দুর্নীতির শীর্ষে অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদ প্রশাসনের সকল স্তর ম্যানেজ

0
687

মোঃ আবদুল আলীম:
সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। এদেশে বিশালাকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি করে পার পাওয়া যায় যার একটি উদাহারন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শহীদ জিয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদ। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অদ্য পর্যন্ত তদন্তটুকু পর্যন্ত হয়নি। এর ফলে ভুক্তভোগী শিক্ষকগণ, ছাত্রী, অভিভাবকসহ সকলে হতাশ।

 

সবার মুখে একই কথা এদেশে কি প্রশাসন বা আইন বলতে কিছু নেই? আবার অনেকে বলছেন বর্তমানে দেশে আইন নেই, নিয়ম শৃঙ্খলা নেই, সব স্তরেই চলছে অরাজকতা। ঢাকা মহানগরির ৮২/১২/২ উত্তর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত শহীদ জিয়া স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদ এতটাই প্রভাবশালী যে তার বিরুদ্ধে এতগুলো অভিযোগ থাকা সত্বেও প্রশাসন তার কেশের অগ্রভাগ পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারছে না? তার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক সহ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতগুলো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করার পরও এবং সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও তিনি কেমন করে বহাল তবিয়তে আছেন তা ভাবতে গেলে মনে হয় দুর্নীতিবাজ এ অধ্যক্ষের কাছে যাদুর কাঠি আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক, ছাত্রী ও অভিভাবক এ প্রতিবেদককে জানান যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা ও পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি প্রতিটি শিক্ষকের নিকট থেকে কয়েক লাখ টাকা কর্য হিসেবে নিয়েছেন। এ টাকা নাকি তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগে দিয়ে তার অপকর্ম, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত প্রক্রিয়া পার করার জন্য ব্যয় করছেন। দুর্নীতিবাজ এ অধ্যক্ষ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন যে, বাংলাদেশে এমন কোন শক্তি নেই যা তার কোন কিছু করতে পারবে। তিনি আরও বলেন তিনি টাকা দিয়ে প্রশাসনকে কিনে নিচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন বাস্তবে হচ্ছেও তাই। অভিযোগ থেকে প্রকাশ তিনি এমন কোন দুর্নীতি নেই যা না করছেন। টাকা অত্মসাৎ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ফোঁকলা করে ফেলছেন। যাত্রাবাড়ীতে তিনি আলীশান বাড়ী নির্মান করেছেন, বেইলি রোডে ফ্ল্যাট কিনেছেন, দয়াগঞ্জে ফ্ল্যাট কিনেছেন, গুলিস্তান আন্ডারগ্রাউন্ডে একাধিক দোকান নিয়েছেন, যাত্রাবাড়ী-মিরপুর রোডে চলাচলকারী ট্রান্স সিলভা পরিবহনের বিশাল শেয়ার তার নামে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করলে এর সত্যতা প্রমানিত হবে। কিন্তু ভুক্তভোগীরা বলছে তদন্ত করবে কে? প্রশাসনের সকল স্তরে তিনি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রেখছেন। দাপটের চোটে ছাত্রীদের কামরা ভেঙে নিজের কামরা প্রসারিত করে মন্ত্রীর হালে অফিস করছেন। যেসব শিক্ষকে তার পছন্দ নয় তাদেরকে প্রতিদিন ডেকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন ও হয়রানি করছেন। অভিভাবকদেরকে পর্যন্ত গালিগালাজ করছেন বলে এলাকা সূত্রে জানা গেছে। ছাত্রীরা তার কাছে ভয়ে যেতেই পারছে না। সব মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে এক ভুতুরে অবস্থা বিরাজ করছে যা দেখার কেউ নেই, নেই কোন প্রশাসন। সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিনের মত তিনি নিজেকে নির্লজ্যের মত শিক্ষা প্রদিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা দাবি করছেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি স্কুল শাখায় ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে অদ্য পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়ম করে বর্তমানে অধ্যক্ষ পদ দখল করে রেখেছেন। কোন অভিভাবক তার সাথে কোন প্রয়োজনে দেখা করতে গেলে তিনি বাইরে এক ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখেন। এরপর দেখা করলে অশালীন আচরন করেন। তার এসব অপকর্মের কারনে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার বিরুদ্ধে দেয়াল লিখন হয়েছে বেশ কয়েকবার। কলেজটির বাইরে দোকানগুলোর দেয়ালে এমনকি আবাসিক বাড়ীগুলোর দেয়ালে অসংখ্য পোষ্টার লাগানো হয়েছে বেশ কয়েকবারে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর (৪৮ নং ওয়ার্ড) আবুল কালাম অনু বলছেন অধ্যক্ষ ফাতেমা রশিদকে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে না তাড়ালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচানো যাবে না। তার বিরুদ্ধে এ প্রতিবেদকের তদন্ত চলমান আছে। (চলবে)

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × three =