চাটখিল নোয়াখালী থেকে নজির আহমেদঃ পুলিশি সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছে দিতে নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানা পুলিশ জনবহুল স্থান গুলোতে ভ্রাম্যমান থানা কার্যক্রম চালু করেছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির অপরাধ বিরোধী গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে এবং জেলা পুলিশ সুপারের মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলের নির্দেশনায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জেগেছে। জানা গেছে পুলিশকে জনবান্ধব করতে নির্যাতিত লোকজন হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং দালালদের খপ্পরে না পড়ে সরাসরি থানা ওসির নিকট তাদের অভিযোগ জানানোর এবং তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়ার জন্য ভ্রাম্যমান থানার কার্যক্রম আরম্ভ করেছে থানা পুলিশ। ভ্রাম্যমান থানায় জিডি করা, মামলা দায়ের, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রদান, আইনি পরামর্শ সহ সকল আইনি সুযোগÑসুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
এতে কোনো প্রকার হয়রানি বা অর্থ ব্যয় হচ্ছে না। এলাকার অস্ত্রবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী সম্পর্কে লোকজন গোপনো, সরাসরি থানার ওসিকে তথ্য দিচ্ছে। তথ্যদাতাদের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপনীয় রাখা হচ্ছে। এতে করে গত ২/৩ মাসে চাটখিলের আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ব, মাদকের জমজমাট ব্যবসা, পুলিশের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ সহ আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে পুলিশের সর্বোচ্চ পুরষ্কার পিপিএম প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাউল হককে অফিসার ইনচার্জ ওসি হিসেবে থানার দায়িত্ব প্রদান করে। তিনি যোগদানের পর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোকজনকে তথ্য প্রদানের জন্য আহবান জানিয়ে যাচ্ছেন। মাদক নির্মূলে থানা পুলিশের কর্মকর্তাদের শপথ করিয়েছেন এবং গণসচেতনতার সৃষ্টি করেছেন। বর্তমানে থানায় জিডি মামলা পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে কোন প্রকার টাকা দিতে হয় না। এ সময়ে নাশকতার মামলায় ৪২ জন মাদক ব্যবসায়ী ৮০ জন এবং মাদকসেবী ৪০ জন, নিয়মিত মামলা ও গ্রেফতারী পরোয়ানার ৬০ জনকে গ্রেফতার এবং বিপুল সংখ্যক মাদক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। থানার ওসি, ডিউটি অফিসার এবং কনষ্টেবল গণ ভ্রাম্যমান থানায় গিয়ে লোকজনের বিভিন্ন অভিযোগ গ্রহণ করছেন, স্পটেই জিডি, মামলা নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। ভ্রাম্যমান থানা বসার আগে এলাকার লোকজনকে তাদের অভিযোগ নিয়ে আসার জন্য মাইকিং করা সহ বিভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে। গত ১ মাসে দশঘরিয়া, বদলকোট, কুলশ্রী ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, সিংবাহুড়া গার্লস একাডেমী, শাহাপুর ইউপি পরিষদ কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান থানা আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো থানা এলাকায় এ কার্যক্রম চলবে। ভ্রাম্যমান থানা কার্যক্রম পরিচালনা করায় পুলিশের সেবা সম্পর্কে জনগণের নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তন এসেছে। মাদকও অনেকটা নির্মূল হয়েছে। অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসীদের দৌরত্ম করেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ ইমাউল হক জানান, পুলিশ সম্পর্কে জনগণের ধারণার পরিবর্তন করতে লোকজন যাতে অবাধে ন্যায্য বিচার পায়, কোনো ধরনের হয়রানি বা প্রতারণার শিকার না হন এবং দালালদের খপ্পরে না পড়েন তার জন্য তিনি ভ্রাম্যমান থানার কার্যক্রম আরম্ভ করছেন এবং অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো জানান, মাদক নির্মুলে পুলিশের অফিসারদের শপথ করানোর পর মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে।