নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সুযোগ খুঁজে পায় মেয়েটি

0
520

ছোট থেকে মহাকাশ টানত তাকে। কিন্তু সেই মহাকাশের মতোই তা নিয়ে গবেষণাও স্বপ্ন মনে হত মেয়েটার কাছে। দুঃসাধ্য মনে হতো। আসলে পড়াশোনা করাটাই তার কাছে দুঃসাধ্য হয়ে উঠছিল। সংসারে প্রবল অভাব, অনটন। দু’‌বেলা ভাত জোটে না। সেই কিশোরীরই এবার স্বপ্ন সফল হচ্ছে। মেধা আর ইচ্ছাশক্তির জোরে। নাসায় যাচ্ছে কে জয়ালক্ষ্মী।

তামিলনাড়ুর পাত্তুকোট্টাইয়ে থাকে জয়ালক্ষ্মী। সরকারি স্কুলের একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। বরাবরই বিজ্ঞান নিয়ে দারুণ আগ্রহ জয়লক্ষ্মীর। তার মা মানসিক রোগী। বাবা সংসার ছেড়ে চলে গেছেন। সংসারের গুরু দায়িত্ব কিশোরীর কাঁধে। রোজ স্কুলে যায়। তার পর বাদাম বিক্রি করে সে। শুধু তাই নয়, ছোট ছেলেমেয়েদের টিউশনও পড়ায় জয়ালক্ষ্মী। সেই দিয়েই চলে সংসার।

একদিন হঠাৎই কাগজে একটা খবর চোখে পড়ে। দেখে, শিশুদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। তাতে সফল হলে নাসায় পাড়ি দেওয়া যাবে। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সুযোগ খুঁজে পায় মেয়েটি। সব পড়ুয়ারা যখন রাতদিন এক করে পড়াশোনা, প্রোজেক্ট করছিল, তখন জয়ালক্ষ্মীর দিন–রাত কাটছিল সংসারের হাল টেনে। এর মধ্যেই নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে সে। কাজের ফাঁকে সময় পেলেই শুরু করে পড়াশোনা। এর পর সেই কঠিন পরীক্ষায় সফলও হয়ে যায় সে।

কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। আমেরিকা পাড়ি দেওয়ার খরচ কে দেবে জয়ালক্ষ্মীকে? কয়েক জন শিক্ষক আর তার সহপাঠীর সহযোগিতায় পাসপোর্টের আবেদন করে। পাসপোর্ট অফিসারের সহায়তায় পাসপোর্ট হয়ে গেছে কিশোরীর। কিন্তু সেটাও যথেষ্ট নয়। বিমানের অত দামি টিকিট কী করে কিনবে সে?‌ অত টাকা কোথায়?‌ ওএনজিসি–র কর্মচারীরা এগিয়ে আসেন। তার হাতে তুলে দেয় ৬৫,০০০ টাকা। এছাড়া জেলা শাসক সহ আরও বেশ কিছু জনের সহায়তায় ৬০,০০০ টাকা সাহায্য পায় মেয়েটি। তবে, এখনও প্রয়োজন ৭০,০০০ টাকা। জয়লক্ষী জানিয়েছেন, ‘আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। যাঁরা আমার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য সাহায্য করছে। ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি টাকা পেয়ে গেলে পা রাখতে পারব নাসায়’।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

7 − two =