বুলবুলের হয়ে ক্ষমা চাইলেন মিনু

0
590

মোঃ আখতার রহমান,ব্যুরো প্রধান,রাজশাহীঃ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এক নির্বাচনী টকশোর দৃশ্যধারণ অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনাকে নিয়ে কটুক্তি ও ব্যাপক মিথ্যাচার করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে অনুষ্ঠান শেষে বিএনপি নেতাকর্মীদের সবার হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নগরীর মুন লাইট গার্ডেনে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যালেন নিউজ টোয়েন্টিফোর নির্বাচনী টকশোর দৃশধারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উপস্থাপক সামিয়া রহমানের উপস্থানপনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনার সন্তান, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী, সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, গণসংহতি আন্দোলনের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম।

টকশো অনুষ্ঠান চলাকালে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বিভিন্ন ধরনের মিথ্যাচার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বুলবুল বলেন, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনুসহ কয়েকজনকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে থানায় আটকে রেখেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ সময় তাৎক্ষণকিভাবে থানায় ফোন দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার ওসির কাছ থেকে খবরা নিয়ে সবাইকে জানান, ‘পুলিশ বিএনপির মিনুসহ কাউকে আটক বা ঘেরাও করে রাখেনি।’ এ সময় সাধারণ জনগণ বুলবুলের মিথ্যাচারে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর কিছুক্ষণ পর পরিস্থিত শান্ত হয়। উপস্থাপক দর্শক সারিতে প্রশ্ন নিতে শুাং করলে নগরবাসীর অনেকে বুলবুলকে রাজশাহীর উন্নয়নে ব্যর্থ একজন মেয়র হিসেবে উল্লেখ করেন। দর্শকদের প্রশ্নের উত্তরে বুলবুল তার নামে বিভিন্ন মামলার অজুহাত দেখিয়ে বলেন, তাঁর নামে বিভিন্ন মামলার হওয়ার কারণে বেশি দিন দায়িত্ব পালন করতে পারেন নাই।
এরপর প্রশ্ন করতে ওঠে পুঠিয়া যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ভুট্টু বলেন, বুলবুলের নামে মামলা ছিল তাই তিনি উন্নয়ন করতে পারেননি, বুলবুলের নামে বদনাম দেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর নামেও অনেক অভিযোগ ও বদনাম ছিল তো।’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন কটুক্তির কারণে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন সাধারণ জনতা। এরপর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে আসেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি দর্শক সারির সামনে গিয়ে বসেন। আবারো শুরু হয় টকশো।
টকশোতে কথা বলতে গিয়ে এবার জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনাকে নিয়ে কটুক্তি করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বুলবুল বলেন, ‘লিটনের বাপ।’ জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনাকে এভাবে অসম্মানজনকভাবে ডাকা ও কটুক্তি করার প্রতিবাদ জানান উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা ও সাধারণ জনতা। এ সময় দর্শক সারির সামনে বসে থাকা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু, মেয়রপ্রার্থী বুলবুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বল, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদের সন্তান লিটন। জাতীয় চার নেতা আমাদের সবার নেতা।’
মিনু পরপর তিনবার এই কথা বলার পরও বুলবুল তাচ্ছিলের অঙ্গভঙ্গিতে বলেন, ‘হ্যা। বলছি তো, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদের সন্তানই তো।’ এরপর টকশো চলাকালে বিএনপি নেতা বুলবুল দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি কাউকে ছোট করে কথা বলতে চাইনি। মুখ থেকে কথাটি বেরিয়ে গেছে।’
টকশোতে কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘তারা গায়ে পড়ে আমাদের সাথে লাগছে। উল্টাপাল্টা কথা বলছে। এতক্ষণ কিছুই বলিনি। বুলবুলের বাবা রাজাকার ছিলেন । তিনি পুঠিয়ার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।’ এ সময় উপস্থিত সবাই একস্বরে বলে ওঠেন, বুলবুল রাজাকারের সন্তান। এদিকে টকশোর দৃশ্যধারণ অনুষ্ঠান শেষে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা, দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতার উদ্দেশে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এ ঘটনাটি এখানে যেন শেষ হয়ে যায়। আমরা নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে চাই। এ সময় বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ছোট ভাইয়েরা উত্তেজিত হয়েছে। আর এ সময় সাধারণ জনতা কটুক্তিকারীদের ক্ষমা প্রার্থনা জানানোর দাবি তুললে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘সবার হয়ে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − ten =