পাটপণ্যের উপর ভারতের অ্যাট্রি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ দুঃখজনক বাণিজ্যমন্ত্রী-তোফায়েল আহমেদ

0
841

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের অ্যাট্রি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ দুঃখজনক। ভারত বাংলাদেশকে তামাক ও মদ ছাড়া সকল পণ্য রপ্তারি ক্ষেত্রে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা প্রদান করছে। অথচ পাটপণ্য রপ্তানির উপর অ্যান্ডি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে। অনেক পণ্য রপ্তানির উপর শতকরা সাড়ে ১২% হারে কাউন্টার ভেলিং শুল্ক নিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে তৈরী পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ভারতের সাথে আলোচনায় তুলে ধরেছে। আবারও বিষয়টি নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনা করা হবে। ভারত বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশকে সবধরনের সহযোগিতা করেছে। এজন্য বাংলাদেশ ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে সকল বাধা দূর করতে আন্তরিক হবে।

মন্ত্রী আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড  ইন্ডাষ্ট্রি’র ২০১৭ সালের নব-নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম খানের নেতৃত্বে আগত কর্মকর্তাগণের সাথে মতবিনিময় করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুণ্যহাতে যুদ্ধবিদ্ধ¯’ বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ২৫টি পণ্য বিশ্বের ৬৮টি দেশে রপ্তানি করে যে বাংলাদেশ আয় করতো মাত্র ৩৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।  বর্তমানে ১৯৬টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করে আয় হচ্ছে ৩৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আগামী অর্থ বছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ ২০০৫-৬ সালে দেশের রপ্তানি ছিল মাত্র ১০.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে রপ্তানি লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আশা করছি রপ্তানি লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০০৫-৬ অর্থ বছরে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মা. ডলার, এখন তা ১,৪৬৬ মার্কিন ডলার, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার এখন ৭.১১ শতাংশ, অর্থ বছর শেষে তা ৭.৫ শতাংশ হবে। দারিদ্রের হার ২০০৬ সালে ছিল ৩৮.৪ শতাংশ, এখন তা ২৩.২ শতাংশে নেমে এসেছে এবং ২০০৬ সালে দেশে অতিদরিদ্র মানুষ ছিল ২৪.২ শতাংশ, এখন তা ১২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৬ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৫২.৩ শতাংশ, আজ তা ৬৩.২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০০৬ সালে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৫.৪ বছর, এখন তা হয়েছে ৭১.৬৩ বছর। ২০০৬ সালে  প্রতিহাজারে শিশু মৃত্যুর হার ছিল ৪৮.৪ জন, এখন তা কমে এসেছে ২৯ জনে। ২০০৫-০৬ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৫,২৪৫ মেগাওয়াট এখন তা ১৫,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন সকল ক্ষেত্রে পাকিস্তান থেকে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীগণ বিব্রত হন, ক্ষতিগ্রস্থ হন এমন কোন পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করবে না। ব্যবসায়ীদের পরামর্শ গ্রহন করে সরকার কাজ করছে। চাহিদা মোতাবেক সরকার ব্যবসায়ীদের প্রাজনীয় সরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের  সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, ডিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম, ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেইন এ সিকদার, সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম রেজাউল কবীরসহ পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

six − 4 =