স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ ভূমিদস্যু যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল পশ্চিমপাড়ার মৃত্যু আব্দুল ফান্নাফের ছেলে আব্দুর রহমান। তার বিরুদ্ধে ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় ভূমিদস্যুতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন মানুষের জায়গা-জমির জাল দলিল ও ভূয়া আম-মোক্তার দলিল সৃজন করে ভূমিদস্যুতা করে থাকেন তিনি। এভাবে তিনি এলাকার সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রাণী করেন বলে জানা যায়। সূত্রে জানা যায়, প্রকৃত জমির মালিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে তিনি অন্তত ১৫-২০টা মিথ্যা মামলা করেন, যা এখনো চলমান। মিথ্যা মামলা পরিচালনা করার জন্য রয়েছে তার একটি অসাধু চক্র। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকার লোকজন সূত্রে জানা গেছে, তার এই চক্রে রয়েছে এলাকার বেশকিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জাল দলিলের মাধ্যমে অন্যের জমি দখলে নিতে তিনি তার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যবহার করেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণী করেন। ফলে জমি হারানো আর মিথ্যা মামলার ভয়ে এলাকার মানুষজন সবসময় তটস্থ থাকেন। সন্ত্রাসী দিয়ে জবরদখল এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ফলে মালিকরা তার কাছে পানির দরে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন। তার লালসার শিকার মাতুয়াইল মৌজাস্থ জমির মালিক নজির আহম্মদ, কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক রিয়াজ উদ্দিন, আলাউদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, খালেদুর রশিদ, হারুনুর রশিদ, মাহবুব আলম মিলন প্রমুখরাও। তাদের ক্রয়কৃত জমির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ভূমিদস্যু আব্দুর রহমানের।
সিটি জরিপও রয়েছে বর্তমান মালিকদের নামে। তারপরও আদালতে মিথ্যা মামলা করে হয়রাণী করছেন তিনি। সূত্রে প্রকাশ, মাতুয়াইল মৌজাস্থ দাগ নং- সিএস ও এসএ- ৪৯৬৩ ও ৪৯৬৪ নং, জমির পরিমাণ ৩৭৫ অযুতাংশ জমিটি ক্রয়সূত্রে মালিক হলেন উল্লেখিত ব্যক্তিরা। উল্লেখিত ব্যক্তিরা বিগত ২০১১ সালে পূর্বের মালিক আবুল হাসেম বাবুলের কাছ থেকে ক্রয় করেন।
পূর্বেকার মালিক বাবুল উক্ত জমিটি ক্রয় করেছিলেন গুনজনুর মিয়া নামের এক ব্যক্তি থেকে। সিটি জরিপে সিটি জরীপ হয় গুনজনুর মিয়ার নামে, যার পরিমাণও ছিল ৩৭৫ অযুতাংশ। দলিলপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, সিএস ও এসএ- ৪৯৬৩ দাগে ভূমিদস্যু আব্দুর রহমানের কোনো জমি ছিল না, এখনো নেই।
এই দাগে তার জমি না থাকলেও মিথ্যা অযুহাতে অসৎ উদ্দেশ্যে জমি দাবী করে বর্তমান মালিকদের হয়রাণী করে যাচ্ছেন। জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দাগে তার কিছু জমি থাকায় তিনি উল্লেখিত জমির প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন। এধরণের অগণিত মামলার খড়গ অনেকেরই ওপর ঝুলছে। তার দায়ের করা মিথ্যা একটি পিটিশন মামলা ২৩০/২০১১ নং আদালত খারিজ করে দেন এবং অন্যগুলো চলমান রয়েছে।
এদিকে ক্রয়কৃত প্রকৃত জমির মালিকরা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে ভূমিদস্যু আব্দুর রহমান তার লালিত সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেন। তার সন্ত্রাসীরা ও তিনি ইটপাটকেল ছুড়লে জমির অন্যতম মালিক মাহবুব আলম মিলন মারত্মক আহত হন। এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে অন্যান্যরা সেযাত্রা রক্ষা পান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ভূমিদস্যু আব্দুর রহমানের হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আতঙ্কিত এলাকাবাসী।