ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন

0
727

এফ রহমান রূপক: ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সংগঠনের সভাপতি এম.এ. বাশার এর সভাপতিত্বে বিভিন্ন দাবীতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, স্থানীয় শিল্প কারকানার কার্টন চাহিদা মেটানোর নিমিত্তে স্বাধীনতার পর হতে বাংলাদেশ লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের মালিকগণ নিজস্ব অর্থয়ণে তিল তিল করে গড়ে তোলে এই শিল্প। আমাদের লোকাল প্যাকেজিং শিল্প স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গার্মেন্টস, ঔষধ, পানীয়, ভোজ্য তেল, টোবাকো, টয়, দুগ্ধজাত পণ্যসহ যাবতীয় পন্যের মোড়ক উৎপাদনকারী শিল্প দীর্ঘদিন থেকে অসম বাণিজ্য তথা ভ্যাট-ট্যাক্স নীতিমালার শিকার। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ঘোষিত বাজেটে এই শিল্প এখন বন্ধ হওয়ার দারপ্রান্তে।

এই শিল্পখাতে প্রায় ২ হাজারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দেশে শতাধিক পেপারমিলের মধ্যে ৭০টি মিল ২ হাজারটি লোকাল প্যাকেজিং শিল্পে কাগজ সরবরাহ করে আসছে। প্যাকেজিং শিল্প থেকে তারা প্রতি কেজি ১৩ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে কাগজ কিনে। ১ কেজি কাগজ উৎপাদন করতে ১ কেজি ২শত গ্রাম ওয়েস্টেজ কাগজ লাগে।

অথচ প্যাকেজিং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে  কাগজ কলগুলোর উৎপাদিত মিডিয়া কাগজ প্রতি কেজি ৩২ টাকা থেকে ৩৬ টাকা দরে এবং লাইনার কাগজ প্রতি কেজি ৫০টাকা থেকে ৫২টাকায় কিনতে হচ্ছে। ট্যারিফ সুবিধা নিয়ে মিডিয়া কাগজের প্রকৃত মূল্য ৩২-৩৬টাকা হলেও কাগজ কলগুলো মাত্র ২০ টাকার উপর ১৫% এবং ৫২ টাকার লাইনার কাগজের জন্য ২৬ টাকার উপর ১৫% ভ্যাট কয়েকটি ফ্যাক্টরি প্রদান করে আসছিলো। কাগজকল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও ২০১৯-২০ অর্থবছর বাজেটে তাদের ভ্যাট পরিশোধের পরিমান ১৫% থেকে ৫% করা হয়েছে।

যার ফলে ট্যারিফ সুবিধাভোগী কাগজ প্রস্তুতকারীদের ভ্যাট টন প্রতি যথাক্রেমে মিডিয়া পেপার ১৫২০টাকা, ব্রাউন লাইনার ১৪৯০ সাদা লাইনার ১৫৩০ টাকা হারে রাজস্ব কমে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের উপর রাজস্ব হিসেবে রুপান্তরিত হয়েছে ফলে প্যাকেজিং শিল্পের ট্রেজারী জমা ৫৬.৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০১৮/১৯ অর্থবছরে যেখানে ৫ লাখ টাকা ট্রেজারী প্রদান করা হতো সেখানে ৭ লাখ ৮২ হাজার ৫শত টাকায় দাঁড়িয়েছে। এভাবে আইন পরিবর্তন করে বর্তমান আইনে আমাদেরকে মোট বিলের উপর ৫%  অগ্রীম কর বসানোর ফলে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের ৩% থেকে ৪% নীট লাভ মাইনাসের সূচকে পৌঁছে ৫-৭% লোকসান বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমদানী নীতিতে লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের জন্য ১৫% ভ্যাট, ১০% কাস্টম ডিউটি ও এআইটি আরোপ করে লোকাল প্যাকেজিং এর জন্য বিদেশে থেকে কাগজ আমদানী কঠোর করে রাখা হয়েছে। এই আমাদানী নীতিকে পূঁজি করে কাগজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া বাণিজ্য করে যাচ্ছে।

এসময় তারা কয়েকটি দাবী তুলে ধরেন।

দাবীসমূহ হলো:

১। লোকাল প্যাকেজিং ও প্যাকেজিং কাগজকল উভয়ই প্রস্তুকারী প্রতিষ্ঠান বিধায় প্যাকেজিং এর ন্যায় কাগজের ১শত ভাগ মূল্যের উপর ১৫% ভ্যাট আরোপ।

২। লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের ক্রয়ের ক্ষেত্রে কাগজের উপর ৫%ভ্যাট, আমদানির ক্ষেত্রে ১৫% ভ্যাট একটি কন্ট্রাডিক্টরি আইন। প্যাকেজিং শিল্পের আমদানির ক্ষেত্রে ১০% কাস্টম ডিউটি প্রত্যাহার করে ভ্যাট বহাল রখতে হবে।

৩। লোকাল প্যাকেজিং শিল্পের ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫%  প্রহসনমূলক এআইটি আইন বাতিল করতে হবে।

৪। ১০০% বিলের উপর ৫% এআইটি কাটা বন্ধ করে মোট আয়ের উপর ৫% এআইটি প্রয়োগের নিমিত্তে পূর্বের আইন বাতিল করতে হবে।

৫। কাগজকল মালিকদের ১৫% ভ্যাট ছাড়া প্যাকেজিং বিক্রয় বন্ধ করতে হবে।

করোনা ভাইরাসের মাহামারীতে আর্থিক ক্ষতি ও এই সেক্টরকে সচল রাখার নিমিত্তে পূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদনকৃত সরকার প্রদত্ত প্রণোদনার ফান্ড হইতে সহজ শর্তে হয়রানি বিহীন ৫শত কোটি টাকা ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা নিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eleven − 5 =