রাজশাহীর পদ্মার পাড়ের চিত্র দিনদিন বদলে যাচ্ছে

0
782

মোঃ আখতার রহমান, ব্যুরো প্রধান, রাজশাহীঃ রাজশাহী মহানগরী সকলের কাছে শিক্ষানগরী নামে খ্যাত। রাজশাহী মহানগরীর বুলনপুর থেকে পশ্চিমে পবা উপজেলার নবগঙ্গা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় গত ৩০ বছরে প্রায় আড়াই হাজার ঘরবাড়ি চলে গেছে পদ্মা নদীর গর্ভে। তাই ভাঙনের ভয়ে নদীপাড়ের এই গ্রামগুলোর বাসিন্দারা পাকাবাড়ি নির্মাণ করতেন না। কিন্ত গত বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ফলে প্রায় ৬ মাস আগে থেকে এলাকাগুলোতে এখন পাকাবাড়ি নির্মাণের হিড়িক পড়ে গেছে।

কেননা, পুরো এলাকাটি এখন কংক্রিটের ব্লক দিয়ে বাঁধাই করার কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ‘পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রাজশাহী মহানগরীর অন্তর্ভুক্ত বুলনপুর থেকে সোনাইকান্দী পর্যন্ত সংরক্ষণ’ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে কাজটি। প্রথম ধাপে পাঁচটি প্যাকেজে বুলনপুর থেকে হাড়ুপুর পর্যন্ত দুই হাজার ৬৫০ মিটার নদীর তীর রক্ষার কাজ চলছে। ব্লক দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীর পাড়। এই কাজ শেষের পর পদ্মাপাড়ের প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের বেশি এলাকার স্থায়ী সংরক্ষণ হবে।
হাড়ুপুর এলাকার বাসিন্দা আব্বাস আলী (৬০) বলেন, প্রায় ৩০ বছরে অন্তত আড়াই হাজার বাড়ি বিলিন হয়ে গেছে পদ্মায়। তাই এলাকায় কেউ পাকাবাড়ি নির্মাণ করতো না। কিন্তু বাধের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর এলাকার যার যার সামর্থ্য আছে, তারা সবাই পাকাবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন
রোববার সকালে হাড়ুপুর এলাকায় পাড় বাঁধাইয়ের কাজ পরিদর্শনে যান রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি জানান, পুরো প্রকল্পের ব্যয় ২৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩১ কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা নদী ড্রেজিংও করা হবে। এর ফলে রাজশাহী শহরের পাশে নদীতে সারাবছর পানির প্রবাহ থাকবে। নদী তীর রক্ষা ও ড্রেজিংয়ের পর ওই এলাকায় পাকা সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি কাজ পরিদর্শন করেন এবং কাজের মান দেখে সন্তোষ্ট প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে কাজের অগ্রগতি নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, উন্নয়ন তখনই বোঝা যাবে, যখন এর সুফল মানুষ ভোগ করবে। এখন এই বাঁধের কারণে এলাকার মানুষ পাকাবাড়ি তৈরী করা শুরু করেছেন। এটা দিয়েই উন্নয়ন বোঝা যায়। বোঝা যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটছে।
পাউবোর রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান জানান, চলমান প্রকল্পটি গ্রহণ করতে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে তিনি তিনবার পরিকল্পনা কমিশনে গিয়েছিলেন। নিজের নির্বাচনী এলাকার বাইরের এলাকাও প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও সংসদ সদস্য বাদশা সব সময় এই কাজ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পাশাপাশি এলাকার লোকজনও বেশ সহযোগিতা করেছেন। তাই দ্রুতই সম্পন্ন হচ্ছে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ।
নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, এই বাঁধের পাশেই বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে বহুতল ভবন হবে। কিন্তু যে স্থানটিকে পার্কের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে সেখানে আগে ভবন করার কথা কেউ ভাবতেও পারতেন না। এই বাধের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। বাধের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার পর এলাকাটি একটি নান্দনিক সৌন্দর্য্য পাবে বলেও মনে করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।##

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nine + twelve =