নাজিমুদ্দিন আহমেদঃ রাজধানীর পল্লবীতে মিরপুর ১১ নং সেকশনের এফ ব্লকের ৪ নং এভিনিউ তে তালতলা বস্তি। এই বস্তির যারা বাসিন্দা তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। জানা গেছে, তালতলা বস্তিতে প্রশাসনের নাকের ডগায় ইয়াবা ব্যবসা করছেন বাহার উদ্দিন বাহারের ছেলে জুয়েল। ইয়াবা ব্যবসার প্রতিবাদ করলে তালতলা বস্তিবাসীকে ইয়াবার ডিলার মিঠুন বলেন, থানা পুলিশকে টাকা দিয়ে আমি ইয়াবা ব্যবসা করি। তোদের কোন বাপ থাকলে ব্যবসা বন্ধ করে দেখা। জুয়েলকে ইয়াবা ব্যবসার সহযোগিতা করে তার দুই বোন জামাই খালেকুজ্জামান জীবন ও মোঃ মিঠুন। মিঠুন হচ্ছে ইয়াবার ডিলার। তাদের সহযোগিতা করেন তাদের দুই বোন ও তার মা। বলা যেতে পারে, পরিবারের সকল সদস্যদের এবং বহিরাগতদের সহযোগিতায় মিঠুন, জুয়েল জমজমাট ইয়াবা ব্যবসা করে অবৈধ ভাবে অর্থ উপার্জন করছে। মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করলে জুয়েলের বোন জামাই ইয়াবা দিয়ে নিরিহ বস্তিবাসীকে পুলিশের গাড়ীতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখায় এবং প্রাণনাষের হুমকি দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিঠুন, জুয়েল পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইয়াবার ব্যবসা করে যাচ্ছে।
প্রতিবাদ করলে নির্দোষ ব্যক্তিকে জুয়েল মাদক ব্যবসায়ী বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। তালতলা বস্তির নির্দোষ কোন ব্যক্তি মাদক ব্যবসায় জড়িত না হয় এবং বস্তিতে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করার দাবিতে বস্তিবাসীরা মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করলেও এখনো মিঠুন, জুয়েল ইয়াবা ব্যবসা করছে। যুব সমাজের মধ্যে সামাজিক মুল্যবোধের অবক্ষয় এবং তাদের চরিত্রের নৈতিক অধঃপতন দেখা না যায় এ জন্য ইয়াবা ব্যবসায়ী জুয়েল এবং তার সংঘবদ্ধ চক্রকে গ্রেফতার করার দাবি করছেন তালতলা বস্তিবাসী।
তালতলা বস্তিবাসীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, জুয়েলের বোন জামাই মোঃ খালেকুজ্জামান জীবন একজন ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ। জোর পূর্বক জমি, দোকান দখল করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একাধিক জিডি আছে। জানা গেছে, খালেকুজ্জামান জীবনের আছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। তালতলা বস্তিতে কেউ ঘর বানালে সে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হুমকি দেয়। খালেকুজ্জামান জীবনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় প্রায় পনেরটি জিডি মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, ২০১০ সনের ২১ ডিসেম্বর তালতলা বস্তি আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পুনরায় দোকান ও ঘর নির্মাণ করতে গেলে খালেকুজ্জামান চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঘর ও দোকান নির্মাণ করতে বাধা দেয়। ভূমি দস্যু মোঃ খালেকুজ্জামান জীবন দুই হাত বাড়িয়ে অন্যের বাড়িতে ছাদ ঢালাই দেয়।
জানা গেছে, খালেকুজ্জামান জীবন তালতলা বস্তিবাসী অন্যের সীমানার পাশে ড্রেনের উপরে এ্যাঙ্গেল দিয়ে বাথরুম তৈরী করে দখল করছে। এমনকি অন্যের জায়গার ঘরের এ্যাঙ্গেল কেটে ঐ ওয়ালে ইটের গাথুনী দিয়ে ঘর তৈরী করছে। জানা গেছে, মোঃ খালেকুজ্জামান জীবনের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তার অন্যতম সহযোগী মৃত হালিম খানের ছেলে মিঠুন। মিঠুনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় ২০২১ সনের ১৬ ই জানুয়ারী এক ভুক্তভোগী সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং-১৪৫২। মিঠুনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একাধিক ডায়েরী আছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মোঃ খালেকুজ্জামান জীবনের ছেলে আশিকও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত। তার বিরুদ্ধে ২০২০ সনের ১২ই অক্টোবর পল্লবী থানায় মামলা আছে। মামলা নং-৩৫/৪৭৭, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩০৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩৭৯/৫০৬ দন্ডবিধি। আশিক ধারালো দা দিয়ে মাসুদকে মধ্যযুগীয় বর্বরতায় নির্মম ভাবে আহত করে।
তালতলা বস্তি ঘুরে আমাদের প্রতিবেদক জানতে পারে, জুয়েল মাদক এবং অস্ত্র মামলার আসামী। আশিক হচ্ছে কিশোর গ্যাং এর লিডার। তার রয়েছে প্রায় চল্লিশটি সন্ত্রাসী বাহিনী। আর মিঠুন ও খালেকের কাজ হচ্ছে অন্যের জায়গা জোর পূর্বক দখল এবং চাঁদাবাজী করা। তারা যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধ করছে। এ সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একাধিক মামলা হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তালতলা বস্তিবাসী প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তাই দ্রæত তাদের আইনের আওতায় নেওয়ার জন্য তালতলা বস্তিবাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবা ব্যবসায়ী জুয়েল, আশিক, মিঠুন ও খালেকুজ্জামান জীবনের সন্ত্রাসী কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের গডফাদার মরহুম দুদু মিয়ার ছেলে মান্নান। মান্নান থাকেন মিরপুর ১১ নং সেকশনের সি ব্লকের এভিনিউ ৫ (শাহীন স্কুলের সামনে)।