জেমস এ কে হামীম: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নকশা অনুমোদন শাখায় চলছে প্রকাশ্যে সীমাহীন দুর্নীতি। আর এই দুর্নীতির সাথে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন রাজউকে নকশা অনুমোদনের জন্য আসা জমির মালিকরা। ৪৫ কার্যদিবসে নকশার সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা থাকলেও ঘুষ না দিলে ফাইল পড়ে থাকছে বছরের পর বছর। এ অবস্থার উত্তোরণের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বার বার তাগিদ দিলেও বদলাচ্ছে না রাজউক।
নকশা অনুমোদন শাখায় সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার অসংখ্য বাড়ির মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে সীমাহীন দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজউকের অথারাইজড অফিসার মো: আশরাফুল এর প্রত্যক্ষ মদদেই নকশা অনুমোদন শাখায় চলছে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের ঘুষ বাণিজ্য। এই ব্যক্তি ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট বা নগর পরিকল্পনাবিদ না হয়েও রাজউকের বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদনের প্রধান পদটি দখল করে আছেন। অথচ নকশা, বিল্ডিং কোড, ফার, স্কেল, সেকশন, এলিভেশন সাইট, প্রস্তাবিত ভবনটি কত তলা, কতটুকু জমিতে ভবন পাশ করা হচ্ছে এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা না নিয়েই তিনি স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যদিয়ে ভবন নির্মাণের নকশার অনুমোদন দিচ্ছেন। ফলে অনুমোদন দেয়া নকশায় নির্মিত ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে সংশিল্টষ্টরা আশঙ্কা করেছেন। রাজউকে জমজমাট ঘুষ বাণিজ্য চলছে বলে তাদের অভিযোগ। রাজধানীর উত্তরা দক্ষিন খাঁন ফায়দাবাদ এর চৌয়ারটেক এলাকায় ৩৪ হাজার ভোল্ট এর বিদুৎ এর তার ভিতরে রেখে বেআইনিভাবে নির্মিত হচ্ছে বাড়ী র্নিমানঅভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজধানীর উত্তরার পাঁচ কাঠা জমির ওপর বহুতল বাড়ি তৈরি করছেন মো: জামাল উদ্দীন। তার এলাকায় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন রাজউকের অথারাইজ অফিসার। টাকার কাছে তার সব দরজা খোলা। দক্ষিন খান এলাকার জয়নাল মার্কেট, ফায়দাবাদ প্রেম বাগান সহ তার কাছে নোটিশই সীমা বদ্ব প্রক্রিয়া। রাজউকের নিয়মানুযায়ী, পাঁচ কাঠা জমিতে বাড়ি করতে হলে শতকরা ৪০ ভাগ জমি চারপাশ থেকে ছাড়তে হয়। অথচ তিনি ভবন নির্মাণের সময় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা রাখার বিধানও অনুসরণ করেননি। তাছারা তাঁর নির্মানাধীন বাড়ীর ভেতরে রয়েছে ৩৪০০০ ভোল্টের বিদুৎ এর তার। যা সর্ম্পুুন ঝুকিপূর্ন। এতে করে হারাতে পারে অসংখ্য মানুষের প্রাণ। রাজউকের অথরাইজ অফিসার আশরাফুলকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এ কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে বিপর্যয়ের শঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসি। নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে ইতোমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও রাজউকে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়েরের পর ভবন নির্মাণকারীরা অভিযোগ তুলে নিতে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বলেন, বাড়ি বানাতে গিয়ে জমি ছাড়া তো দূরে থাক, উল্টো তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেছে বাড়ি নির্মাণকারীরা। ছাদের ঢালাইয়ের রড তার ভবনের সঙ্গে এসে মিশেছে। বার বার প্রতিবাদ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বাড়ি নির্মাণকারীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। আইনের কোনো তোয়াক্কা করছে না তারা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। উপরন্তু রাতদিন নির্মাণ কাজ চলছে। অভিযোগ তুলে নিতে প্রভাবশালীরা তাকে ও তার পরিবারকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক মো: জামাল উদ্দীন বলেন, স্থানীয় সালিশে ছাদের অতিরিক্ত বিদুৎ এর তার বের করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অভিযোগ এসেছে, এলাকার অথরাইজ অফিসারদের মাধ্যমে নির্ধারিত ঘুষের টাকার বিনিময়েই এ কাজ হয়েছে যার ফলে এমন একটি ঝুকিপুর্ন বাড়ী তৈরী করেন জামাল। এ ব্যাপারে আশরাফুল এর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ টা দেখছি, আমার এখন খেয়াল নেই।