রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব

0
704

বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব। এসব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে দেশটি।

 

মিডল ইস্ট আই’কে উদ্ধৃত করে এতে বলা হয়েছে, ওই সব রোহিঙ্গার কাছে রয়েছে বাংলাদেশী পাসপোর্ট। অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযানে তাদেরকে আটক করে অনির্দিষ্টকাল আটক রাখা হয়েছে সৌদি আরবে। তারা অবৈধ উপায়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করেছেন বলে বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে বেশ কয়েক বছর আগে প্রবেশ করেছে সৌদি আরবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযানে এসব রোহিঙ্গাকে আটক করে সৌদি আরবের জেদ্দা শহরের শুমাইসি বন্দিশিবিরে বন্দি রাখা হয়েছে। তাদের অনেকে মিডল ইস্ট আই’কে বলেছেন, তারা যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা তা প্রমাণ করার জন্য তাদের কাছে মিয়ানমারের পরিচয়পত্র আছে। ওই দেশটি থেকে গত বছর বৌদ্ধ উগ্রপন্থিদের সহায়তায় সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতন চালায়। তার ফলে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারে যে আশ্রয়শিবিরে তারা অবস্থান করছে তা অতিমাত্রায় মানুষে গাদাগাদি। সৌদি আরবে আটক শরণার্থীরা মিডল ইস্ট আই’কে আরো বলেছে, তারা স্বেচ্ছায় সুস্থ মনে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন বলে ঘোষণাপত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে। তা করতে গিয়ে সৌদি আরবের পুলিশ বুকের ওপর ঘুষি মারে। তাদের একজন ওই ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ওই ফরম এরই মধ্যে পূরণ সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশী দূতাবাস এবং সৌদি আরবের অভিবাসন বিষয়ক পুলিশ। এতে রয়েছে শরণার্থীদের আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি। তারপর এসব ডকুমেন্ট সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশী কূটনীতিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মধ্য অক্টোবর থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ জন শরণার্থীকে দেশ থেকে বের করে দেয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন করছে সৌদি আরবের অভিবাসন বিষয়ক পুলিশ। গত মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর করেন। এর কয়েক দিন পরেই এই প্রত্যাবাসন শুরু করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদেরকে তাড়াহুড়ো করে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলোর চাপ আছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন শুরু করার বিষয়ে গত বছর প্রথম মিয়ানমার ও বাংলাদেশ একটি চুক্তিতে আসে। তবে সেই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে। কয়েকদিন আগে উভয় দেশের কর্মকর্তারা এ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন, মধ্য নভেম্বরে ২০০০ শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে এমন উদ্যোগের বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর ইয়াংহি লি। তিনি বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায় এখনও (মিয়ানমারে) নিষ্পেষণের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, সেখানে যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তা গণহত্যা। তবে মিয়ানমার সহিংসতার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার দাবি দীর্ঘ সময় ধরে অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 + seventeen =