‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কী ভুলিতে পারি’। আজ ১ ফেব্রুয়ারি, ভাষা আন্দোলনের মাস শুরু। সময়ের আবর্তে ৬২ বছর পর আবার যখন আমাদের জীবনে ফিরে আসে মাসটি তখন সমগ্র জাতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় মাথা অবনত করে শহীদদের প্রতি। ১৯৫২ সালের এই মাসেই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার প্রয়োজনে রক্ত দিয়েছিল বাংলার অসম সাহসী তরুণরা। পাকিস্তানি বুলেটও সেদিন তাদের দমাতে পারেনি।
সেদিনের সেই আত্মদানই পরবর্তীকালে রূপ নিয়েছিল বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে। পাকিস্তানি শাসক এবং তাদের দোসরদের সব চক্রান্ত, সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাঙালি জাতি এগিয়ে গেল তার অভীষ্ট লক্ষ্যে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম হলো স্বাধীন বাংলাদেশের। তাই এই ফেব্রুয়ারিকে নিয়ে আমাদের এত অহংকার, এত গর্ব। মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেয়ার এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর সেই বিরল আত্মদানের স্বীকৃতিও মিলেছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে আজ একুশে ফেব্রুয়ারিকে পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হচ্ছে সেই অমর শহীদদের, যারা ভাষার জন্য তাদের জীবন দিয়ে গেছেন। সত্যি আজও ভাই হারানোর কষ্ট বাঙালি ভুলতে পারেনি। একুশে ফেব্রুয়ারি এক দিনে আসেনি। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই গৌরবের মাস। ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা ফিরে তাকাই আমাদের শিকড়ের দিকে। আমাদের সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্য নতুন করে আমাদের এগিয়ে চলার প্রেরণা জোগায়। সঙ্গত কারণেই ভাষার মাস নিয়ে আমাদের মধ্যে একটি অন্য রকম আবেগ কাজ করে। সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ থাকে মাসজুড়েই। এদিকে শহীদের স্মরণে আজ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে অমর একুশের গ্রন্থমেলা। বিকাল ৩টায় মেলাটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাসটিকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পালন করবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি।