জঙ্গি দমনে পুলিশের সাফল্যের বছর

0
1243

বিদায়ী বছরটি জঙ্গি দমনে পুলিশের অভূতপূর্ব সাফল্যের বছর। অবশ্য এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে এ বাহিনীর সদস্যদের অপরিসীম সাহস। এ বছর জঙ্গিদের হামলায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ ৪ চার সদস্যের মৃত্যু হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। যারা নিহত হয়েছেন তারা দেশের গর্বিত সন্তান বলে পুলিশ কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন। পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, জঙ্গি দমনে পুলিশ সব সময় কাজ করে আসছে। তাদের নিয়ন্ত্রণেও রাখা গেছে। কিন্তু ২০১৬ সাল পুরো সময় পুলিশকে আলাদাভাবে জঙ্গিদের নিয়ে ভাবতে হয়েছে। এ জন্য পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনী গঠন, জনবল কিংবা সমরাস্ত্র সংযোজন করে জঙ্গিদের দমনকাজে ব্যবহার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলস কাজ করেছে বলেই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। ১ জুলাই গুলশান ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে জঙ্গিরা। ঢুকেই তারা ভেতরে থাকা দেশি-বিদেশিদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এ সময় গুলশান থানার এসআই ফারুক লোকজন নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওয়্যারলেস সেটে তথ্য দেন। ঘটনাস্থলে চলে আসেন তৎকালীন বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও ডিবির সহকারি কমিশনার রবিউল ইসলাম। তারা প্রতিরোধ করতে গেলে জঙ্গিরা গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এতে তারা আহত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে ২ জন মারা যান। এই ঘটনায় ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের অনেকেই এখনো রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলা করে জঙ্গিরা। ঈদের জামাতের জন্য পুরো এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশে বসানো হয় চেকপোস্ট। এই চেকপোস্টে দুই জঙ্গি হাতে ধারালো অস্ত্র ও বোমা নিয়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে কনস্টেবল আনছারুল হক ও কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম মারা যান। ১৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর কল্যাণপুর, রূপনগর, আজিমপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, আশুলিয়া, টাঙ্গাইল এবং আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে আরও বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হন। এদের মধ্যে ওসি, এসআই, এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য থাকলেও কনস্টেবলের সংখ্যা বেশি। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় যেসব হামলা হয়েছে সেগুলোর তদন্ত চলছে। প্রতিটি মামলার তদন্ত একজন করে ইন্সপেক্টরকে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে নতুন-নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − 6 =