নিজস্ব প্রতিবেদক: কাগজে-কলমে হাউজিং প্রতিষ্ঠান ‘আল নাইম ট্রাভেলর্স’ ড্রিমল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর মালিক আব্দুর রব। রাজধানীর গুলশান, বনানী ও উত্তরায় আলিশান অফিস তার। সবসময় ঘুরে বেড়ান গাড়িতে। নামে-বেনামে আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে লাখ লাখ টাকার পণ্য কেনেন তিনি। এরপর মাত্র ১০ শতাংশ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করে বাকি টাকার জন্য ব্যাংক চেক দিয়ে দেন। তিন মাস না যেতেই হাওয়া হয়ে যায় তার প্রতিষ্ঠান। এলাকা পরিবর্তন করে নতুন জায়গায় নতুন নামে গড়ে তোলেন অফিস। আর এভাবেই শূন্যের উপর ব্যবসা করে গত কয়েক বছরে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আব্দুর রব। আব্দুর রব জামাতের নেতা বলে এলাকাবাসী জানন। তার অত্যাচারে তৎকালীন সরকারের সময় মানুষ অতিষ্ট হয়ে পরেন। রাতের আধারে জমি দখল ও চাঁদাবাজী সহ মানব পাচারের সাথে রয়েছে তার সর্ম্পক।
স¤প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তাকে গ্রেপ্তার করতে এসে জানান চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১৩ সালে মানব পাচার ও হাজীদের টাকা হরন করায় খবর পেয়ে ডিবি অফিসে ছুটে আসেন প্রতারণার শিকার কয়েক হাজার মানুষ ও ভুক্তভোগীরা।
ডিবি বলছে, শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানাতেই আব্দুর রবের বিরুদ্ধে ১৫টি প্রতারণার ও জালিয়াতির মামলা রয়েছে। তবে আব্দুল রব একা নন, তার প্রতারকচক্রের সদস্য হিসেবে রয়েছেন তার স্ত্রী রহিমা বেগমসহ ছেলে নাইম ও আরও তিন সদস্য।
এলাকাবাসী বলেন, তৎকালিন সময়ে আব্দুর রব জামায়েত আমির হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তার বাসায় জামাতের গোপন সব সাংগঠনিক কার্যক্রম করে থাকেন তিনি।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বলেন, “আমাদের জমি দখল করার পায়তারা করেন রব পরে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করি। তা করলে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আসা যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেন যা সর্ম্পুন বে-আইনি”।
তার প্রতারণার খপ্পরের পরে হাজার মানুষের জীবন এখন হুমকির মুখে। তার প্রতারণা এখানে শেষ নয় গত ২৫/০২/২০২০ সালে গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আহাদের নামে একটি মিথ্যা অভিযোগ করেন আব্দুর রব। তা নিয়ে বার বার তাকে দেখা করতে বললে তাকে পাওয়া যায়নি।
তার কাছে ফ্ল্যাট ক্রয় করে বিপাকে পরেন সালমা সুলতানা ও ইউসুফ আলী। কয়েক ধাপে তিন লাখ টাকা দিলেও আরও চার লাখ টাকা পাবেন তার কাছে। রাতের আধারে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রি করে আবার তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন জনৈক ব্যক্তি যার ফলে জীবন নিয়ে চলে যায় তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, অভিজাত এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরেই এভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন আব্দুল রব। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ লাখ টাকার পণ্য কিনে অগ্রিম হিসেবে মাত্র ১০ শতাংশ পরিশোধ করতেন। একই পণ্য অন্য জায়গায় বিক্রি করে পুরো টাকাটাই নিজের পকেটে পুরে অফিস ছেড়ে পালাতেন।
এ ব্যাপরে খিলক্ষেত থানার আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: কেরামত দেওয়ান বলেন, “আমাকে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেন জামায়েত নেতা। এই প্রতারক আব্দুর রবের মামলাটি তদন্ত করলে মিথ্যা প্রমানিত হয়”। এ ব্যাপারে প্রতারক আব্দুল রব অপরাধ বিচিত্রাকে বলেন, “আমি ভালো মানুষ আমার নামে এসব কুৎসা মানুষ রটে”।