নামের আগে কর্নেল থাকলেও তিনি সেনাবাহিনীর কেউ নন। ভারতের স্বাধীনতার অন্যতম পুরোধা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ছিলেন তিনি। আসল নাম সইফুদ্দিন। স্নেহবশত নেতাজি তাকে কর্নেল নামে ডাকতেন।
সময়টা ১৯৪৪। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অন্যতম বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা, দেহরক্ষী, গাড়ির চালক কর্ণেল নিজামুদ্দিন মায়ানমারের জঙ্গলে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর সাথে চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎ ধেয়ে এল গুলি নেতাজীকে লক্ষ্য করে। ঝাঁপিয়ে পড়ে নেতাজী সরিয়ে দিলেন নিজামুদ্দিন। কিন্তু নিজেকে পারলেন না সরাতে। নেতাজীকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া গুলি এফোঁড় ওফোঁড় করে দিল নিজামুদ্দিনের শরীর।
কর্ণেল নিজামুদ্দিনের আসল নাম ছিল সইফুদ্দিন। নিজামুদ্দিন নামটাও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর দেওয়া। আজমগড়ের মুবারকপুরের ঢাকুয়া গ্রামে ১৯০১ সালে জন্মগ্রহণ করেন নিজামুদ্দিন ওরফে সইফুদ্দিন। বাবা ইমান আলি সিঙ্গাপুরে একটি ক্যান্টিন চালাতেন। গ্রাম ছেড়ে তিনি বাবার কাছে চলে যান। পরে সেখানেই তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করেন। ১৯৪৩-৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজে ছিলেন। ধীরে ধীরে নেতাজীর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তাকে প্রথমে দেহরক্ষী পরে গাড়ির চালক হিসাবে নিযুক্ত করেন নেতাজী। তাকে কর্ণেল নিজামুদ্দিন নাম দেন নেতাজী। কর্ণেল নিজামুদ্দিন নিজে গাড়ি চালিয়ে নেতাজীকে পৌছে দিয়ে এসেছিলেন মায়ানমারের বেতাই নদীর তীরে। সেখান থেকে সাবমেরিনে চেপে জাপান চলে যান নেতাজী। যাওয়ার সময় নেতাজী রেজিমেন্টের দায়িত্ব দিয়ে যান কর্ণেল নিজামুদ্দিনের ওপর। সেই দায়িত্ব নিষ্ঠাভরে পালন করেছিলেন কর্ণেল নিজামুদ্দিন।