কামাল পারভেজ, চট্টগ্রামঃ-মাদক দ্রব্য হলো একটি রাসায়নিক দ্রব্য যা গ্রহণে মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়ে এবং যা আসক্তি সৃষ্টি করে। মাদক দ্রব্যে বেদনানাশক কর্মের সাথে যুক্ত থাকে তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক, আচ্ছন্নতা রক্তচাপ পরিবর্তন ইত্যাদি । মাদক দ্রব্য গ্রহণ করলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে এবং দ্রব্যের উপর নির্ভরশীলতা সৃষ্টির পাশাপাশি দ্রব্যটি গ্রহণের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকে ব্যক্তির এই অবস্থাকে বলে মাদকাসক্তি এবং যে গ্রহণ করে তাকে বলে মাদকাসক্ত।
মাদকাসক্তির বড় কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা, বন্ধুদের চাপে পড়ে অনেকে মাদক নিয়ে থাকে, বাবা-মায়ের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেকে মাদক গ্রহণ করে থাকে, অনেকের মাঝে মাদক নিয়ে স্মার্ট হওয়ার প্রবণতা থাকে যা তাকে ঠেলে দেয় মাদকের জগতে, মানসিক সমস্যা যেমন: হতাশা, একাকীত্ববোধ, বিষণ্ণতার কারণে এসব থেকে রেহাই পেতে মাদককে বেছে নেয় , এন্টি সোশ্যাল পারসোনালাটি, শৈশবে বিকাশে সমস্যা থাকলেও অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে , ভালোবাসার সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে মাদক গ্রহণ করে , পারিবারিক কারণেও আপনার সন্তান মাদকে জড়িয়ে পড়ে।
মাদক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সবাই মিলে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে।দেশজুড়ে মাদক ব্যবসায় ব্যবহার করা হচ্ছে চোখ ধাঁধানো দামি গাড়ি ও সুন্দরী নারী। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদেরকে ফাঁকি দিতেই ব্যবসার ধরন পাল্টে ফেলা হচ্ছে। নতুন নতুন উপায় ও পদ্ধতিও গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করছে খোদ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কতিপয় কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি দলের ছোট-বড় বাহিনী। মাঝে-মধ্যে মাদকের বড় চালান ধরা পড়লেও আড়ালে থেকে যাচ্ছে মাদক সম্রাট-সম্রাজ্ঞীরা। অভিযানও চালানো হয় লোক দেখানো। হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ ও ইয়াবার অবৈধ ব্যবসা করছেন শীর্ষ পর্যায়ের এমন ব্যবসায়ীর সংখ্যা সারা দেশজুড়ে সহস্রাধিক।
সমাজের শত্রু এ সব মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে দিনরাত কাজ করছে। অভিযানে গুলি বিনিময়কালে প্রায় প্রতিদিনই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা নিহত হচ্ছে। র্যাব-পুলিশের অভিযানে গুলি বিনিময়কালে গত ২ জুন শনিবার পর্যন্ত মারা গেছে ১৩৪ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। এর মধ্যে র্যাবের অভিযানে নিহত হয় ৩৩ জন, পুলিশের অভিযানে ১০১ জন নিহত হয়েছে। গত ৪ মে র্যাব মাদক নির্মূল অভিযান শুরু করেছে। অন্যদিকে পুলিশের অভিযান শুরু হয় পয়লা রজমান থেকে।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে, সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ৩৬০০ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৬৪ জেলা নিয়ন্ত্রণ করছেন।এই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ছাড়া ও হাজার হাজার ছোটখাট অনেক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে যাদের বেশিরভাগ তালিকা ভুক্ত নয়।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, নিজস্ব তথ্য প্রমাণ, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মতামত এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় মাদক ব্যবসায়ীদের এ তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে।কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বেশীর ভাগই আইনের আওতায় আসেনি এখনও , অনেকেই গোপনে এবং ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলার বাকলিয়া থানার মিয়া খান নগর,আবু জাফর রোড, বেল্লাগাজ়ীর বাড়ী এই এলাকা গুলোর মাদক ব্যবসায়ীরা এখনও সক্রিয়।এই সব মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে কাদের পিতা-নূর আলম, এরশাদ পিতা-মজিদ,সাং-তজিম আলীর বাড়ী, আজগর পিতা ভোলা মিয়া প্রকাশ গুল্লাইয়া ( পুলিশের সোর্স), হাসান পিতা হাবিবুল্লাহ, দাড়ি খোরশেদ, আনিস পিতা ইয়াকুব, বাদশা পিতা-মৃত ইসলাম সাং- তক্তার পোল, করিম পিতা-মৃত ইসলাম, সাং- তক্তার পোল, আদু, পিতা-মৃত ইসলাম, সাং তক্তার পোল, বাপ্পী পিতা – অজ্ঞাত, পারভীন, স্বামী- মৃত জামাল, মানিক খান পিতা-মহসিন খান সাং মিয়া খান সওদাগরের বাড়ী, জামাল পিতা- মৃত আমিন শরীফ।
কোতোয়ালী ব্রিক ফিল্ড রোড পাথার ঘাটা, সিএন্ডবি কলোনীতে ঝুনু আক্তার স্বামী- আবদুর রহিম, পুতুলি বেগম স্বামী- শাহ আলম সিন্টু। নূর নাহার-স্বামী তাজ মোহাম্ম, পাখি বেগম স্বামী- মোজাম্মেল হক, টিংকু দাশ ( সাপ্লাইয়ার ও পুলিশের সোর্স) মুন্নি স্বামী খোরশেদ, আবুল কাশেম পিতা জেবল হোসেন, নূর জাহান স্বামী-আবদুল করিম, মোঃ রাজা পিতা আবদুল করিম, শামীম-পুলিশের সোর্স পিতা আবদুল করিম, রাশেদা বেগম প্রকাশ সাবেরে মা স্বামী- জেবল হোসেন, আলমগীর প্রকাশ ফকির, আকবার শাহ থানার বিশ্ব কলোনী এলাকার মোঃ শিহাব পিতা- মোঃ আবুল হাশেম, সাহাব উদ্দিন সাহেবের বাড়ী, ২৭/৮৮, এম ব্লক গ্রামের বাড়ী মহব্বত খান বাড়ী, বাউরিয়া, নাজিরহাট সন্দ্বীপ উপজেলা।চট্টগ্রাম সীতাকুন্ডের জঙ্গল ছলিমপুর ছিন্নমূল এলাকার মোঃ সাইফুল, রহমত উল্লাহ, রমজান , বাদশা, মোঃ রানা। বাংলা বাজারের পানি জসিম, রুবেল, টেক্সটাইল আল আমীন মসজিদের ভাঙ্গা সাইফুল, মাইকেল শরীফ, অন্তর, মোজাম্মেল হোসেন নওশাদ। বায়েজিদ এলাকার বোমা রনি, হাটহাজারী থানার ফতেয়াবাদ সন্দ্বীপ কলোনীর মাদরাসার উত্তরের একটি সেমি পাকা ঘরে ইয়াবার ব্যবসা চলে,এখানে ফতেয়াবাদের বি এন পি নেতা আরজু ভাই মুন্না,বি এন পি নেতা ফজুর গ্রুপের বাবু ও তুহিন, বি এন পি ছাত্র দলের সভাপতি খোরশেদের ছোট ভাই জুয়েল, পারভেজ, মন্জু, সোহেল সহ আর অনেকে ইয়াবার ব্যবসা করে।সন্দ্বীপ কলোনীর দুই বন্ধু ফয়সাল ও মোর্শেদ ইয়াবা নিয়ে দুবাইতে গেলে মোর্শেদ ইয়াবা সহ সেখানকার পুলিশের হাতে ১২ মে গ্রেফতার হয় এবং ফয়সাল কৌশলে পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে আসে।এইসব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে অনেকেই বিত্তশালী হয়েছে।