আ.লীগকে নির্বাচনের আগেই সংসদ ভাঙতে হবে: মীজানুর

0
590

একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকার এখন যাই বলুক না কেনো সংসদটি নির্বাচনের আগে ভাঙতেই হবে।’

 

বুধবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই আয়োজিত টক শো তৃতীয় মাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি তার এই অভিমত তুলে ধরেন।

জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় টক শোতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘যারা পার্লামেন্টে সরকারদলীয় এমপি আছে অথবা তার জোটের, তাদের অনেকেই নির্বাচনের জন্য নমিনেশন পাবে না। এদেরকে যদি নমিনেশন না দেয়া হয় নিশ্চয়ই নতুন একজনকে দেবে। তখন নতুন প্রার্থী নৌকার জন্য ভোট চাইতে জনগণের কাছে যাবে। তখন ওই এলাকার যে এমপি আছেন যিনি নমিনেশন পাননি অথচ রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বসে থাকবেন। এটা নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ চাইবে না। আমার মনে হয় এতটুকু বুদ্ধি আওয়ামী লীগের আছে।’

বিএনপি ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে মীজানুরের কাছে মত জানতে চেয়েছিলেন সঞ্চালক।

মীজানুর বলেন, ‘এটাকে আমি সংকট হিসেবেও দেখছি না। তবে আওয়ামী লীগ এই বিষয়টা ভাবছে কি না তা আমি জানি না। এটা নিয়ে তাদের ভাবতেই হবে। কারণ পার্লামেন্ট রেখে কারো আওয়ামী লীগের পক্ষেই নির্বাচন করা সম্ভব না।’

সঞ্চালক জিল্লুর রহমান আসিফ নজরুলের কাছে জানতে চান, খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হতে পারে কি না।

জবাবে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী বলেন, ‘আমি মনে করি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় হয়েছে। রায়টা যদি ন্যয়বিচারের প্রকাশ হিসেবে দেখার স্কোপ থাকে তবে এটা একটা ভালো গুণগত পরিবর্তন আনার কথা দেশে। কিন্তু রায়টাকে যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ থেকে দেশের অন্যতম একটি দলের প্রধানকে নির্বাচনকে সরিয়ে দেয়ার অভিপ্রায় থাকে তবে সেটা ভালো ফল বয়ে আসবে না। খুবই খারাপ পরিণতি হবে।’

‘স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে এখন এর বিচার আমরা কীভাবে করব? এই মামলায় রায় কি ন্যয়বিচার করার জন্য হয়েছে? নাকি প্রতিহিংসা রাজনীতি থেকে তাকে মাঠ থেকে সরানোর জন্য এটা করা হয়েছে?’।

পরে আসিফ নজরুল নিজেই জবাব দেন। বলেন, ‘এই মামলা করা হয়েছিল ওয়ান ইলেভেন গর্ভমেন্টের আমলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতাসীন থাকাকালীন। তখন খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা দুজনার নামেই অনেকগুলো মামলা করা হয়েছিল। সেসব মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অর্থের অঙ্গের পরিমাণ অনেক বেশি পরিমাণ ছিল। হাজার কোটি টাকার পরিমান অর্থের মামলায় করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুই নেত্রীর বিরুদ্ধেই হয়েছে। তখন সবাই বলতে এই মামলাগুলো করা হয়েছে দুই নেত্রীকে মাইনাস করার জন্য। মাইনাস টু ফর্মূলা হিসেবে।’

‘এমনই একটি মামলায় খালেদা জিয়া শাস্তি পেয়েছেন। তারেক রহমান শাস্তি পেয়েছেন। ওই সময়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয় সে মামলার একটা সচল রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই মামলাগুলো নানা ভাবে প্রত্যাহার করেছে। উনি ক্ষমতায় আসার দুই বছরের মধ্য মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।’

‘দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে করা করা মামলার মধ্যে একজনের সব মামলা প্রত্যাহার করা হলো। অথচ আরেকজন সেই একই ধরনের মামলায় সাজা ভোগ করছেন। এটা স্বাভাবিকভাবে সন্দেহ- উদ্বেগ করে। তখন মনে প্রশ্ন জাগে মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বার্থে করা হয়েছে।’

অপরাধ বিচিত্রা/১৫.০২.২০১৮

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

7 + 1 =