আ.লীগ, জামায়াত, জাতীয় র্পাটি একজোট তারপরও বিএনপির বিজয়!

0
819

এবিএম ইমরান, বিশেষ প্রতিবেদক অপরাধ বিচিত্রা:

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে রাষ্ট্রয়ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান আমিন পাটকলের সিবিএ র্নিবাচন খুবই গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশে র্শীষস্থানীয় বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে আমিন জুটমিলের অবস্থান অন্যতম। প্রায় দশ হাজার শ্রমিক এখানে কাজ করতো। এক সময় এ নির্বাচনকে ঘিরে চট্টগ্রাম ব্যাপী সাজ সাজ রব পরে যেত। কিন্তু র্বতমান বাস্তবতায় সরকারী জুটমিল গুলোর জৌলুশ কমে গেছে। অনেক গুলো কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

খুড়িয়ে খুড়িয়ে যে কয়েকটি বৃহৎ শিল্প কারখানা চলছে সে গুলোরও গরিষ্ঠ সংখ্যায় দরকারী ইউনিট গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। উৎপাদন কমে গেলেও নিধিরাম সরদার বেশে পরর্নিভরশীল হয়ে এখনো ২/৩ হাজার শ্রমিকের অন্ন সংস্থান করে চলেছে এ কারখানা গুলো । জুটমিল শ্রমিকরা দুই – চার সপ্তাহ পর এক সপ্তাহের মুজুরী পেয়ে, খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করলেও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় দুই বছর অন্তর সিবিএ নির্বাচন গুলোতে তাদের আনন্দের শেষ থাকেনা। এ আশায় থাকে যে নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে আরেকটি নতুন ভোরে পূরোনো জৌলুশ ফিরে আসে কিনা। বেশি কিছু হয়তো নয়, নতুন ক্যারিশমায় অনিয়মিত বেতন-ভাতা নিয়মিত হয়ে মোটা ভাত মোটা কাপড়ের আবার নিশ্চয়তা ফিরে পাবার প্রত্যাশায়। কিন্তু নেতা যায় নেতা আসে ভাঙ্গা ঘরের চালা বেচে কিছু লোকের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয় বটে। কিন্তু বঞ্চিত জুট শ্রমিকের সুদিন আর ফিরেনা। তারপরেও নতুন আসায় আবার তারা বুক বাধে, রাজনীতির রাহু বন্ধনে আবদ্ধ শ্রমিক সংগঠন গুলোর ছায়ায় পুন পুন ব্যাবহার হয় তারা। গত ২৬ এপ্রিল র্শীষস্থানীয় শিল্প কারখানা চট্টগ্রামের আমিন জুটমিলে সিবিএ র্নিবাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম শহরের উত্তরাংশ জুড়ে চারিদিকে পোষ্টার ফেষ্টুনে ভরে যায়। মিছিল, মিটিং, আনন্দ উল্লাশে সাজ সাজ রব পড়ে যায় চর্তুদিকে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলের বড় বড় নেতারা তাদের সমর্থিত প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে প্রচেষ্টার অন্ত রাখেনি। এ নির্বাচনকে ঘিরে আওমীলীগ,বিএনপি,জামায়াত,জাতীয় পার্টি সর্মথক গন খুব উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে নানা র্কমসূচি পালন করেছে। র্বতমানে দেশে নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক পরিবেশে এ নির্বাচন একটি অবাধ সুষ্ট ও গণতান্ত্রিক আবহে সম্পন্ন হয়েছে। সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হিসেবে দেখা গেছে, এ নির্বাচনে অংশ নেয়া তিনটি পরিষদের মধ্যে ওয়ার্কাস পার্টির জাতীয় ফেডারেশন অধিভুক্ত ‘আমিন পাটকল ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সর্মথনে বর্তমান জাতীয় রাজনীতিতে পরস্পর বৈরী ভাবাপন্ন আওয়ামী লীগ- জামায়াত ও জাতীয় পাটির্র নির্বাচনী ঐক্য! চার দলের এত বড় ঐক্য সত্বেও বিএনপি সর্মথিত ‘আমিন পাটকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নিকট ১০২ ভোটে পরাজিত হয়। দেশের কোন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীকে ফলাফল মেনে নিতে সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু এখানে পরাজিত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শামশুল আলম ও তার পৃষ্টপোষক স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর মো: মোবারক আলী, জাতীয় পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ সভাপতি আলহাজ্ব মো:কামাল উদ্দীন তালুকদার, ও জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারী লুৎফর রহমান ফলাফলে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন বলে জানাযায়। নির্বাচন পরবর্তী আমিন পাটকলে পক্ষে-বিপক্ষের সকল শ্রমিক সৌর্হাদর্পূণ পরিবেশে কর্মস্থলে ফিরে যেতে দেখাগেছে। এ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শ্রমিকগন এ প্রতিবেদক কে বলেন, “এখানে সব দল,মত সবাই সমান সুযোগ পেয়েছে। অবাধ-সুষ্ঠ,মুক্ত-স্বাধীণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে হিংসা হানাহানি মুক্ত নির্বাচন হয়েছে। বর্তমানে দেশ যেদিগে যাচ্ছে সে তুলনায় আমিন জুটমিলকে এক খন্ড বাংলাদেশ ভাবতে খুব ভাল লাগে।” এ নির্বাচনে প্রতিদন্ধী পরিষদ গুলোর মধ্যে সর্বোচ্ছ ৯৩৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে বিএনপি সর্মথিত ‘আমিন পাটকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’রেজি-২৪৬ এর সভাপতি পদে মো: আরিফ ও সেক্রেটারী পদে মো: মোস্তফা। ৮৩১ ভোট পেয়ে ২য় স্থান পেয়েছেন নিকটতম প্রতিদন্ধী আওমীলীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত ‘আমিন পাটকল ওয়ার্কাস ইউনিয়ন’ রেজি-৯৮০ এর সভাপতি পদে মো: লেদু মিয়া সরদার ও সেক্রেটারী পদে মো: শামশুল আলম। ১৩০ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন আমিন পাটকল শ্রমিক ইউনিয়ন’রেজি ৯৬৮এর সভাপতি পদে মো: ইসলাম ও সেক্রেটারী পদে মো:মোকলেস।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eight + 10 =