১২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আবারও বাড়ল

0
544

শেষ সময়ে বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত ও আদায় জোরদার করায় এক অঙ্কে নেমে এসেছে খেলাপি ঋণ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, যা এ সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ হিসেবে গত তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ কমছে প্রায় ৬ হাজার ৪ কোটি টাকা। তবে শেষ তিন মাসে কমলেও গত এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বিতরণের বিপরীতে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। তিন মাস আগে এই ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৩৮ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা বা ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ সময়ে সরকারি মালিকানার দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৯৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫ হাজার ৪২৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তিন মাস আগে এই ব্যাংক দুটি খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা বা ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৩৩ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। অন্যদিকে, ডিসেম্বর শেষে বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ৩০ হাজার ৬২২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। তিন মাস আগে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। এদিকে, ডিসেম্বর শেষে আলোচিত ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা; যা এ সময় পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭৮ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সূত্র জানায়, গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খেলাপি ঋণ বাড়লেও শেষ প্রান্তিকে তা কমেছে। এর কারণ হিসেবে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো তাদের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাই সেখানে ভালো অবস্থান দেখাতেই বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে থাকে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে অন্যতম হলো খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা নবায়ন। আর বছরের শেষ সময়ে এসে এই সুবিধা দেয়া-নেয়ার প্রবণতাও বাড়ে। এ ছাড়া শেষ সময়ে ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার করা হয়। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মোট ঋণ বিতরণ করেছে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। এক বছর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর অডিট রিপোর্টে ভালো অবস্থান দেখানোর জন্য সাধারণত ব্যাংকগুলো ঋণ আদায়ের ওপর বেশি জোর দিয়ে থাকে। পাশাপাশি এ সময়ে বড় অঙ্কের ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু ঋণ অবলোপনও

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 − four =