‘আমরা ঘরে বসে দুজনের মোবাইল দেখছিলাম। পিছন দিক থেকে তুষার এসে বাবুর ঘাড় বরাবর আঘাত করলে বাবু মাটিতে পড়ে যায়। পরে বাবুর গলায় বিদ্যুতের প্লাস্টিকের তার দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ঘরের মেঝেতেই মাটি চাপা দেই।’ অপহরণের ২ মাস ১৭ দিন পর ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদি হাসান বাবুর গলিত লাশ মাটি খুঁড়ে উদ্ধারের সময় এসব কথা বলছিলেন অপহরণকারী আল আমিন।
বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার কেশরগঞ্জ বাজারের তুষারের বড় ভাইয়ের একটি গুদাম ঘরের মেঝে থেকে মাটি খুঁড়ে বাবুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মেহেদী হাসান বাবু এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পলাশীহাটা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফুলবাড়ীয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের প্রবাসী শাহজাহান মিয়ার পুত্র মেহেদী হাসান বাবু রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় অপহৃতের মা মিনারা বেগম বাদি হয়ে ১২ মার্চ মামলা করলে পাশের গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে তুষারকে আটক করে থানা পুলিশ। সে সময় তুষার স্বীকার করে বাবু তার সাথে ঢাকা গিয়েছিল। এর সে আর কিছুই জানে না। পুলিশ তার কাছ থেকে তথ্য উদ্ধার করতে না পেরে তুষারকে আদালতে পাঠায়। তুষার আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে। থানা পুলিশ রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হলে মামলাটি চলে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির হাতে। ডিবির এসআই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিমল পুনরায় তুষারকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। এর সাথে আল আমিন নামের আরেকজন জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করে। পরে পুলিশ আল আমিনকে গ্রেফতারের পর মাটিচাপা দেয়া বাবুর লাশ উদ্ধার করে। ময়মনসিংহেরর জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম জানান, আমাদের কাছে তথ্য আসে তুষার ও আল আমিন পরিকল্পিতভাবে বাবুকে হত্যা করে তুষারের বড় ভাইয়ের কেশরগঞ্জ বাজারের একটি গুদাম ঘরের মেঝেতে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে। অপহরণকারীরা পুলিশকে ব্যাপক মিসগাইড করে তারা নিজেকে আড়াল করতে বাবুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে অন্য একটি সিম ঢুকিয়ে ভয়েস নকল করে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির নাটক সাজায়। তিনি আরো বলেন, মামলা তদন্তে পুলিশের ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার আমাদের কাছে ক্লু আসে তুষারই হত্যাকারী। পরে তুষার ও আল আমিনের দেখানো জায়গার মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।