“এম পি মহোদয় আপনার সু-দৃষ্টি দরকার কারন এ দায় আপনার”

0
1230

শামসুদ্দোহা প্রিন্সঃ
মঠবাড়িয়ার আপমর জনসাধারনের প্রধান অবিভাবক, মঠবাড়িয়া থেকে বারবার নিবার্চিত সংসদ সদস্য ডা: রুস্তুম আলী ফরাজী আপনাকে উদ্দেশ্য করেই আমার এই লেখা। আপনার কর্মব্যস্ততার মাঝে এই লেখাটুকু পরে যদি জনগনের প্রতি আপনার দায়িত্বের যে জায়গাটি রয়েছে সেখানে একটু ভাগ বসাতে পারি তাহলে নিজেকেও আপনার সদ্যসংঙ্গি সেবক মনে করব। আশা করবো আপনি পুরোটাই পড়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। আপনার জীবনে মঠবাড়িয়ার মানুষের প্রতি যে ত্যাগ তা সকলের জানা। তাই মঠবাড়িয়ার জনগনও কখনো ভুল করেনি। আপনাকে জনগনও বারবার নিবার্চিত করে পাঠিয়েছে সংসদে। সাধারন জনগনের মনের মধ্যে আপনি এমন জায়গা পেয়েছেন যে সাধারন জনগন এখনও আপনাকেই তাদের নেতা হিসাবে মনে করে । যার প্রমান হচ্ছে বাংলাদেশের দুই শক্তি ধর রাজনৈতিক দলের বাহিরে থেকেও আপনি আজও মঠবাড়িয়ার সংসদ সদস্য। বর্ষিয়ান সাংসদ হিসাবে আপনার পরিচিতি সারা বাংলাদেশে।
প্রসংগে আসছি, মঠবাড়িয়ায় আপনার সময়ে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে, এখনও হচ্ছে কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে একটু সু-দৃষ্টি না দিলে জনগনের ভোগান্তি কমবে না।
প্রথমত: আমরা জানি কিছুদিন আগে মঠবাড়িয়া ভূমি জরিপ অফিসে ঘুষ দুর্নীতি ও দালাল মুক্ত করতে আপনার উদ্দ্যোগে সিসি ক্যামেরা দেয়ার পর দালাল ও অফিসারদের সমস্যা হলেও কিছু কিছু ক্ষমতাধর দালাল এখনও তাদের ইচ্ছেমত অফিসের ভিতরে যাচ্ছে। ভূমি জরিপ অফিসে সিসি ক্যামেরা দেখার দায়িত্বে থাকা লোকগুলো যেন “বিড়ালের কাছে দুধ পাহাড়া দেয়ার মত”। আরও ভয়ানক হচ্ছে আগে শুধু দালাল ছিল এখন দালাদের আবার বস্ তৈরি হয়েছে। আপনি যাকে ভূমি জরিপ অফিসে ঘুষ বন্ধ ও দেখাশুনার বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন সেই অন্য এলাকা থেকে তাড়া খেয়ে আসা জামাতপন্থি ডা: পরিচয়দানকারী লোকটি এখন “মরার উপর খাড়ার ঘা” হয়ে মরন কামড় দিচ্ছে সাধারন জনগণ ও দালালদের উপর। (বি: দ্র: এই বিশেষ লোকটির বিগত দিনের ইতিহাস পরে তুলে ধরব) এ ব্যাপারে আপনার হস্তক্ষেপ দরকার।
দ্বিতীয়ত: মঠবাড়িয়ার যুবসমাজ আজ ধংসের দাড়প্রান্তে। মাদক এমন ভাবে মঠবাড়িয়ার ছাত্র যুবকদের মাঝে ছড়িয়েছে যার লাগাম এখনই টেনে ধরতে না পারলে আগামী ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। মাঝে মাঝে এ নিয়ে লেখালেখি করলেও খুব বেশি সুফল পাওয়া যায়নি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাদক সেবন বন্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন মিলে সন্ধ্যার পর ১৮ বছরের কম বয়সি ছেলেদের বাসার বাহিরে থাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রনে সফলতা পেয়েছে। কিছু দিন আগে আপনি মঠবাড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে-মসজিদে মাদক নিয়ন্ত্রনে কঠোর অবস্থান নেয়ার কথা জানিয়ে মুসল্লিদের সামনে বক্তব্য দিলেও কার্যত: এর কোন সুফল আমরা পাইনি। আমাদের মঠবাড়িয়ার অনেক মাদক ব্যবসায়ি রাঘববোয়ালরা বিভিন্ন দলের ছত্রছায়ায় আজও এ ব্যবসা অনায়াসে চালিয়ে যাচ্ছে। মঠবাড়িয়ার অবিভাবক হিসাবে আপনার এ ব্যাপারে হার্ডলাইনে যাওয়া একান্ত কর্তব্য বলে সাধারন জনগন মনে করে।
তৃত্বীয়ত: মঠবাড়িয়ার প্রাণকেন্দ্র মঠবাড়িয়া পৌরসভা কিন্তু এই পৌরসভার প্রধান রাস্তাটির আজ বেহাল দশা। বিভিন্ন পত্রিকায় এরই মধ্যে এনিয়ে অনেক লেখালেখি করেছি কোন লাভ হয়নি। (বহেরাতলা থেকে থানাপাড়া কলবাড়ি পর্যন্ত) আমার মনে হয় আপনি একজন সচেতন নাগরিক ও মঠবাড়িয়ার অবিভাবক হিসাবে চলার পথে এ দুর্দশার কথাটি উপলব্ধি করেও হয়ত ভুলে গেছেন। রাস্তাটি জেলা প্রশাসনের নাকি পৌরসভার এনিয়ে আমাদের ভাবনা নয় এ ভাবনাটি আপনাদের। আমাদের দরকার দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার। দয়া করে বিষয়টি আমাদের মত সকল সাধারন জনগনের কথা বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।
চতুর্থত্ব: মঠবাড়িয়ায় চিকিৎসা ব্যাবস্থায় এখন চলছে বেলকিবাজি, দালালবাজি, এবং ডাকাতি। প্রথমে আসি মঠবাড়িয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথায়। আপনার চেস্টায় এ হাসপাতালে এম্বুলেন্স এসেছে, সিট বেড়েছে, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এসেছে সত্য, কিন্তু এখন আমাদের “ঢাল আছে তলোয়ার নেই”। এক্স-রে মেশিন আছে তা প্রায় প্রতিদিন বিকল হয়ে যাচ্ছে। ই সি জি মেশিন আছে চালানোর জন্য মহিলা টেকনিশিয়ান নেই। এতবড় হাসপাতালে কাযর্ত: ডাক্তার হাতে গোনা ৩ থেকে ৪ জন। কার্যত: এদের পক্ষে এতোবড় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা রক্ষা করা সম্ভব নয়। হাসপাতালের ভিতরের পরিবেশ নিয়ে কিছু লেখালেখি করার পর পরিচ্ছন্ন হলেও বাহিরের পরিবেশ অত্যান্ত নোংরা। জানা যায় পরিচ্ছন্ন কর্মিদের কোন সরকারি ভাবে বেতন-ভাতা নেই। ডাক্তারদের নিজস্ব খরচে তারা এ ব্যবস্থাপনাটি চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতালে দালালদের উৎপাত চরম আকারে ধারণ করেছে। হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যহত হওয়ার সুযোগে দালালদের হাত ধরে রোগী চলে যাচ্ছে গলাকাটা ক্লিনিক গুলোতে। এরপর আসি ক্লিনিকগুলোর কথায়, মঠবাড়িয়ার ক্লিনিকগুলো মানুষ কাটা ও মানুষ মারার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এমনও জানাযায়, কিছু কিছু ক্লিনিককে ডাক্তার ছাড়াই চলে অপরেশন। যার প্রমান সম্প্রতি একটি ক্লিনিকে তুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। তারপরে বিষয়টি নিয়ে ঘটে রাজনৈতিকভাবে রফাদফা। কিছু ক্লিনিককে মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করে কোন রোগ না পেলেও বিভিন্ন অসুস্থ্যতার অযুহাতে আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় ভুয়া অপরেশন করে রোগীদের সাথে প্রতারণা করা হয়।
আপনি বিষয়টি যদি ক্ষতিয়ে দেখেন অথবা যে সব ক্লিনিকগুলো থেকে যে সকল ডাক্তারগন বেড়িয়ে এসেছেন তাদের সাথে আলাপ করলে এ ব্যপারে যথেষ্ট তথ্য পাবেন। আপনি পেশায় একজন ডাক্তার, আশির দশকে মঠবাড়িয়ায় কলেরা, ডায়ারিয়া যখন মহামারি আকার ধারন করে তখন আপনি এ মাটির টানে তাদের পাশে দাড়িয়ে মঠবাড়িয়ার জনগনের মন জয় করেছিলেন আমি অনুরোধ করব আপনি চিকিৎসা ব্যবস্থার এই দু:সময়ে মঠবাড়িয়ার মানুষের পাশে দাড়িয়ে চিকিৎসার নামে মানুষরুপি এডাকাতদের হাত থেকে জনগনকে আরেকবার বাঁচাবেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + five =