কক্সবাজারের টেকনাফে একটি পাহাড়ি ছড়ায় দুই ইয়াবা কারবারির লাশ পাওয়া গেছে। নিহত দুজনের মধ্যে একজন স্থানীয় এবং অপরজন রোহিঙ্গা। পুলিশের দাবি, নিহত দুজনই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল। ইয়াবা কারবার নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ কোনো গোষ্ঠী তাদের খুন করে থাকতে পারে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে লাশ দুটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত শামসুল হুদা (২৮) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা কারবারি। আর নিহত রোহিঙ্গা যুবক রহিম উল্লাহ (২৩) লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের বি-ব্লকের বাসিন্দা। গতকাল দুপুর ২টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা পুরনো রোহিঙ্গা শিবিরের পার্শ্ববর্তী একটি পাহাড়ি ছড়া থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। শামসুল হুদার বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারের সাতটি মামলা রয়েছে। তাঁর বড় ভাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরুল হুদাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। ইয়াবা পাচারের ১৮টি মামলা নিয়ে নুরুল হুদা পলাতক। নিহত রোহিঙ্গা যুবক রহিম উল্লাহ ইয়াবা কারবারে শামসুল হুদার অন্যতম সহযোগী ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, দুই লাখ ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি চালানের অর্থ লেনদেনের বিরোধ নিয়ে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহত শামসুল হুদার পরিবারের অভিযোগ, এলাকার নুর আলম ডাকাত, হারুনসহ একটি শক্তিশালী ইয়াবা কারবারিচক্র মিলে ভাড়াটে খুনি দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা বস্তি পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল মতলব জানান, গতকাল সকালে কাঠুরিয়ারা পাহাড়ে যাওয়ার সময় ছড়ায় লাশ ভাসতে দেখে খবর দিলে লোকজন গিয়ে তাঁদের শনাক্ত করে। পরে পুলিশকে জানানো হলে তারা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান এইচ কে আনোয়ার বলেন, রোহিঙ্গা শিবির ও স্থানীয় অপরাধীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বিশেষ কিলিং স্কোয়াডের মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ একের পর এক অপকর্মে সীমান্ত জনপদ নিরাপত্তাহীন হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন। টেকনাফ থানার ওসি রণজিত কুমার বড়ুয়া জানান, ধারণা করা হচ্ছে ইয়াবাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশ প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করতে তদন্ত চালাচ্ছে।এর আগে বুধবার নাফ নদ থেকে রশিদুল্লাহ নামের আরেকজন রোহিঙ্গার গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তিনি টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা। একই শিবিরের রহিমুল্লাহ নামের আরো একজন রোহিঙ্গার খোঁজ মিলছে না। টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম আতিকুল্লাহ জানান, এ দুই রোহিঙ্গা এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ডাকাতির পাঁচ-ছয়টি মামলা রয়েছে।