ব্যয় ১ কোটি ২০ লাখ, আয় মাত্র ১৫ লাখ

0
570

কোনো ব্যবসায় বৈধভাবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো বিনিয়োগ করে যদি ঐ ব্যবসায়ী ফেরত পায় ১৫ লাখ টাকা তাহলে কেমন লাগবে? এমনই ঘটেছে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একটি সিনেমার ক্ষেত্রে। সিনেমার নাম ‘দাগ হৃদয়ে।’ এই সিনেমার ব্যয় ছিল ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আর আয় ১৫ লাখ টাকা। গ ৮ ফেব্রুয়ারি ৩৯ টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় বাপ্পী চৌধুরী, বিদ্যা সিনহা মিম ও আঁচল অভিনীত সিনেমাটি।

নির্মাণের শুরু থেকে মুক্তির আগ পর্যন্ত ‘দাগ হৃদয়ে’ সিনেমার বাজেট দাঁড়ায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো। কিন্তু মুক্তির পর সিনেমা হল থেকে তেমন কোনো টাকাই পাননি বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন প্রযোজক কামাল আহমেদ। তিনি বলেন, মিনিমান অ্যাডভান্সে ৩৯ হলে মুক্তি দিয়ে সবকিছু বাদ দিয়ে ৭ লাখ টাকার মতো হাতে পেয়েছি।

‘দাগ হৃদয়ে’ সিনেমাটি নির্মাণ করেন তারেক শিকদার। ছবির কাহিনী লিখেছেন প্রযোজক কামাল আহমেদ। সংলাপ ও চিত্রনাট্য করেছেন মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান। বাপ্পী, মিম, আঁচল ছাড়াও অভিনয় করেন অরুণা বিশ্বাস, শতাব্দী ওয়াদুদ।

সিনেমা ‘দাগ হৃদয়ে’। সিনেমাটি নির্মাণে প্রযোজক কামাল আহমেদ লগ্নি করেন ১ কোটি ১০ লাখ টাকার মতো। মুক্তির আগে পরিবেশনা, পোস্টার, ব্যানারসহ আরও খরচ হয় ৮ লাখ টাকা। এছাড়া যেসব হলে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয় সেখানে দিতে হয় মেশিন ভাড়া। ডিজিটাল রাইট (ইউটিউব) থেকে পেয়েছি ৬ লাখ টাকার মতো। এছাড়া টেলিভিশন স্বত্ব বিক্রি করে পেয়েছি ৪ লাখ টাকার মতো! দু-একটা স্পন্সর ছিল। ১ কোটি ২০ লাখ টাকার সিনেমায় ২ লাখ টাকার স্পন্সর কোনো টাকাই না! পোস্টার, ব্যানার, মেশিন ভাড়া বাবদ প্রায় পুরো টাকাই চলে যায়। পুরো সপ্তাহ (শুক্রবার থেকে বৃস্পতিবার) যে পরিমাণ সেল হয় সেটা আরও হতাশাজনক। বাধ্য হয়ে সাড়ে চার লাখ টাকায় ছবি বিক্রি করে দেই।

তিনি বলেন, যে পরিমাণ অর্থ পাই সেটা প্রোডাকশন ম্যানেজার ও অন্যান্যদের দিতেই চলে যায়। সবমিলিয়ে কোটি টাকার মতো লোকসান গুনতে হয়েছে। ক্যাশ পেয়েছি ১৪ লাখ টাকার মতো! যেভাবে ছবি মুক্তি দিয়েছিলাম পলিসি ঠিক ছিল না। আমার দুজন ম্যানেজারের কারণে এতো লোকসান হয়েছে। যিনি পরিচালক উনিও জানেন না এখনকার পলিসি।

শুধু উনি নয়, এফডিসির বেশীরভাগ নির্মাতাই আধুনিক পলিসি সম্পর্কে ধারণা কম। শুধু আমি নই। কোনো প্রযোজকই তেমনভাবে টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। আমার ছবি মুক্তির আগে একজন নামী প্রযোজক তার ছবি রিলিজ করে টাকা তো পায়নি, উল্টো ৩ লাখ টাকা দেনা হয়েছে। গত ৫ থেকে ৭ বছর ধরে একই অবস্থা চলে আসছে। আমি এর আগে ৫-৭ টি ছবির সহ-প্রযোজক। কিন্তু ‘দাগ হৃদয়ে’ আমার একক প্রযোজিত ছবি। সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া চলচ্চিত্রে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়। ই-টিকেট, সেন্ট্রাল সার্ভার সবকিছুই দরকার। যেখানে চলচ্চিত্রের সকলে এবং সরকারি সমন্বয় লাগবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 + 19 =