জেনে নিন খেজুরের নানা উপকারিতা

0
2450

সুস্বাদু এই মরু ফলটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, উপকারী তেল, ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, কপার এবং আরও নানাবিধ খনিজ। রয়েছে উপকারী ভিটামিনও। তাই তো প্রতিদিন সকালে ৩-৪টি করে খেজুর খেলে শরীরের তো কোনো ক্ষতি হয়ই না। উল্টো দারুণ উপকার পাওয়া যায়।

বিশেষত যারা কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন বা কোনো ধরনের পেটের রোগে ভুগছেন তাদের জন্য় তো এই ফলটি মহৌষধির সমান! তবে এখানেই শেষ হয়ে যায় খেজুরের গুণ, এমনটা ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন। কারণ নিয়মিত এই ফলটি খেলে মেলে আরো অনেক উপকার।

১. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায় : বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়মিত এই ফলটির পাতা খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে চোকে পড়ার মতো! সেই সঙ্গে নাইট ব্লাইন্ডনেসসহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।

২. এনার্জির ঘাটতি দূর করে : এই ফলটির অন্দরে থাকা প্রকৃতিক সুগার রক্তে মেশার পর এমন মাত্রায় খেল দেখাতে শুরু করে যে শরীর একেবারে চনমনে হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে মানসিক ক্লান্তি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এবার থেকে যখনই ক্লান্ত লাগবে এক-দুটো খেজুর খেয়ে নেবেন, তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!

৩. হার্টের ক্ষমতা বাড়ে : ডায়াটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে “এল ডি এল” বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম আরো সব হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

৪. পেটের রোগের প্রকোপ কমায় : প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই ফলটি খেলে বাওয়েল মুভমেন্টে মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনও ধরনের পেটের রোগই আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ৩টি করে খেজুর খেলে শরীরে অন্দরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ায় মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদ-হজম, কোলাইটিস এবং হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ : খেজুরে প্রচুর মাত্রায় প্রাকৃতির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা একাধিক রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, এই ফলটিতে বেশ কিছু অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজও রযেছে, ফলে নিয়মিত খেজুর খেলে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও অনেকাংশে হ্রাস পায়।

৬. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : খেজুরে উপস্থিত খনিজ এবং ভিটামিন হাড়কে এতটাই শক্তপোক্ত করে দেয় যে বয়স্কালে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, এই ফলটিতে উপস্থিত সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৭. ওজন বৃ্দ্ধি পায় : নানা কারণে যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যেতে শুরু করেছে, তারা আজ থেকেই খেজুর খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন। কারণ এই ফলটিতে উপস্থিত ক্যালরি শরীরে ভাঙন রোধ করে ওজন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৮. নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়ায় : খেজুরে উপস্থিত নানাবিধ ভিটামিন এবং খনিজ, বিশেষত পটাশিয়াম নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ার বাড়াতেও এই ফলটি দারুনভাবে সাহায্য করে। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন বাচ্চাদের প্রতিদিন কেন খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৯. অ্যানিমিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখে: শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলেই মূলত এই ধরনের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই তো শরীরে যাতে এই খনিজটির ঘাটতি কোনো সময় দেখা না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে খেজুর দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে? এই ছোট্ট ফলটি আয়রণ সমৃদ্ধি। তাই তো অ্যানিমিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

১০. অ্যালার্জির প্রকোপ কমায় : ২০০২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে দাবি করা হয়েছিল খেজুরে উপস্থিত সালফার কম্পাউন্ড অ্যালার্জির মতো রোগ থেকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো যারা সারা বছরই এই রোগে ভুগে থাকেন, তাদের রোজের ডায়েটে এই ফলটির অন্তর্ভুক্তি মাস্ট!

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

9 + 18 =