আলোচনার টেবিলে জেরুজালেমকে না রাখার সিদ্ধান্ত

0
614

আলোচনার টেবিলে জেরুজালেম ইস্যু আর থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার ইসরাইলের সংবাদপত্র ‘হাইয়ুম’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। তবে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, ইসরাইলি ‘বসতি’ ফিলিস্ত্মিনের সঙ্গে শান্ত্মিপ্রক্রিয়াকে ‘জটিল’ করে তুলছে। তাই বিষয়টি ইসরাইলকে মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা, এএফপি অনলাইন

 

 

গত মাসে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জেরুজালেম ইস্যুতে একই অবস্থান ব্যক্ত করেছিলেন ট্রাম্প।

 

 

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জেরুজালেম অবশ্যই ইসরাইলের রাজধানী। কোথায় সীমান্ত্ম টানা হবে, দুইপক্ষ সেটা নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছলে আমি সমর্থন দেব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এটি আলোচনার টেবিল থেকে সরিয়ে নিয়েছি। তাই আমরা এটা নিয়ে আর আলোচনা করতে চাই না।’

ফিলিস্ত্মিন ও ইসরাইল উভয়পক্ষই শান্ত্মি চায় না বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি বলতে চাই, ফিলিস্ত্মিনিরা শান্ত্মি চায় না।’ দীর্ঘদিনের মিত্র ইসরাইলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাদের ব্যাপারেও আমার মনে হচ্ছে, তারাও শান্ত্মি স্থাপন করতে ইচ্ছুক নয়। যুক্তরাষ্ট্র কখন শান্ত্মি পরিকল্পনা পেশ করবে? পত্রিকার সম্পাদক বোয়াজ বিসমুথের এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এখন শুধু অপেক্ষা করে যেতে হবে আর দেখতে হবে কী হয়।’

শান্ত্মি পরিকল্পনায় ইসরাইলি বসতির বিষয়টি থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বসতি নিয়ে কথা বলব। বসতিস্থাপন এমন একটি বিষয়, যেটি সবসময়ই শান্ত্মিপ্রক্রিয়াকে জটিল করেছে এবং খুবই জটিল করে তুলছে। সুতরাং, বিষয়টি নিয়ে ইসরাইলকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে বলে আমি মনে করি।’

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরাইলের দখল করে নেয়া পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম গড়ে তোলা প্রায় ১৪০টি বসতিতে বাস করে ছয় লাখের বেশি ইহুদি। আন্ত্মর্জাতিক আইনের আওতায় এসব বসতিস্থাপন অবৈধ। যদিও ইসরাইল সেটা মানে না। প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরে ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তার এই ঘোষণায় ফিলিস্ত্মিনিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ফিলিস্ত্মিনিরা ওই সময় জানিয়েছে, তারা আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্ত্মি আলোচনা চায় না। ট্রাম্প সে সময় হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ফিলিস্ত্মিনিরা শান্ত্মি আলোচনায় রাজি না হলে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য বন্ধ করে দেয়া হবে।

 

রুশ সমর্থন চান মাহমুদ আব্বাস

ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে ফিলিস্ত্মিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সোমবার মস্কো সফরে গেছেন। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সফরের দুই সপ্তাহ পর ফিলিস্ত্মিনি এই নেতা মস্কো সফরে যান। জেরুজালেমকে ওয়াশিংটনের স্বীকৃতির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেন আব্বাস। পাশাপাশি ইসরাইল-ফিলিস্ত্মিন সংঘাত নিরসনে ওয়াশিংটনের কোনো ধরনের মধ্যস্থতা আব্বাস মেনে নিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ফিলিস্ত্মিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায়ে তিনি কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আগামী ২০ ফেব্রম্নয়ারি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আব্বাসের ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × two =