বনানীতে অধিপত্য বিস্তার করে নানান অপকর্মে লিপ্ত নুরা হিজলা ওরফে শ্রাবন্তী

0
1370

ঈগল টিম: চাঁদাবাজি সন্ত্রাসসহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে হিজড়ারা উৎপাত বেশি গুলশান, বনানী, মহাখালী, সাতারাস্তা, সোসাইটি এলাকা ভাটারা সহ নামিদামি  নতুন ফ্ল্যাট গুলোকে নির্মাণ করলে দেয়া হচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। মাসিক প্রতিদিন চাঁদাবাজি চলছে ৮/১০/টি  অটো ও সাথে থাকে অনেক সঙ্গ পঙ্গ বাহিনী। বনানী এলাকা সহ মহড়া দেওয়া তাদের নিত্যদিনের কাজ। চাঁদাবাজি সন্ত্রাসসহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে হিজড়ারা আসল হিজড়া, নকল হিজড়া; চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধী সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ‘হিজড়া গ্রুপের’ হয়রানি আর অত্যাচারে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাজধানীর সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এ ‘বাহিনী’। বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নামে বিভক্ত হয়ে অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে সর্বত্র চাঁদাবাজিতে জড়িয়েছে তারা। তাদের তৎপরতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না বাসাবাড়ি কিংবা অফিসের লোকজনও। ইদানীং হিজড়াদের সবচেয়ে বেশি অত্যাচার চলছে বনানী,  গুলশান, ও ভাটারা থানা এলাকায়। তারা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে বাসাবাড়ি, দোকানপাট, ব্যবসা কেন্দ্র এমনকি অফিসে অফিসেও হানা দিচ্ছে। ধার্য করে দিচ্ছে চাঁদার টাকা। কখনো ২৪ ঘণ্টা, কখনো বা তিন দিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে টাকা দেওয়া না হলে তুলকালাম কাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা।

অশ্রাব্য গালাগাল, নগ্ননৃত্য প্রদর্শন, বেপরোয়া ভাঙচুর চালানো, যাকে তাকে মারধর করাসহ নানা রকম সহিংসতায় মেতে ওঠে হিজড়ারা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, হিজড়াদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুফল মেলে না। যে কারণে তারা দিনদিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের দাবি, হিজড়াদের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, আগে হিজড়ারা শিশু নাচালে পরিবারের সদস্যরা সামর্থ্য অনুযায়ী যে টাকা দিতেন হিজড়ারা তা-ই নিয়ে যেত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তাদের অত্যাচার বেড়ে গেছে। শিশু নাচানোর নাম করে ১০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করা হচ্ছে।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা এলাকাও বাদ পড়ছে না হিজড়াদের হয়রানি থেকে। উত্তরায় বাড়ি বাড়ি হামলা : গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। উত্তরা মডেল টাউনের ১২ নম্বর সেক্টরের একটি বাসার গেটে হৈচৈ। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েটি দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে পড়ল সালোয়ার-কামিজ এবং শাড়ি পরা সাত-আটজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা ওই মেয়েটির কাছে টাকা দাবি করল। তাও অল্পস্বল্প নয়, ১৫ হাজার টাকা। মেয়েটির চিৎকার শুনে তার মা এগিয়ে আসেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ব্যাপক গালাগালি চলতে থাকে, চলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, চিৎকার-চেঁচামেচি।

বাসাটির চারপাশ ঘিরে অসংখ্য পথচারী ভিড় করে মা-মেয়ের নাস্তানাবুদ হওয়ার দৃশ্য দেখলেও এগিয়ে আসেনি কেউ। অগত্যা উপায়ান্তরহীন অবস্থায় দুই হাজার টাকা এবং নতুন একটি শাড়িতে রফাদফা হয়। খিলগাঁওয়ের একটি বাড়িতে এভাবেই রক্ষা পান মা-মেয়ে।

শুধু ওই বাসায়ই নয়; এরকম ঘটনা উত্তরার আরও অনেকের বাসায় ঘটেছে। অফিসে ঢুকেও দিগম্বর হয় তারা : হিজড়াদের তৎপরতায় চরম বিপাকে পড়া এক ব্যক্তি বলেন, ঈদের আগে একদিন দুপুরে বনানী বাসায় নুরা ওরফে শ্রবন্তি হিজলা,তার বাহিনী সুমন ওরফে সুমি,  হিজলা অফিসে বসে কাজ করছি। হঠাৎ দরজা ঠেলে চারজনের হিজড়া দল আমার রুমে ঢুকে পড়ে। অফিসের স্টাফ ও ফ্ল্যাটের দারোয়ানরা তাদের কোনোভাবেই ঠেকাতে পারেনি। রুমে ঢুকেই এক হিজড়া কাপড়-চোপড় খুলে দিগম্বর হয়ে যায়।

আরেকজন দরজার বাইরে নগ্ন হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। সঙ্গে অশ্লীল সব খিস্তি। উপায়ান্তরহীন অবস্থায় তিন হাজার টাকা হিজড়াদের হাতে তুলে দিয়ে তবেই নিস্তার মিলে তাদের। এর আগেও ওরা বনানীতে দলবল নিয়ে বাসাবাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটে হামলা করছে। মানুষ মানসম্মানের ভয়ে যা পারে দিয়ে দিতে বাধ্যও হয়েছে। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদাবাজ হিজড়া চক্রের সদস্যরা দিনভর হাটবাজার, মার্কেট ও টার্গেটকৃত বাসাবাড়ি থেকে জোরজবরদস্তি চাঁদা সংগ্রহে ব্যস্ত থাকলেও রাত হলেই তারা অন্যরকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

চক্রের সদস্যরা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে রাস্তার মোড়, বাজার মুখে, বাসস্ট্যান্ডসহ অলিগলিতে ওঁত পেতে থাকে। এসব স্থানে একাকী কোনো পথচারীকে পেলেই নানাভাবে নাস্তানাবুদ করাসহ রীতিমতো ছিনতাই চালায় তারা। অভ্যন্তরীণ বিরোধ : রাজধানীতে চাঁদাবাজি ও এলাকার আধিপত্য নিয়ে সম্প্রতি হিজড়া সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। হিজড়ারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পারস্পরিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। কিছু দিন আগে শ্যামবাজার, মাহুতটুলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, বাড্ডাসহ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে হামলা, মারধর ও সংঘর্ষে হিজড়া নেত্রী দিপালীসহ অন্তত ৩০ জন হিজড়া রক্তাক্ত জখম হয়েছে বলে জানা গেছে।

  আহত হিজড়া সুইটি, নীহার, টুম্পা, সীমা, নদী, চুমকি, রীতু,সুমি, পিঠু,সজিব, বেশি ভাগ হিজলা বেশ স্বপ্নাসহ কয়েকজন জানান- প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া প্রকৃত হিজড়ারা এখন হিজড়াবেশী পুরুষ নুরা হিজলা  চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গচ্ছেদ করে কৃত্রিমভাবে হিজড়ায় রূপান্তর হওয়া পুরুষরা জোট বেঁধে প্রকৃত হিজড়াদের ওপর জোর-জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে। এসব নিয়ে রাজধানীর ১৭টি থানায় ৩০টি মামলা রয়েছে। আরো বিস্তারিত আসছে…

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − twelve =