মাইন্ড এইড হাসপাতালকে ‘জেলখানা’ বললেন ডিসি হারুন

0
350

রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালটিকে ‘জেলখানা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, ‘সিনিয়র এএসপি শিপনকে হত্যার ঘটনায় হাসপাতালটি ঘুরে দেখেছি। কোনোভাবেই এটিকে হাসপাতাল বলে মনে হয়নি। হাসপাতালের বারান্দায়ও তারা এমনভাবে রুম বানিয়েছে, যেখানে বাতাস ঢোকারও ব্যবস্থা নেই। সেখানে সুস্থ মানুষ গেলেও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা।’

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসি হারুন বলেন, ‘ওই হাসপাতালে নেই কোনো ডাক্তার, ছিল না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি। একটি বাড়ির মধ্যে জেলখানার আদলে গড়ে তোলা হয়েছে হাসপাতাল। তারা দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে এনে চিকিৎসা দিতো।’

আটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একজন মেধাবী সিনিয়র এএসপিকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ডা. নিয়াজ উদ্দিনের নামেও মামলা হয়েছে। তিনি রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাকে আমরা ফেরত আনতে পারবো না। কিন্তু আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে তার হত্যার বিচার নিশ্চিত করা। না হলে আমরা বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো।’

রাজধানী ঢাকায় অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরেবাংলা নগরে অনেকগুলো অবৈধ ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। তাদের কোনো বৈধ কাগজ নেই। তারা শুধু সরকারি হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে রোগী ভাগিয়ে আনে। চিকিৎসার নামে তারা রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করছে। অনেকে এ বিষয়ে অভিযোগ করে না। শিগগিরই এ বিষয়ে অভিযান চালানো হবে। দালালদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়র এএসপি শিপনকে আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সেখানে কোনো মানসিক রোগের চিকিৎসক ছিলেন না। আসামিরা চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে ভিকটিমকে জোর করে হাসপাতালের দোতলার একটি অবজারভেশন কক্ষে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই কক্ষে নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করে আসামিরা।

এ ঘটনায় তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলা করেন। মামলার ১০ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 + five =