মৎস্য অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক আলিমুজ্জামানের দুর্নীতি-অনিয়মের শ্বেতপত্র

0
1182

স্টাফ রিপোর্টার:
মৎস্য অধিদপ্তররের উধ্বর্তন কর্মকতারা কেউ কারোর চাইতে অনিয়ম-দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই। একজনের দুর্নীতি প্রকাশ হতে না হতেই আরেকজনের দুর্নীতির খবর সামনে এসে হাজির। ভুয়া প্রকল্প সাজিয়ে বা প্রকল্পের না করেই শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের পরিচালক মো: আলিমুজ্জামন চৌধুরী। দুর্নীতির দায়ে একাধিক বার বহিস্কার হওয়া এই কর্মকর্তা এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। সব পক্ষকে ম্যানেজ করেই চলছে এই কর্মকর্তার দুর্নীতির পাগলা ঘোড়া। একারনে নাকি দুর্নীতি দমন কমিশনও তার কিছই করতে পারে না বলে জানায় সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র। বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির ঘুষ গ্রহনের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এই কারনে মৎস্য অধিদপ্তরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।


সুত্র জানায়, চলতি অর্থ বছরে পুনঃখনন কাজের ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ২০ কোটি টাকা লুটপাটের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে এবং পানি সেচ, গাছ লাগানো, পোনা, প্রদর্শনী ইত্যাদি কাজের থেকে অন্তত ৫০ কোটি টাকা সিন্ডিকেট করে হাতিয়ে নিয়েছে। এবছর কাজের শুরুতে মেশিন দ্বারা মাটি কাটা অনুমোদন হয়েছে মর্মে মিথ্যা আশ^াস দিয়ে এলসিএসদের জানানো হয় মেশিন দ্বারা মাটি কাটা যাবে। ফলে সারা দেশে লেবার দ্বারা কাজ করাতে ব্যর্থ হয়ে ভুয়া মাষ্টাররোল, ভুয়া টিপ ছাপ, ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে উক্ত প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা ভুয়া বিলের মাধ্যমে সারা দেশ ব্যাপি উত্তোলন করেন। ১৬ এপ্রিল-২০১৯ তারিখে সুনামগঞ্জ জেলায় বরাদ্দ প্রদান করা হয়। অথচ ঐ জেলায় কোন প্রকল্পের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কিন্তু পিডি আলিমুজ্জামান চৌধুরী ও উক্ত জেলার ইঞ্জিনিয়ার যোগ সাজসে উক্ত ভুয়া প্রকল্পের কোটি টাকা উত্তোলন করেন। প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রকল্পে যে বরাদ্দ অনুমোদন করা হয় মাঠ পর্যায়ে কাজের সময় তারচেয়ে বেশী বরাদ্দ কমিশনের বিনিময়ে প্রদান করেন। ওয়েব সাইটে বরাদ্দ না দিয়ে সরাসরি ২০% টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারদের হাতে হাতে বরাদ্দ প্রদান করেন। জেলা মৎস্য দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলীগণ স্কীম তৈরি করতে প্রকল্পে থেকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকেন এবং বিভাগীয় প্রকৌশলীগণ ১ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রতি স্কীমে স্বাক্ষর করেন। বিনা অনুমোদনে এসি ও মাল্টিমিডিয়া ক্রয় করেন। তবে বাস্তবে এসি ও মাল্টিমিডিয়ার কোন অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি।


সুত্র জানায়, বগুড়া জেলায় ২০১৮/১৯ অর্থ বছরে ৪১টি স্কীম বাস্তবায়নের জন্য গ্রহন করা হয়। স্কীম বাস্তবায়নের জন্য ১২ কোটি ৩০ লাখ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। স্কীম তৈরির জন্য জেলা ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রউফ প্রতি স্কীম হতে ৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন। বিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদ প্রতি স্কীমে স্বাক্ষরের জন্য ১ হাজার টাকা করে গ্রহন করেন। প্রকল্প চলাকালীন আলিমুজ্জামানের পরিদর্শনের জন্য নানা অজুহাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের পরিচালক মো: আলিমুজ্জামন চৌধুরী একজন নন-ক্যাডার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন। প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী তিনি এই প্রকল্পের পরিচালক হতে পারেন না।


এই দুর্র্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সহকারী প্রকৌশলী থাকালীন সিলেটে বদলী করা হলেও তিনি বদলী আদেশ অমান্য করে অত্র কর্মস্থলে অদ্যবধি বহাল তবিয়েত আছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে সরকারী আদেশ অমান্যের অভিযোগ সহ অন্যান্য অভিযোগ তদন্তের সার্থে ২৮ফেব্রুয়ারী-২০১১ সালে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এব্যাপারে অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। বিস্তারিত আসছে……

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 − 8 =