কলাপাড়ায় সাবেক ইউ,পি সদস্য হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন,শ্বশুরসহ ৩জন গ্রেপ্তার

0
1342

সৈয়দ মোঃ রাসেল: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লালুয়া ইউনিয়নের ছোট ৫নং গ্রামের সাবেক ইউ,পি সদস্য মো.আমিনুল ইসলাম ওরফে দিলিপ গাজী (৫৮) হত্যা মামলার তিন আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।শনিবার রাতে আসামীদের বাড়ীর এলাকা থেকে আটক করা হয় । এরা হলো মো.আমজেদ হোসেন (৫০),মো.নিজাম উদ্দিন (৫০) ও আনোয়ার হোসেন (৫৫)।এদের মধ্যে আনোয়ার হেসেনের বাড়ী বরগুনা, নিজাম’র বাড়ী আমতলী এবং আনোয়ার’র বাড়ী উপজেলার ধানখালী এলাকায়।
এ ঘটনায় সাবেক ইউ,পি সদস্য মো.আমিনুল ইসলাম ওরফে দিলিপ গাজীর স্ত্রী মোসা.হাবিবা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে ২২ অক্টোবর কলাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৭,তারিখ ২২-১০-২০২০ খ্রিঃ,ধারা-৪৫৭/৩০২/৩৪ পিসি রুজু হয়।উক্ত ঘটনার পর থেকে পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম এর সার্বিক তদারকি ও নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর)জনাব শেখ বিল্লাল হোসেন এর নেতৃত্বে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের একটি চৌকশ দল মামলার সুত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে গত ৩৬ ঘন্টার অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্বশুর অনোয়ার প্যাদ্যা, ভায়রা নিজাম ও আমজেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


আসামীদের স্বীকারোক্তি মতে মৃত দীলিপ গাজীর অর্থ সম্পদের লোভে তার শ্বশুর আনোয়ার প্যাদা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাইয়ের মেয়ে জামাই নিজামের সাথে ২ লক্ষ টাকায় চুক্তি করে লোক ভাড়া করে। গত ২১ অক্টোবর নিজাম তার পূর্ব পরিচিত আমজেদের সাথে হত্যার পরিকল্পনা করে রাতে দীলিপের বাড়িতে বেড়াতে যায় এবং কৌশলে তাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।


কলাপাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.আসাদুর রহমান জানান, টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে এ হত্যাকান্ডটি ঘটানো হয়। আমিনুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের সময় তার গলায় এবং নাকে আঘাতের চিহ্ন ছিল।ঘটনার সময় স্ত্রী হাবিবা বেগম সহ তার সন্তানরা কেউই বাড়ীতে ছিল না। সে হিসেবে ঘটনার সাথে জড়িতরা পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে।
অপরদিকে রবিবার সকালে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মইনুল হাসান। আসামীদের কলাপাড়া আদালতে হাজির করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।


এদিকে,লালুয়া ইউনিয়নের দশকানি গ্রামের মো.সাইফুল ইসলাম জানান, আমিনুল ইসলাম দিলিপ গাজী ইউ,পি সদস্য থাকাকালীন সরকারের বরাদ্দকৃত চাল কেউ নিতে না পারলে তার বাড়ীতে নিজের মাথায় বহন করে পৌঁছে দিতেন। সর্বোপরী তাঁর ভাল কাজের কারনে তিনি এলাকায় ছিলেন জনপ্রিয় । এলাকাবাসী অনেকের এমনও মন্তব্য শোনা গেছে,সকল মানুষের এলাকায় কম-বেশী শত্রæ রয়েছে,কিন্তু আমিনুলের কোন শত্রও ছিল না।

পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এলাকাবাসী তাকে প্রার্থীর জন্য চেষ্টা করেছেন তবুও তিনি রাজী হননি। তবে তাঁর এ হত্যাকান্ডটি এলাকার মানুষ মেনে নিতে পারেনি। তারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিতে জোড় দাবী তোলেন।

উল্লেখ,গত ২১ অক্টোবর সাবেক এ ইউ,পি সদস্য নিজ বাড়ীতে শ্বাসরোধে এ হত্যাকান্ডের শিকার হন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three + three =