নবীগঞ্জে মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন

0
1177

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

নবীগঞ্জের পল্লীতে মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেয়ায় লম্পট প্রেমিক ও তার লোকজন কাউছার মিয়া (১৭)কে নির্মমভাবে খুন করেছে বলে দাবী পুলিশের। পুলিশ সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের পানিউমদা গ্রামের মোঃ হায়দর আলীর ছেলে মোঃ কাউছার মিয়ার বোনের সাথে পানিউমদা চাতল গ্রামের শফি মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২৩) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে।

এতে কাউছার মিয়া বাধা দিলে সিরাজুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সে তার প্রেমের পথের কাটা হিসেবে কাউছার মিয়াকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক সে তার সঙ্গী পানিউমদা চাতল গ্রামের নসরত আলীর ছেলে নূরুজ আলী (৩০) ও পানিউমদা গ্রামের কাছম আলীর ছেলে দুরুদ আলীকে (২৬) নিয়ে গত ২৯ মে মধ্যরাতে পানিউমদা সাকিনস্থ আব্দুল্লাহজাই নামক নির্জন স্থানে কাউছার মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু গলা কেটেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তারা কাউছারের দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে যাতে তাকে আর কেউ চিনতে না পারে। গত শনিবার সন্ধ্যায় পানিউমদা ইউনিয়নের টঙ্গীটিলার পূর্ব-দক্ষিণে আব্দুল্লাহজাই গোল নামক স্থানে জনৈক রুনু মিয়ার হালিচারা জমিতে মৃতদেহ পড়ে আছে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার বাহুবল সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ নবীগঞ্জ থানা সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ ময়না তদন্তের জন্য পরবর্তী কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। মৃতের আত্মীয়-স্বজন মৃতের শরীরের পরিহিত শার্ট ও স্যান্ডেল দেখে মৃতদেহ সনাক্ত করে। গত ২৯ মে রাত অনুমান সাড়ে ৮টা থেকে কাউছার মিয়ার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করতে থাকে। এদিকে নিহত মোঃ কাউছার মিয়ার পিতা মোঃ হায়দর আলী এজাহারনামীয় ৩জন ও অজ্ঞাতনামা আরো অনেকের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে নবীগঞ্জ থানার মামলা নং-৩ রুজু করা হয়।মামলার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের দিনেই আসামী দুরুদ আলীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামী দুরুদ হত্যাকান্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ করলে সে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। দুরুদ আলীর স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ ডিএসবি স্থানীয় পত্রিকায় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করে। তাতে উল্লেখ করা হয়- কাউছার মিয়ার বোন মাসুদা বেগম (২২) এর সাথে সিরাজুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উক্ত প্রেমজনিত বিরোধের কারণে সিরাজুল ইসলাম ও নূরুজ আলীসহ গ্রেফতারকৃত আসামী দুরুদ আলী গত ২৯ মে মধ্যরাতে পানিউমদা সাকিনস্থ আব্দুল্লাহজাই নামক নির্জন স্থানে কাউছার মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। আসামী দুরুদ আলী বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × three =