ছোট ভাইয়ের কিডনি বিক্রির চেষ্টা আটক বড় ভাই

0
668

চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নিজের আপন ছোট ভাইকে অপহরণের পর কিডনি বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে বড় ভাই ফাহাদ বিন ইহসান তারেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি ঘটনাটি নিশ্চিত করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায় , ছোট ভাই রায়হান এহসান রিহান (৫) কে অপহরণের অভিযোগে বড় ছেলে তারেক এর বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন পিতা মো. আবু তাহের। রিহানের পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, রিহানকে অপহরণের পর বাসায় একটি চিঠি লিখে যান বড় ভাই তারেক। চিঠিতে তারেক উল্লেখ করেন, আমি শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমি যেদিন কিডনি বিক্রি করেছিলাম, ঠিক সেদিন থেকে আপনারা আমাকে অবহেলা করা শুরু করেছেন। অথচ আপনাদের অত্যাচারে আমি বাধ্য হয়েছি নিজের অঙ্গ বিক্রি করতে। আপনারা আমার জীবনের সব শেষ করে দিয়েছেন। আমার স্ত্রী অন্যের বিছানায় সঙ্গী শুধু আপনাদের জন্য। ‘আমার সন্তানের মুখ পর্যন্ত আমি আজও দেখি নাই। আমার জীবন নষ্ট করে আপনারা শান্তিতে থাকবেন ভাবলেন কীভাবে? আমি এতোদিন অপেক্ষা করেছি।

আপনাদের হাতে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনারা আমার কোনো ব্যবস্থা করে দেন নাই। আপনার সন্তান যেখানে বেকার সেখানে আপনারা হিন্দুর সন্তানকে ২০ লক্ষ টাকা দেন ব্যবসা করার জন্য। আপনাদের টাকা-পয়সা মানুষের জন্য।

এতোদিন কোনো বাচ্চা পেশেন্ট পাই নাই। তাই আপনাদের সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেছি। আমার মতো এবার আপনাদের ছোট ছেলে কিডনি দিবে। আপনারা আমার ব্যবস্থা করেন নাই তাই এটা ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না।

আপনারা আপনাদের টাকা-পয়সা নিয়েই থাকেন। আর মানুষের ছেলেদেরই বড় বানান। আমার কিডনি বিক্রির সময় যেমন কিছু করতে পারেন নাই। এবারও পারবেন না, আপনাদের ছোট ছেলের সময়।

জানা যায়, তিন বছর আগে ফাহাদ বিন ইহসান তারেক টাকার জন্য তার একটি কিডনি বিক্রি করেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতেন।

চিঠির সূত্র ধরেই হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তারেকের বাবা। পরে কৌশলে তারেককে পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে হাজীগঞ্জে নিয়ে এসে সুকৌশলে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ অভিযুক্ত তারেককে আটক করেন।

আটককৃত তারেকের মা ফরিদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে আগে থেকেই মাদকের সঙ্গে জড়িত। নেশার কারণে সে ফ্যামিলির অনেক টাকা নষ্ট করেছে। তাই আমরা তাকে টাকা দিতে সাহস করিনি।

পুলিশের হাতে আটক তারেক বলেন, ‘আমি আমার ছোট ভাইকে অপহরণ করেছি শুধুমাত্র টাকার জন্য। কিডনি বিক্রির কথাটি চিঠিতে লিখে মা-বাবাকে ভয় দেখিয়েছিলাম।

তারা আমাকে বাধ্য করেছেন এমন ঘটনা ঘটাতে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারফ বলেন, অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে এবং অপহৃত রিহানও আমাদের জিম্মায় রয়েছে। আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার অপহরণকারী আসামীকে আদালতে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন,আসামিকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 4 =