বরগুনা জেলাকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করা আমার রাষ্ট্রীয় ও নৈতিক দায়িত্ব …মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) পুলিশ সুপার, বরগুনা। ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’ ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’

0
980

এই সেøøাগানকে সামনে রেখে রাষ্ট্রের পবিত্র পোষাক পড়ে রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে আমি বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিমুক্ত লাল সবুজের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি আরো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, জনগনের দোড় গোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে আমি প্রস্তত। সেবাই পুলিশের ধর্ম। পুলিশের কাজ এক কথায় বুঝাতে গেলে তাই বলা হয়। কিন্তু আইন ও বিধিমালা দ্বারা পরিচালিত নিয়ন্ত্রিত পুলিশের কাজ মূলতঃ অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা। বস্তত: আইনের আওতায় প্রদত্ত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে তা জনগনের সেবা করা হয়। অর্থাৎ পুলিশের কাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জনসম্পৃক্ততা। জনগণ ও পুলিশের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে একটি টেকসই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই নিরাপদ বরগুনা জেলা বাস্তবায়নে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে জনগনের অংশ গ্রহন যেমন দরকার তেমনি দরকার গনমাধ্যমের সহযোগীতা। পুলিশের সেবাকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করে জনগনের নিকট সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”একান্ত আলাপচারিতায় অপরাধ বিচিত্রাকে এমনটিই বলেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)। বরগুনা জেলার প্রতিটি মানুষের মনে পুলিশ কতটুকু জায়গা করে নিতে পেরেছে তা বরগুনা থেকে ঘুরে এসে তুলে ধরে প্রতিবেদনটি লিখেছেন রাশেদুল ইসলাম।

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে গড়ে ওঠা উপক‚লীয় জেলা বরগুনা। নানা কারনে সারা বাংলাদেশব্যাপী বহুল আলোচিত এ জেলা শহরটি। মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াজাত করণ, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, অলি-আউলিয়া, সাধু-সন্ন্যাসী, রাজনীতিবিদসহ বহু উল্লেখযোগ্য জ্ঞান তাপস ব্যক্তির জন্মস্থান হিসেবে সুনাম রয়েছে বরগুনার।

সেই সুখ্যাতির রাজতিলকে কতিপয় রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী অপরাধ মনস্ক ব্যক্তি কলঙ্ক লেপনের অপচেষ্টায় পূর্বে লিপ্ত থাকলেও বরগুনার বর্তমান জনবান্ধব পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপি এম) এর সাহসিকতা, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, মেধা ও সর্বোপরি অপরাধ দমনে সর্বাধুনিক কলাকৌশল প্রয়োগের প্রেক্ষিতে তাদের সেই অপচেষ্টা আজ বানের জলের মতো বঙ্গোপসাগরের পানিতে পতিত হয়েছে।

বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) দায়িত্ব গ্রহনের পর নিজ কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে বরগুনা জেলা থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাÐ হ্রাসকল্পে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহন করেন। প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছেন। শুধু তাই নয়, জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গঠন ও জনসেবামূলক কর্মকাÐের মাধ্যমে বরগুনা জেলাকে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

সন্ত্রাস ও মাদক এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে বরগুনাবাসীর নয়নমণিতে পরিণত হয়েছেন পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপএম)। রাষ্ট্রের জনগণের জানমালের হেফাজত, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলে জনগণের সাথে সেতুবন্ধন রচনার মাধ্যমে কার্যকর পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলে জনগণকে রাষ্ট্র প্রদত্ত সেবা প্রদান করে জনগণের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেওয়ার মাঝেই রয়েছে একজন চৌকস, দক্ষ ও অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তার সফলতা। সে দুরহ কাজটি অত্যন্ত সফলতার সাথে করতে সক্ষম হয়েছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন, (পিপিএম)। স্বমহিমায় নিজে যেমন ভাস্বর হয়েছেন ঠিক তেমনি ভাস্বরিত করেছেন বরগুনাবাসীকে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সাফল্য ও নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্র অর্পিত যে কোন কাজ সুনিপুন ও দক্ষতার সাথে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বরগুনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য কার্যকর বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সমৃদ্ধ ঐতিহ্যে ভাস্বরিত পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) পারিবারিক, ব্যক্তি জীবন ও কর্মজীবন। পুলিশ প্রশাসন ও বরগুনা জেলাবাসীর গর্ব পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) এর  সমৃদ্ধ পারিবারিক, ব্যক্তি জীবন ও কর্মজীবনের বিস্তারিত ‘অপরাধ বিচিত্রা’র সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাদের উদ্দেশ্যে নিম্নে তুলে ধরা হলো:

ব্যক্তি জীবন:

ব্যক্তি জীবনে এক কন্যা সন্তানের জনক, পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন  (পিপিএম)’র রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল পারিবারিক ইতিহাস। তার পিতা এ এম আনোয়ার হোসেন ও মাতা খায়রুন্নেছার ঔরসে পিরোজপুরের এই কৃতি সন্তান ১০ইং ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে তার দীপ্ত পথচলা। পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম) ১৯৮৮ সালে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি,

১৯৯০ সালে পিরোজপুর সরকারি সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ, থেকে এইচএসসি, ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিভাগে কৃতিত্বের সহিত অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। এছাড়া তিনি পুলিশ ষ্টাফ কলেজ, মিরপুর ঢাকা থেকে police management certificate course Ges Applied criminology and police management  course সফলতার সহিত সম্পন্ন করেছেন।

আদর্শিক কর্ম জীবন:

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী বরগুনার পুলিশ সুপার মো: মারুফ হোসেন (পিপিএম)। কর্ম দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদকসহ বিভিন্ন সম্মানজনক সম্মাননা স্মারক। ২২ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার হিসেবে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদা রাজশাহী ট্রেনিং শেষে ২০০৫ সালে তিনি সিআইডিতে যোগদান করেন।

২০০৬ সালে সিএমপিতে এসি হেডকোয়ার্টার, এসি ফোর্স, এসি সাপ্লাই ও এসি পাঁচলাইশ জোনের দায়িত্ব পালন করেন নিষ্ঠার সহিত। ২০০৭ সালে র‌্যাব-৭ এ সহকারী পুলিশ সুপার  হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে ভ‚য়সী প্রশংসা অর্জন করেন। ২০০৮ সালে ডিএমপির এসি, ডিবি হিসেবে গুলশান জোনে যোগদান করেন।

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরে এসি, ডিবি হিসেবে মিরপুর জোনে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মিরপুরের ০৩ টি সংসদীয় আসনের নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সফলতার সাথে পালন করেন। তিনি এসি, ডিবি হিসেবে মিরপুর ও গুলশান বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে হাউজ ডাকাতি, শ্যুটিং ইন্সিডেন্সসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

২০০৯ সালে লাইব্রেরিয়া মিশনে যোগদান করেন। ২০১১ সালে ট্রাফিক এন্ড ড্রাইভিং স্কুলের (টিডিএস) কমান্ড্যান্ট এর দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেন। ২০১২ সালে সুদানের দারফু’র মিশনে রুল অব ল ইউনিটের ওআইসি প্লানিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সুদানের দারফু‘র মিশন শেষে ২০১৪ সালে এডিসি হিসেবে এসএমপি,

সিলেটে যোগদান করেন এবং সেখানে অনুষ্ঠিত টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিরাপত্তার প্ল্যানিং এর দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করে আইসিসি’র ভ‚য়সী প্রশংসা অর্জন করেন। এসএমপিতে ০৩ (তিন) মাস সফলতার সাথে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৪ সালের নির্বাচনোত্তর অশান্ত ল²ীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখানে তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ল²ীপুরবাসীর মন জয় করেন।

এরপর ২০১৫ সালে ডিএমপি’তে বাংলাদেশ সচিবালয়ে (এডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালনের পর পদোন্নতি পেয়ে ২০১৬ সালে ডিসি (এমটি ও সরবরাহ) ও ডিসি (ডিবি) হিসেবে সিএমপি’তে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৩.০৮.২০১৮ খ্রি. থেকে  বরগুনা জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন অদ্যাবধি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 2 =