ভাড়াটিয়া মেয়েকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ বাড়ির মালিক রাফি ও শাজাহানের বিরুদ্ধে

0
652

দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ মোঃ মোজাম্মেল হক বাদল (বর্তমানে প্যারালাইসড) স্ত্রী সাহিদা আক্তার পুষ্পা ও চার মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছে আহ্ছান ভিলা, ৪৬০, ফায়দাবাদ টিআইস কলোনী রোড, উত্তরা, ঢাকা, মালিক লায়ন মোঃ আবু তাহের।

সবসময় নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতেন মোজাম্মেল হক বাদল। একাধারে ৫ মাস করোনা মহামারীর জন্য সকল কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেলে মোজাম্মেল হক বাদলের পরিবারে নেমে আসে ভীষণ কষ্ট। নিদারুণ কষ্টে দু মুঠো ভাত জোগাড় করা ছিল কষ্টসাধ্য বিষয়। এর মধ্যে বাড়ী ভাড়া বিশাল একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

এর মধ্যে বাদল সাহেবের ঔষধ, বাচ্চাদের দুধ ও লেখাপড়ার খরচ সব বন্ধ হয়ে যায়। ৮ বছরে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে মাত্র ৭৩ হাজার টাকা বাড়ী ভাড়া বকেয়া হয়ে যায়। প্রয়াত বাড়ীওয়ালা আবু তাহের সাহেব কখনোই বাড়ী ভাড়ার জন্য দুর্ব্যবহার করেন নাই। কিন্তু তার ছেলে রাফি (২৮) এর বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী হয়। জিডি নং- ৫৭, তাং- ০১/১১/২০২০ ইং।

সাধারণ ডায়েরী পর্যালোচনা করলে জানা যায়, ডায়েরী করেছেন মোঃ মোজাম্মেল হক বাদলের স্ত্রী তিনি ডায়েরীতে উল্লেখ করেছেন বর্তমানে বিল্ডিংয়ের মালিক রাফি এবং দারোয়ান শাহজাহানের কু-প্রস্তাবের যন্ত্রণায় মেয়েদেরকে আমার ভাইয়ের বাসায় রাখতে বাধ্য হয়েছি। রাফির কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে এই মুহুর্তে ৭৩ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে, অন্যথায় আমার প্যারালাইসড স্বামীকে টেনে হিচড়ে ঘর থেকে বের করে দিবে।

গত ৩১/১০/২০২০ ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭.৩০ ঘটিকায় আমার বাসায় এসে জোর জবরদস্তি করে আমার স্বামীকে বাড়ী থেকে বের করতে আসে এবং জানায় একটি বিষয়ে মাফ পাবি, যদি তোর মেয়ে আমার প্রস্তাবে রাজি হয়। শুধু একটি রাতের ব্যাপার। আমরা তার এই কু-প্রস্তাবকে ঘৃণা করি এবং তাকে জানাই প্রয়োজনে ছাদ থেকে নিচে লাফ দিয়ে জীবন দিয়ে দিব কিন্তু কোন বাজে কথা বলবেন না।

রাফি রাগন্বিত হয়ে আমার কাছ থেকে জোর করে ষ্ট্যাম্পে সই নেয় এবং আমাদের মালামাল রেখে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে।

এ বিষয় নিয়ে সাহিদা আক্তার পুষ্পকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, শুধুমাত্র ইজ্জতের ভয়ে আমি থানায় জিডি করেছি। জিডির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এস.আই মোঃ ফারুক মিয়াকে। আশা করি তিনি একটি যথাযথ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এই মুহুর্তে আমার পক্ষে কোন টাকা দেওয়া সম্ভব না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কত মানুষকেই তো সহযোগীতা করে, একজন প্যারালাইসড রোগী স্বামী এবং চারটি মেয়ে নিয়ে আমার জীবনটা কেমন হতে পারে সকল বিবেকবান মানুষের কাছে আমার প্রশ্ন। কিছু কিছু বাড়ীওয়ালাদের কুৎসিত ব্যবহার দেখলে মহান আল্লাহ্র কাছে জানতে ইচ্ছে করে এদেরকে কি মাটি দিয়ে বানানো হয়েছে?

আমার বাড়ীওয়ালার ৭-৮টি বহুতল ভবন, বিশাল বিশাল মার্কেটে অনেক দোকান, তার পরেও তাদের হৃদয়ে আমাদের মতো ভাড়াটিয়ার জন্য কোন মায়া নেই। বরং আমার এইচ.এস.সি পড়ুয়া প্রতিদিন ভোরে কোরআন তেলাওয়াত করা মেয়েকে কিভাবে কু-প্রস্তাব দেয়-বিষয়টি ভাবলে এ জীবন রাখতে মন চায়না।

এ যাবৎকালে বাড়ীওয়ালা রাফি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে ৮-১০ বার বিদ্যুৎ ও পানির লাইন কেটে দেয় এবং বর্তমান সময়ে গত দুই মাস যাবৎ একটানা বিদ্যুৎ ও পানির লাইন নাই। এর মধ্যেই আমার চার মেয়ে সহ অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে জাহান্নামের মধ্যে বসবাস করছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − two =