ক্রান্তিকালেও চলছে দুর্নীতি

0
706

এজাজা রহমান: কভিড-১৯ উদ্ভূত সংকটে জর্জরিত জাতির এই ক্রান্তিকালে জবাবদিহিতাহীন স্বেচ্ছাচার ও দুর্নীতির একের পর এক আলামত উদ্বেগজনক ও সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল টিআইবির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি বেসরকারি হাসপাতালে অগ্নিকান্ডে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির নানা বিষয় উঠে এলেও সংশ্লিষ্টরা দায় অস্বীকার করছেন। এ ছাড়া বেআইনিভাবে ঋণ সুবিধার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে গুলি করার মতো অপরাধে অভিযুক্তরা আকাশপথ কার্যত বন্ধ থাকার পরও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের যোগসাজশে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশ ছেড়ে গেল। এখন সরকারের এক বিভাগ অন্য বিভাগের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিজের দায় এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে। এর মধ্যেই খবর প্রকাশ হয়েছে, আসন্ন বাজেটে পাচারকৃত অর্থসহ কালো টাকাকে বৈধতা প্রদানের সুবিধা আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা হচ্ছে। এগুলো কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ব্যবসায়িক দুর্বৃত্তায়ন ছাড়া কিছু নয়। এসব ঘটনায় এমন আশঙ্কা করা অমূলক নয় যে, অনৈতিক ব্যবসায়িক চর্চাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনের ঘোষণা আর দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দেওয়া শুধু পরস্পরবিরোধী নয়, বরং অনৈতিক, অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক। বছরের পর বছর এই সুবিধা দিয়ে দেশের অর্থনীতির কোনো দৃশ্যমান উপকার হয়নি, উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, দেশের সরকার এখনো মুষ্টিমেয় স্বার্থান্বেষীদের হাতে জিম্মি হয়ে যায়নি।

এ ছাড়া অবৈধ ঋণ পাইয়ে দিতে শীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তাকে গুলি ও একাধিক কর্মকর্তাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তরা এবারও যদি সরকারের ‘প্রত্যক্ষ মদদে’ দায় মুক্তি পেয়ে যায়, সেটা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘শূন্য সহনশীলতা নীতির’ সরাসরি বরখেলাপ।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম মূল ভিত্তি আইনের দৃশ্যমান প্রয়োগ। তিনি বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে ‘অপরাধমূলক গাফিলতির’ প্রমাণ পাওয়া গেলে মৃতদের পরিবারের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণসহ আইনের কঠোরতম প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

‘সেবার’ বিষয়টি কেবল সাইনবোর্ডসর্বস্ব হবে, আর ব্যবসায়িক লাভালাভের বিবেচনার কাছে চিকিৎসাপ্রার্থী হেরে যাবেন, গাফিলতির কারণে তাদের প্রাণ যাবে- এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five + eleven =