ইয়াকুব নবী ইমন, রামপুর থেকে ফিরে: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ন, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ বাণিজ্যসহ সাধারণ মানুষের সাথে অসদাচনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি টাকা ছাড়া কোন কাজ করেননা যে কোন সরকারী কাজে সারকারী ফি’র বাইরেও তিনি নানা অজুহাতে সাধারণ সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। এখানে সব ছেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, সংশোধন, সনদ গ্রহনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গত ২৩ আগষ্ট জন্ম সনদ সংশোধন ও অনলাইন করার জন্য ইউনিয়নের সচিব কামরুজ্জামানের কাছে যান রামপুর ৬ নং ওয়ার্ডের আলীর ডগীর রমামেনা খাতুন ও ৪ নং ওয়ার্ডের বাহাউদ্দীন ভূঞা বাড়ীর মাহমুদুল হাসান মিঠু। এ সময় সচিব অসহায় বৃদ্ধা মোমেনার কাছে ৫শত টাকা ও মাহমুদল হাসান মিঠু কাছ থেকে ১ হাজার ৫ শত টাকা ঘুষ দাবি করেন। তারা ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সচিব তাদের সাথে অসাদচারণ করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ক্ষুব্দ এলাকাবাসী সচিবের উপর চড়াও হলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরীর হস্তক্ষেপে রক্ষা পান সচিব কামরুজ্জামানন। সচিব কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ শত শত।
এর আগে গত বছরের ৩ ফেব্রæয়ারী রামপুর ইউনিয়নস্থ বামনী পূর্ববাজারে অবৈধ উচ্ছেদ কাজে এসে সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইয়াছিন শিমুল স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে ইউপি সচিব কামরুজ্জামানকে জনসম্মুখ্যে ক্ষমা চেয়ে ঘুষ না নেয়ার ওয়াদা করান। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। তার ঘুষ বাণিজ্য এখনো অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে একজন ভূক্তভোগী তার বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ঘুষের এ সব টাকায় সচিব কামরুজ্জামান বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি ঢাকা-চট্টগ্রামগাম সড়কের চলাচলরত একাধিক বাসের একাধিক মালিক। হয়েছেন চৌমুহনী বাস মালিক সমিতির প্রভাবশালী সিনিয়র সদস্য। এছাড়াও তার রয়েছে জেলা শহরের জেলা স্কুল সংলগ্ন বিলাস বহুল ভবনের তৃতীয় ফ্লোরে প্রায় ১ কোটি টাকার ফ্ল্যাট।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব কামরুজ্জামান সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারী নিয়ম ছাড়া তিনি কোন কাজ করেননা। কারো কাছ থেকে টাকাও নেননা। তবে ফালইপত্র উপজেলায় আনা নেয়ার জন্য তিনি কিছু টাকা গ্রহনের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাকে টাকা না দিয়ে যার কাজ সে করে আনলে আমার সমস্যা নাই।
রামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতি পূর্বেও এমন একাধিক অভিযোগের পর তাকে সতর্ক করা হয়েছিলো। সে ঠিক মতো অফিসও করেনা। প্রতিনিয়ত তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসছে। তার অপরাধের বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ জানাবেন বলে জানান চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরী।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক মীর বলেন, সরকারি নির্দেশনার বাহিরে কোনো টাকা নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধ একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে দোষি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।