জমির জন্য কবরে শুয়ে বাবার মরদেহ দাফনে বাধা

0
22

নীলফামারী সদরে বাবার কাছ থেকে কিনে নেওয়া তিন শতক জমি লিখে নিতে না পেরে বাবার মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। দাফনের বাঁধা দেওয়ার পাশাপাশি বাবার জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে ওই ছেলেকে। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২৯মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানি যাদুরহাট বাদুলটারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ওই বাবার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।


এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান (৬৯)। শুক্রবার সকালে মজিবর রহমানের জন্য বাড়ির পাশের কবরস্থানে কবর খোঁড়া হয়। দাফনের আগে ছেলে নওশাদ আলী জমির দাবিতে বাবার জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন। পরে নতুন কবর খুঁড়ে মজিবর রহমানের লাশ দাফন করা হয়।


স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুব রহমান বলেন, মৃত মজিবর রহমানের প্রথম স্ত্রীর ৪ ছেলে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। প্রায় ৮ বছর আগে মজিবর রহমান প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলের কাছে তিন শতক জমি বিক্রি করেন। তবে, সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়নি ওই সময়। মজিবর রহমানের মোট ১০ শতক জমি ছিল। তার মধ্যে ২ শতক তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তার ছেলেকে ৫ শতকসহ মোট ৭ শতক লিখে দেন। ৩ শতক জমি তিনি রেখে দেন। মজিবর রহমান ও তার ছেলে নওশাদ আলীর মধ্যে গত ৬ বছর আগে গন্ডগোল হয়। তখন থেকে বাবা-ছেলের মধ্যে কথা বন্ধ ছিল।


তিনি আরও জানান, মজিবর রহমান গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মজিবর রহমান নীলফামারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তার দাফন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, দাফনের আগে বাধ সাধেন এক ছেলে।সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছেলে নওশাদ জমির দাবিতে তার বাবার দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে নিজেই শুয়ে পড়েন এবং বলতে থাকেন, আমাকে জমি দেয়া না হলে বাবার মরদেহ দাফন হতে দেব না। তিনি কবরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো শুয়ে ছিলেন। এরপর পুলিশ আসলে তিনি কবর থেকে উঠে আসেন। এরপর আরেক জায়গায় নতুন করে কবর খুঁড়ে মজিবর রহমানের মরদেহ দাফন করা হয়। এসময় মজিবর রহমানের অন্য ছেলেরা জমির দাবি করেননি। বরং তারা নওশাদকে কবর থেকে উঠার জন্য বারবার অনুরোধ করছিলেন।

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ওই ছেলে কবর থেকে উঠে পালিয়ে যায়। পরে আরেক জায়গায় নতুন করে কবর খুঁড়ে পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten + 10 =