার সিটি কর্পোরেশনে জমি দখল করে গড় তুলেছেন কলোনী ও গরুর খামার। তাদের খামারে আছে ৩ কোটি টাকা মূল্যের গরু।

সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক জুবাইর তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে মাদক বিক্রিতে জড়িতদের কাছ থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ক্ষতি করবে বলে হুমকি পাওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) যাহার নং ১৬৫৮ দায়ের করেছেন ।

সূত্র বলছে, নানা সময়ে মনিকা, মুক্তা, হযরত আলীর মাদক সম্রাজ্যের উপর প্রতিবেন প্রকাশ করায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক তাদের দ্বারা হামলার স্বীকার হন ও লাঞ্চিত হন। তাদের হামলা থেকে বাদ যায়নি প্রশাসনের লোকজন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের হামলার স্বীকার হন।

হুমকির স্বীকার সাংবাদিক মোঃ জুবায়ের বলেন, মাদক ব্যবসায়ী মুক্তা ও তার স্বামী হযরত আলী দু’জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ও অবৈধ মাদক কারবারিদের গডফাদার। তারা পেশিশক্তি খাটিয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। মাদক ব্যবসা করে আসছেন সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে এমন তথ্যবহুল সংবাদের জেরে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ক্ষতি করবে বলে হুমকি প্রদান করেন মুক্তা ও তার স্বামী হযরত আলী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × three =