রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকা ণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃতদের বেশিরভাগেরই
এক্সটার্নাল বার্নকম ছিল। এ অবস্থায় কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় আহত ও মৃতদের ইন্টার্নাল বার্নহয়েছে বলে ধারণা
করছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ।
শুক্রবার (১ মার্চ) শেখ হাসিনা বার্নইনস্টিটিউটে ভর্তিরোগীদের শারীরিক অবস্থা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে
তিনি এ তথ্য জানান।
ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, আমাদের এখানে ১০ জন রোগী ভর্তিরয়েছে। এর মধ্যে একজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রতে
(আইসিইউ) ভর্তি। বাকিরা পোস্ট অপারেটিভ সেন্টারে রয়েছে। তাদের এক্সটার্নাল বার্নমারত্মক নয়। তবে সকলের
শ্বাসনালী পুড়ে গেছে এবং ইন্টার্নাল বার্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তেসবার অক্সিজেন সেচুরেশন ভালো রয়েছে। তবে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পার না হলে বুঝা যাবে না।
তারা প্রত্যেকে কার্বন মনোক্সাইড ইনফেল করেছেন। এটি মারাত্মক বিষাক্ত। এটি ইন্টার্নাল অর্গানগুলোকে নষ্ট করে দেয়।
অক্সিজেন গ্রহণে বাধা প্রদান করে। ফলে যতক্ষণ না এই গ্যাস বের হচ্ছে রোগীরা শঙ্কা মুক্ত নয়। যে কারণে আমরা স্পটে
যাদের মৃত পেয়েছি তাদের এক্সটার্নাল বার্নখুব বেশি ছিল না।
তিনি আরও বলেন, তরুণদের শরীর থেকে এটি দ্রুত ক্লেয়ার হয়। তবে কারও যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি
রোগ থাকে তাহলে সে সহজে কার্বন মনোক্সাইড মুক্ত হতে পারনে না। এর সেকেন্ডারি ইনফেকশনের জন্য যদি অর্গান
ফেইলিউর ঘটে তবে তার মেডিকেল প্রবলেম ডেভেলপ ঘটবে। তখন তাদের আমরা মেডিসিন বিভাগে রেফার করবো।
আমরা সর্বোচ্চ ভালোটা আশা করছি। তবে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
কার্বন মনোক্সাইডের সম্ভাব্য উৎসের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের যে ইন্টেরিয়র ডিজাইন করা হয় তাতে হাইড্রো কার্বন
থাকে। এছাড়া মিথেন গ্যাস পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড ও ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। হাইড্রো কার্বন থেকে ডাই ও
মনোঅক্সাইড তৈরি হয়। এটি মারাত্মক বিষাক্ত, এমনকি তাৎক্ষণাত মৃত্যুও হতে পারে। আমরা ধারণা করছি কার্বন
মনোক্সাইডের কারণেই এত অধিক মৃত্যু হয়েছে।
মৃত ও আমাদের এখানে ভর্তিদের অবস্থা দেখে এমন মনে হয়েছে। আমাদের এখানে সবাই অল্প বার্ননিয়ে ভর্তি। এছাড়া
বাকিরা যারা ছাড়া পেয়েছে তাদের হাতে বা অন্যান্য বহিঃঅঙ্গে সামান্য বার্নছিল বলেও জানান তিনি।
বোর্ডগঠন বিষয়ে ডা . তানভীর বলেন, রাতেই আমাদের বোর্ডগঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মেডিকেল বোর্ডের সবাই
রোগীদের দেখে গেছেন। আমাদের সকল সেটআপ রয়েছে। প্রতিদিন আমরা গড়ে ১২০ জন রোগী ডিল করে থাকি।
বার্নের অনেকগুলো ক্রাইটেরিয়া রয়েছে জা নিয়ে এই সহযোগী অধ্যাপক বলেন, আমরা পানি ও আগুনে পোড়া রোগীদের
চিকিৎসা দিয়ে অভ্যস্ত ছিলাম। এখন আমাদের দেশে বৈদ্যুতিক বার্নও এই ধরনের বিষক্রিয়ার বার্নবাড়ছে। এ ধরনের
বার্নশতাংশ দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। এক সময় এসিড বার্নছিল। অল্প এসিড ছুড়ে মারতো, কিন্তু বিকৃতি হতো
ভয়ানক পর্যায়ের। তেমনই বৈদ্যুতিক বার্নেবাইরে অল্প পুড়ে অথচ হার্ট, কিডনি ও লিভার পুড়ে যায়।