তৈরী পোশাকের মূল্য বৃদ্ধির করতে ক্রেতাদের প্রতি বাণিজ্যম ন্ত্রীর আহবান

0
549

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ তৈরী পোশাক খাতকে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করে গড়ে তুলেছে। শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে তৈরী পোশাক কারখানাগুলো আধুনিক করা হয়েছে। বিশ^মানের কারখানায় বাংলাদেশে পোশাক তৈরী হচ্ছে। কিন্তু তৈরী পোশাক ক্রেতাগণ মূল্য বৃদ্ধি করছে না। তৈরী পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ও কারখানার মালিকগণ সম্মিলিত ভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশে আর কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। ইতোমধ্যে দেশেরে তৈরী পোশাক কারখানাগুলো প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে, অত্যাধুনিক গ্রীণ ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে।

কারখানাগুলো তদারকি করার জন্য এ্যাকর্ড এবং এ্যালায়েন্সের এখন আর কোন প্রয়োজন নেই। তাদেরকে ৫ বছরের জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। গত ৭ মে তাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার জন্য ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর কোন সময় বৃদ্ধি করা হবে না। এখন রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) বা সংস্কার সমন্ময়ক সেল তৈরী পোশাক কারখানাগুলো কাঠামো,অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্ব পালন করবে। বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৭ জুলাই) ঢাকায় হোটেল পূর্বাণীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অফ রিমেডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) শেয়ারিং প্রোগ্রেস এন্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত সাসটেইনিবিলিটি কম্প্যাক্টের ৪র্থ পর্যালোচনা সভায় এ্যাকর্ড এবং এ্যালায়েন্সের কাজের মেয়ার বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আমরা জানিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ নিজেই এ কাজ করতে এখন সক্ষম। আরসিসিকে দক্ষ জনবল দিয়ে সাজানো হয়েছে। তৈরী পোশাক কারখানাগুলোর কাঠামো,অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়িরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন(আইএলও) সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হচ্ছে, শুধু তাই নয় বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হচ্ছে। বিশ^ ব্যাংকের হিসাবে তিনটি সেক্টরের একসঙ্গে যোগ্যতা অর্জন করেই উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হবার প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে চুড়ান্ত ভাবে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবে। বাংলাদেশ সবসময় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির জন্য শিশু শ্রমের অভিযোগ আনা হয়েছিল, রপ্তানিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল, কারো দয়ায় নয়, এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই বাংলাদেশ আজ এ অবস্থানে এসেছে। তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে। বাংলাদেশ এখন স্যাটেলাইট ও এ্যাটোমিক ক্লাবের সদস্য। বড় বড় প্রকল্প এখন বাংলাদেশ নিজ অর্থে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যারা একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি ও বিশে^র দরিদ্র দেশের মডেল বলতো, আজ তারাই বলছে বাংলাদেশের উন্নয়ন মিরাক্কেল।  অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক,এমপি, সচিব আফরোজা খানম, এফবিসিআিই-এর প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টেফেন্স ব্লোম বার্নিকাট, ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, এ্যাকোর্ড, এ্যালায়েন্স, বিকেএমইএ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen + 2 =