ডিপ্রেশন বা একাকিত্ব থেকেই চাপ পড়ে হৃদয়ে

0
905

বর্তমান সময়ে আমাদের জীবন যাপনের মান অনেকটাই উন্নত হয়েছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি আপনজনদের কাছ থেকে। জীবনে আপনজনদের গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমাদের ভালো সময়ে তারা যেমন পাশে থাকেন, তেমন প্রয়োজন দুঃসময়েও।

আমাদের পুষে রাখা রাগ, দুঃখ, অভিমান থেকে জন্ম নিচ্ছে হতাশা। আর সেই হতাশা এখন এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যা অজান্তেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ আমরা মন খুলে কারও সঙ্গে মনের কথা বলতে পারি না।

আমাদের পরিজনেরা আমাদের কাজের খোঁজ নেন, শরীরের খোঁজও নেন, কিন্তু মনের খোঁজ রাখেন না। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যে একাকিত্বের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। তারা ধরেই নেন যখন যা খুশি হয়ে যেতে পারে। কারণ তাদের এই মনের দিকটি বুঝে কথা বলেন না কেউই।

আপনার কোনো কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলে যদি মনে হয় তিনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন বা নিজেকে ভীষণ একা মনে করছেন তবে যতটা সম্ভব দ্রুত তার মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। এই ডিপ্রেশন বা একাকিত্ব থেকেই চাপ পড়ে হৃদয়ে। যা মৃত্যুর অনিবার্য কারণ হয়ে উঠতে পারে!

একাকিত্ব হতে পারে জটিল স্নায়ুর অসুখও। কারণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে ঘুম কম হওয়া, পরিমিত খাবার না খাওয়া, চা বেশি খাওয়া, অত্যাধিক সিগারেট খাওয়া চাপ ফেলে স্নায়ুতন্ত্রে। ফলে নার্ভাস ব্রেক ডাউন বা নিজের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কী করছে, কেন করছে তার কোনো সঠিক ব্যখ্যা থাকে না।

মানসিক অসুস্থতার প্রথম মাপকাঠি হলো একাকিত্ব। ছুটির দিনে স্বামী-স্ত্রী বাড়ির বাইরে ডিনারে না গিয়ে ঘরে বসে ভিডিও গেম খেললেও একাকিত্ব বাড়ে। যার ফলে অজান্তেই পজিটিভিটি, শারীরিক ক্ষমতা সবটাই কমতে থাকে। কমে যৌন চাহিদাও। যেখান থেকে অশান্তির সূত্রপাত। পরিণতি গিয়ে দাঁড়াতে পারে ডিভোর্সে।

টাইপ১ ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, উচ্চরক্তচাপ সহ একাধিক শারীরিক ব্যাধির সূত্রপাত হয় অ্যাংক্সাইটি বা মানসিক রোগ থেকেই। তাই একাকিত্ব অনুভব করলে তা দূর করতে সচেষ্ট হন। আমাদের এইসব মনের রোগের জন্য দায়ী অনেকটা নিজেরাই। সবার থেকে আলাদা হয়ে না থেকে মন খুলে মিশুন। দিনশেষে হাসিখুশি থাকাটাই আসল। মন ভালো থাকলে বাকিসব কাজ নিজে থেকেই ভালো হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

14 − 13 =