পপুলারে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু : অভিযোগকারীর আপোসে তদন্ত শেষ

0
314

রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু এবং অতিরিক্ত বিল আদায়ের ঘটনা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে অভিযোগকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আপোস করায় তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সভাপতি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (এফএমএইউ) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) বলেন, ‘অভিযোগকারী আপোস করলে আমাদের আর কী করার থাকে। রোগীর মৃত্যুর ঘটনার ৪-৫ দিন পর অভিযোগকারীর সঙ্গে পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আপোস হয়েছে মর্মে মন্ত্রণালয়ের কাছে কাগজপত্র জমা দেয়া হয়। আপসনামায় বলা হয়েছে, দুপক্ষের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অভিযোগ করা হয়েছিল। তারা উভয়ে তাদের ভুল বুঝতে পেরে ঘটনাটির মিমাংসা করে ফেলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপোসনামার কাগজপত্র পাওয়ার পরও তাদেরকে চিঠি পাঠিয়ে ও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কমিটির কাছে সেদিনের ঘটনাটি খুলে বলতে অনুরোধ জানানো হয়। তবে তারা একাধিকবার আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও আসেননি। সুতরাং তদন্ত কমিটির আর কী-ই বা করার আছে।’

গত ২৭ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (এফএমএইউ) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তদন্ত কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মৃত্যু, অতিরিক্ত বিল আদায় এবং মৃতদেহ বাইরে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করেছেন। এমতাবস্থায় বিষয়টি তদন্তের জন্য এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে জরুরিভিত্তিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়।

যে ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ থেকে কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১০ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে ভর্তি হন ৮০ বছর বয়সী রওশন আলী সিকদার। প্রাথমিক পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, তিনি করোনা পজিটিভ। শুরু হয় চিকিৎসা। ভর্তির ১৫ দিনের মাথায় মারা যান রওশন আলী। এরই মধ্যে দুই দফা আইসিইউ ও নানা পরীক্ষার বিল হিসেবে ধাপে ধাপে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মারা যাওয়ার পর জানানো হয়, রোগীর করোনা হয়নি। এই অবস্থায় এই ১৫ দিন কিসের চিকিৎসা করা হলো এবং পাঁচ লাখ টাকাই বা কেন নেয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রোগীর স্বজনরা।

স্বজনদের অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পর মরদেহ হাসপাতালের বাইরে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশকে জানানো হলে মরদেহ নেয়া হয় হাসপাতাল মর্গে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনার সব উপসর্গ থাকলেও অনেক সময় পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। রওশন আলীর শারীরিক নানা জটিলতা থাকায় শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

পরবর্তীতে পপুলার হাসপাতালের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করে নিহতের স্বজনরা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × two =