১০০ টাকার জন্য বন্ধুর গলায় ব্লেড চালালো মাদকাসক্ত তরুণ!

0
409

হেলাল ও রায়হান। দু’জনের বয়সের ব্যবধান প্রায় ১০ বছর হলেও সম্পর্ক বন্ধুত্বের। সারাদিন একসঙ্গে ওঠাবসা, মাদক সেবনও করে একইসঙ্গে। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সকালেও দুজন মাদক সেবন করতে বসে। কিন্তু পাওনা ১০০ টাকার জন্য কথা কাটাকাটির জেরে ধারালো ব্লেড দিয়ে রায়হানের (১২) গলা কেটে দিয়েছে হেলাল। এখন চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে কিশোর রায়হান।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে কোতোয়ালী থানার কাটাপাহাড় লেন এলাকার টিএন্ডটি পাহাড়ের চূড়ায়।

ঘটনার পরপরই পুলিশ ওই এলাকা থেকে কিশোর রায়হানকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত হেলালকে (২২) গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এম এম মেহেদী হাসান বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টিএন্ডটি পাহাড় এলাকায় একটি ছেলে আরেকটি ছোট বাচ্চাকে ব্লেড দিয়ে গলাকেটে পাহাড় থেকে ফেলে দেয়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার চিকিৎসা চলছে, পুলিশ ইতোমধ্যে শিশুটির জন্য রক্তের ব্যবস্থা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই আমরা এই ঘটনায় দায়ী ছেলেটিকে আমরা আটক করতে সক্ষম হই। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, ওরা দুজনেই “গাম” নামে একধরনের নেশা করে, এটি খাওয়াকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।’

অভিযুক্ত হেলাল সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পুলিশকে জানায়, সকালে টিএন্ডটি পাহাড়ের চূড়ায় বসে তারা দুজনে মাদক গ্রহণ করছিল। এ সময় রায়হানের কাছে পাওনা ১০০ টাকা চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সঙ্গে থাকা ধারালো ব্লেয দিয়ে রায়হানের গলা কেটে দেয় হেলাল। এর পরপরই সে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী রায়হানের মা রেখা বেগম জাগো নিউজকে জানান, রায়হানের বাবা নেই। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি নগরের আমবাগান এলাকায় থাকতেন। রায়হান নগরীতে ডাস্টবিন পরিষ্কারের কাজ করে। হেলালসহ আরও অনেকের সঙ্গে ঘোরাফেরা করত সে। রাতেও তাদের সঙ্গে রাস্তায় থাকত। গতকাল (সোমবার) রাতেও সে বাড়ি যায়নি। আজ সকালে তিনি এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবরটি শোনেন।

রেখা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে নেশা করে কিনা জানিনা, তবে সিগারেট খায়। কয়েকদিন ধরে হেলাল, সবুজসহ আরও কয়েকজনের সাথে ঘুরাফেরা করছিলো। গতকাল রাতেও বাড়ি যায় নাই। হেলাল কেমনে আমার এত বড় ক্ষতি করতে পারল?’

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘নগরের বিভিন্ন এলাকায় পথশিশুরা “গাম” নামে এক ধরনের নেশা করে থাকে। এর টাকা জোগাড় কিংবা নেশার ঘোরে প্রায়ই বিভিন্ন অন্যায় করে থাকে এই শিশু-কিশোর-তরুণরা। অনেক চেষ্টার পরেও এদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না।’

এসব পথশিশু-কিশোরদের সমাজরে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সামাজিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ওসি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

12 − 7 =