কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ‘মরিচা খাল’টি দখল প্রতিযোগীতায় ধ্বংসের পথে

0
85

মোঃ বিল্লাল হোসেন: কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ‘মরিচা খাল’টি দখলের প্রতিযোগীতায় ধ্বংসের পথে।

গোমতী-মেঘনা নদীর মোহনাখ্যাত শ্রোতশীল ঐতিহ্যবাহী ‘মরিচা খাল’ ভুমি খেকুদের শ্বাসরোধে দখল ও উন্নয়ন শ্রোতে মালিকানা দাবী করে খালের অংশ ভড়াটে বাড়ি-ঘর, মার্কেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়কসহ নানা স্থাপনা গড়ে তোলায় খালটি এখন প্রাণহীন প্রায়।

গোমতী-মেঘনা নদীর সংযোগের অন্যতম মরিচা খালটি ছিল এ অঞ্চলের নৌপথের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। সু-সাধু মাছের জন্য বিখ্যাত এ খালটি সর্বশেষ ১৯৭৯ সনে ‘খাল খনন প্রকল্পের’ আওতায় খনন করা হয়েছিল। 

খাল ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের সংবাদে ঘটনাস্থল যেয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলার সময় শ্রোতশীল এ ঐতিহ্যবাহী মরিচা খালের এ করুন চিত্র উঠে আসে। স্থানীয়রা জানান, খালের জায়গায় খাল নেই, সরকারী জায়গায় সড়ক নেই, খাল ভরাটে সড়ক হচ্ছে। কোথাও কোথাও খাল এবং সড়ক হয়েছে ব্যক্তিমালিকাধীন জমার জায়গায়। খালের জায়গা দখলে আছে অন্যরা। যুগে যুগে খালের যৌবন আর নাব্যতার খরশ্রোত এবং প্রসারতা কমতে কমতে এখন মৃত: প্রায়। মরিচা খালের মূল গতিপথ আর এখন নেই, মানুষ তার নিজ প্রয়োজনে খালের শ্রেণী পরিবর্তন করে দখল করায় খালের প্রসস্ত কমে গেছে। মূল গতীপথে সড়ক হয়েছে, খালের জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে কাগজে কলমে ভরাট জমি দেখিয়ে লীজ নিয়ে নিজ নামে খতিয়ান করে নিয়েছেন।  

দেবীদ্বার পৌর এলাকার মরিচাকান্দা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন(৮৫) বললেন, ১৯৭৯ সালে মরিচা খাল খনননে নিজ হাতে মাটি কাটায় অংশ নিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ এ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। 

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক চীফ ইঞ্জিনিয়ার মরিচা গ্রামের বাসিন্দা মো. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমি দির্ঘদিন এলাকার বাহিরে থাকায় খরশ্রোত খাল আমার জমির অংশ ভেঙ্গে খালের ভেতরে চলে আসে, খাল এবং পাকাসড়ক আমার জমির উপর দিয়েই নির্মাণ হয়েছে। আমি ম্যাপ দেখে খালের অংশ থেকে আমার হিস্যা বুঝে সীমানা পিলার বসিয়ে চিহ্নিত দিয়ে রেখেছি কিন্ত ভরাট করিনি।

সড়ক এবং খালের সীমানায় রিটানিং দেয়াল নির্মাণ করেছে আমার জায়গায়। খালের ব্রীজ সংলগ্নে আমি কোন মার্কেট নির্মাণ করিনি। তবে এলাকার অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ফ্রী চিকিৎসা সেবাদানে সমাজ হিতৈসী মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া নিজ খরচে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করছেন। যেটা লাভজনক কোন প্রতিষ্ঠান নয়। ব্রীজের অপর পাশের মানিক ভূঁইয়া যে মার্কেট নির্মাণ করেছেন তাও নিজস্ব জায়গায়। বাহ্যিক দৃষ্টিতে খালের উপর মনে হলেও তা ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি।

এ ব্যপারে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো. রায়হানুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + nineteen =