এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকা

0
589

চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০.৪১ শতাংশ। জুন শেষে ৫৭টি ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল আট লাখ ৫৮ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। রাইটঅফ বা অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ যোগ করা হলে খেলাপি ঋণ দাঁড়াবে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য থেকে দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। গত বছরের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০.১৩ শতাংশ। ওই সময় বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল সাত লাখ ৩১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া গত মার্চের তুলনায় খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৫১ কোটি টাকা। গত মার্চ মাস শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আগের প্রান্তিকের তুলনায় কিছুটা কমেছে। জুন শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৮.২৪ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল এক লাখ ৫১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। মার্চ শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৮৩৩ কোটি টাকা কমেছে। জুন শেষে বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২৪১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১.৬৮ শতাংশ। মার্চ শেষে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) খেলাপি ঋণ ছিল পাঁচ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। তিন মাসে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে ১৮৫ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমলেও বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর। জুন শেষে ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের বিতরণ করা ছয় লাখ ৪৮ হাজার ৫০১ কোটি টাকার মধ্যে ৩৮ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকাই খেলাপিতে পরিণত হয়, যা মোট ঋণের ৬.০১ শতাংশ। গত মার্চে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। দেশে পরিচালিত ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৬.৬৬ শতাংশ। জুন শেষে তাদের বিতরণ করা ৩৪ হাজার ৮৪ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল দুই হাজার ২৭১ কোটি টাকা। মার্চ শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। তিন মাসে এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮৩ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ তিনটি শ্রেণিতে বিভাজন করা হয়। একটি নিম্নমান, সন্দেহজনক এবং মন্দ বা ক্ষতিজনক মান। মন্দ বা ক্ষতিজনক মানের ঋণ আদায় হবে না বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, মোট খেলাপি ঋণের ৭৩ হাজার কোটি টাকাই মন্দ ঋণ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve + five =