বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে এটা সম্ভব নয়

0
437

বিদ্যমান আইনে বাংলাদেশের কোনো আদালতের নির্দেশে যুক্তরাজ্যের কোনো ব্যাংক হিসাব জব্দ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

ঢাকার একটি আদালত গত বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নামে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি ব্যাংকে থাকা তিনটি হিসাব জব্দের নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, আদেশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে বিষয়টি তার হাইকমিশনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারকে জানাবে। এ ছাড়া ইন্টারপোলের মাধ্যমেও যোগাযোগের সুযোগ রয়েছে। তবে এভাবে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কোনো সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে এটা সম্ভব নয়। এখন নতুন কোনো আয়োজনে যদি সরকার যায় তাহলে সেটা নতুন কিছু হবে। শুধু ক্রিমিনাল মামলায় ডিফাইন করা আছে, সেকশন ১৮৮-এ বাংলাদেশে যেটি অপরাধ হিসেবে ধরা হয়, সেটা যদি দেশের বাইরেও কেউ করেন তাহলে সেটা অপরাধ হিসেবে ধরে বিচার করা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘সেটা তো শুধু ক্রিমিনাল মামলার ক্ষেত্রে। কিন্তু অর্থনৈতিক ডিলিং বা অর্থনৈতিক ক্রাইমের বিষয়ে এটি নয়। এখানে অ্যাকাউন্ট জব্দ করার কথা বলছে। লিগ্যালি যদি ট্রানজেকশন হয় তাহলে ওরা শুনবে কেন? আর ওখানে আনডিসক্লোজড মানি ট্রানজেকশন হতে পারারও সুযোগ নেই।’ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আনআইডেন্টিফাইড মানি ট্রানজেকশন হলে ওরাই সেটা বন্ধ করে দেবে। আসলে বিষয়টি আমাদেরও জানা-বোঝার বিষয় আছে। কোন প্রেক্ষিতে এটা আসছে সেটা দেখতে হবে। আমাদের জানা মতে এমন কোনো আইন নেই বা বিদ্যমান আইনে সুযোগ নেই।’ তবে গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদেশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠানো হবে। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠিয়ে আদেশ কার্যকর করবে।’ তবে বাংলাদেশের আদালত আদেশ দিলেই যুক্তরাজ্য তা শুনবে কি না তা নিয়েই জোর সন্দেহ আছে। ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস (যুক্তরাজ্যের) থেকে বললেই ব্যাংক এগুলো শুনবে না। আদালতের সুনির্দিষ্ট রায় না থাকলে কোনো অ্যাকাউন্ট সম্পর্কেও ওরা বলবে না। শুধু ওদের দেশের ফিন্যানশিয়াল ইউনিট থেকে কিছু বললে ওরা শুনবে। তা ছাড়া ওদের ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী ওরা চলে। সেখানে ওই টাকাগুলো ফেরত আনারও কোনো সুযোগ নেই।’

 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − five =